আমিরুল ইসলাম অল্ডাম : গাংনীতে ঝড় ও শিলাবৃষ্টিতে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি সাধিত হয়েছে। কলা চাষীদের স্বপ্ন ভঙ্গ হয়ে গেছে।ব্যাংক ঋণ ও মহাজনদের সুদের বোঝা বইতে চাষীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। প্রবলঝড়ে ও স্মরণ কালের বড় বড় আকৃতির শিলা বৃষ্টির আঘাতে উঠতি ফসল রোপা ধান, কলা ক্ষেত, বেগুন ক্ষেত সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।বিশেষ করে কলা চাষীরা সবচেয়ে বড় ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।
আকম্মিক ঝড়ে উপজেলার রামনগর,ভবানীপুর,নওদাপাড়া,পীরতলা, বেতবাড়ীয়া গ্রামের কৃষকদের মাঠের কলা ক্ষেতের সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে।এর মধ্যে রামনগর গ্রামের জিয়াউর রহমান জিয়া,কামরুল ইসলাম, মামুনর রশীদ, টুলু, আবুবকর, শুকুর আলী, কিয়ামত, জামিরুল মন্টু, জাকির হোসেন, আঃ জলিল, কোরপান, জিনারুল
ইসলাম, এনামুল হক, আসাদুল হক, রুহুল আমিন, পান্না, মিন্টু, আঃ করিম, নজরুল ইসলাম, আসমত আলী, রশিদুল ইসলাম, জিল্লুর রহমান, হাবিলউদ্দীন, হযরত আলী, ইকতার আলী, জালাল, কাতব আলী,কাউছার আলী, সাজেদুল ইসলাম,মহিরুল ইসলাম, মন্টু,নওশাদ আলী, ইমরুল , আলমগীর, হবি, সুরমান, কামাল, আজাহার
আলী,সায়েরউদ্দীনের আবাদকৃত প্রায় সাড়ে ৪শ’ বিঘা জমির কলাক্ষেত সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে।রামনগর গ্রামের মেম্বর হাবিলউদ্দীন জানান, আমার গ্রামের বেশীরভাগ লোক অভাবগ্রস্ত,দীনমজুর,গরীব অসহায়।এদের অনেকেই দিন আনা দিন খাওয়া মজুর।প্রায় ৫০জন কলাচাষী শিলাবৃষ্টির কারনে একবারে নিঃশেষ হয়ে গেছে।অনেক গরীব কলা
চাষী ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে কলা চাষ করেছিলেন। কলা চাষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তারা এখন পথে বসার উপক্রম। এখন তারা কিভাবে ব্যাংক ঋণ পরিশোধ করবে।
কলা চাষী জিয়াউর রহমান অশ্রুসিক্ত চোখে জানান, এবছর সাড়ে ৭ বিঘা জমিতে কলাচাষ করেছিলাম। এই কলাচাষে অনেক খরচ। বিঘাপ্রতি ৪০-৪৫ হাজার টাকা খরচ হয়ে থাকে। কলা গাছ লাগানোর পর থেকে জমিতে ১৪-১৫ মাস থাকে। কলা পরিপক্ক হলে কলা ব্যবসায়ীরা জমি থেকে কলার কাদি ক্রয় করে নিয়ে যায়। এত করে বিঘাপ্রতি
১লাখ ২০ থেকে ৩০ হাজার টাকা হয়ে থাকে। চাষীরা এই লাভের টাকা দিয়ে ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ ও পরিবারের খরচের পাশাপাশি ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ চালিয়ে থাকি।এবছর আমাদের সব স্বপ্ন ভেঙ্গে চুরমার হয়ে গেল। ব্যাংকের ঋণ পরিশোধ এবং ছেলেমেয়েদের লেখাপড়ার খরচ কোথায় পাবো। এসব কথা বলতে বলতে জিয়া কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন।
এমতাবস’ায় জরুরী ভিত্তিতে সরকারীভাবে আর্থিক সহযোগিতা প্রদান ও ব্যাংক ঋণ মওকুফ করা না হলে পরিবার পরিজন নিয়ে পথে বসতে হবে।