জরাজীর্ণ ভবনে চলছে গাংনী উপজেলা পোষ্ট অফিসের কার্যক্রম ভাঙ্গা ছাদের নিচে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে দেয়া হচ্ছে ডাক সেবা

 



                                                            ছবি:আমিরুল ইসলাম অল্ডাম

মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি  ঃ মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত উপজেলা পোস্ট অফিস। বর্তমানে উপজেলা পর্যায়ের পোস্ট অফিসটি জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। সংস্কার বা মেরামত না হওয়ায় এর মধ্যেই চলছে পোস্ট অফিসের কার্যক্রম। ভাঙ্গা ও ঝুঁকিপূর্ণ ভবনের ছাদের নিচে জীবন হাতে নিয়েই ডাক সেবা দিয়ে চলেছেন দায়িত্বরত কর্মকর্তা কর্মচারীরা । এ যেন একটি মৃত্যুকূপ। যে কোন মূহুর্তে ভেঙ্গে পড়তে পারে ভবনটি।এছাড়া জানালা দরজা ভাঙ্গাচোরা সহ ঘরের রং বলতে সব যেন ময়লা অপরিচ্ছন্ন।  কিছুই  ঘটে যেতে পারে প্রাণহানির মত মর্মান্তিক দূঘর্টনা।সেই আগের মত ডাক হরকরা (রানার) ঝুম ঝুম শব্দে হ্যারিকেন ও বল্লম হাতে দৌড়ে এসে স্বজনদের ভালবাসার চিঠি পৌছে না দিলেও এখনও গুরুত্বপূর্ণ কাগজ পত্র, প্রয়োজনীয় চিঠি আদান প্রদান করে যাচ্ছে। এনিয়ে উর্দ্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে একাধিক আবেদন নিবেদন করেও অদ্যাবধি কাজ হয়নি।এ যেন দেখার কেউ নেই। 

গাংনী উপজেলা পোস্ট মাষ্টার মো. নজরুল ইসলাম জানান,  ১৯৮২ ইং সালে পোস্ট অফিসের ভবনটি নির্মিত হয়।  নির্মাণের ৪০ বছর অতিবাহিত হলেও এপর্যন্ত কোন সংস্কার বা মেরামত না হওয়ায় ভবনটি ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। ছাদের পলেসতারা  খসে খসে পড়ছে। ছাদের মরিচাপড়া রড বের হয়ে গেছে। বিমগুলোতে ফাটল ধরেছে। যখন তখন ভেঙ্গে পড়তে পারে। ঘটতে পারে প্রাণহানির মত দুঃখজনক ঘটনা। এছাড়াও অল্প বৃষ্টি হলেই ছাদ রসে পানিতে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। বর্তমানে এই ভবনে সরকারী কম্প্উিটার প্রশিক্ষণ কেন্দ সরকারী বীমা প্রতিষ্ঠান চালু রয়েছে।কম্পিউটার গুলো স্যাত স্যাতে জায়গায় রাখার কারনে অনেকটাই নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এমনি ভাবে গভীর দুঃখের বলতে হয় ডাক বিভাগের সেই গৌরব আর নেই। আধুনিকার ছোঁয়া এবং ডিজিটালাইজড হওয়ার পরে ডাক বিভাগের সেই  সুনাম অনেকটাই গতি হারিয়েছে। এই অফিস ম্যানেজমেন্ট বা খাতা কলমসহ আনুসঙ্গিক খরচ বাবদ মাসে মাত্র ৮০ টাকা বরাদ্দ দেয়া হতো। বর্তমানে সেটিও আর দেয়া হচ্ছে না। ফলে দায়সারা ভাবে  বাজারের  পড়ে থাকা কাগজ বা পোস্টার কুড়িয়ে সেই কাগজ দিয়ে অফিসের কাজ করা হয়।  

এছাড়া উপজেলা পর্যায়ে পোস্ট অফিসে লোকবল না থাকায় আমাদের অল্প সংখ্যক লোক নিয়ে ডাক সেবা দিতে হিমসিম খেতে হচ্ছে। উপজেলা পোস্ট অফিসে ১ জন উপজেলা পোস্ট মাস্টার, ২ জন পোস্ট ম্যান, ২ জন অপারেটর, ১ জন মেইল ক্যারিয়ার, ১ জন নৈশ প্রহরী ও ১ জন ঝাড়–দার মোট ১০ জন থাকার কথা থাকলেও রয়েছে মাত্র ৫ জন। যে কারনে দ্রæততার সাথে গ্রাহক সেবা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। 

ঝুঁকিপূর্ণ ছাদের নিচে কাজ করতে ভয় লাগে এমন প্রশ্নের জবাবে পোস্ট মাস্টার নজরুল ইসলাম আরও জানান, কিছুদিন আগে আমাদের ডেপুটি পোস্ট মাস্টার মো. মোহসীন উদ্দিন  আমাদের অফিস পরিদর্শনে এসেছিলেন। তিনি ভবনের মাঝে বসে থাকা অবস্থায উপর থেকে একটি সিলিং ফ্যান খুলে পড়েছিল। তিনি স্বয়ং উপস্থিত ছিলেন।  তারপরেও অদ্যাবধি ভবনটি সংস্কার বা মেরামত হয়নি। 

 পোস্ট মাস্টার নজরুল ইসলাম জানান, ভবনের যে অবস্থা যে কোন সময় ভেঙ্গে পড়তে পারে। আমরা মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে কাজ করছি। সংশ্লিষ্ট উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের নিকট আমাদের দাবি সরেজমিনে পরিদর্শন করে অবিলম্বে ভবনটিকে পরিত্যক্ত ঘোষনা করে নতুন ভবন নির্মাণের ব্যবস্থা নিয়ে বাধিত করবেন।              





Post a Comment

Previous Post Next Post