উত্তাপ বাড়ছে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে

বি এম রাকিব হাসান, খুলনা ব্যুরো: মজুরি কমিশন, বকেয়া পরিশোধ ও বদলি শ্রমিকদের স’ায়ীকরণসহ ১১ দাবিতে সারাদেশে রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে টানা ধর্মঘটসহ রাজপথ-রেলপথ অবরোধের কর্মসূচি নিয়েছে পাটকল শ্রমিক সিবিএ-নন সিবিএ পরিষদ।

গত সোমবার ঢাকায় বিজেএমসি’র কর্মচারী সংসদ কার্যালয়ে শ্রমিক নেতাদের বৈঠকে এ কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। বৈঠকে খুলনা, চট্টগ্রাম ও ঢাকার ২০টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল শ্রমিক সংগঠনের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক উপসি’ত ছিলেন। এতে সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের আহবায়ক সরদার মোতাহার উদ্দিন।
আন্দোলন কর্মসূচির মধ্যে হরতাল, অবরোধ, ঘেরাও, স্মারকলিপি পেশ, ভুখা মিছিলসহ একাধিক কর্মসূচি রয়েছে বলে ঢাকা থেকে শ্রমিক নেতারা জানিয়েছেন। গত শনিবার খুলনাঞ্চলের ৯ পাটকলের সিবিএ-নন সিবিএ নেতারা ঢাকায় পৌঁছান। রোববার সকাল ১১টায় বিজেএমসির সভাকক্ষে ঢাকা, নরসিংদি, চট্টগ্রাম, রাজশাহীর পাটকলের শ্রমিক নেতাদের সাথে দীর্ঘ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন বাংলাদেশ রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকল সিবিএ-নন সিবিএ পরিষদের আহবায়ক খুলনার প্লাটিনাম জুট মিলস এমপ্লয়ীজ ইউনিয়নের সভাপতি সরদার মোতাহার উদ্দিন। বক্তৃতা করেন পরিষদের কার্যকরী আহবায়ক মোঃ সোহরাব হোসেন, পরিষদের সদস্য সচিব ও হাফিজ জুট মিলস শ্রমিক-কর্মচারী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোঃ মাহবুবুল আলম, ঢাকা আঞ্চলিক কমিটির আহবায়ক ইউ,এম.সি জুট মিল সিবিএর সভাপতি মোঃ আনিসুর রহমান, চট্টগ্রাম আঞ্চলিক কমিটির আহবায়ক আমিন জুট মিল সিবিএর সভাপতি আলহাজ মহব্বত আলী খান, খুলনা আঞ্চলিক কমিটির আহবায়ক আলিম জুট মিলের সিবিএর সাধারণ সম্পাদক মোঃ আঃ হামিদ সরদার প্রমুখ ।
এদিকে, আর্থিক সংকটে অনেক শ্রমিক তাদের সন্তানদের এখনও স্কুলে ভর্তি করাতে পারেননি। আর তাই নতুন বছরের প্রথম সপ্তাহ চলে গেলেও খালিশপুরের তিনটি মিলের বিদ্যালয়ে কমেছে শ্রমিক সন্তানদের উপসি’তি। এসব বিদ্যালয়ের প্রায় ৪০ ভাগ শিক্ষার্থী নতুন বছরে স্কুলে ভর্তি হয়নি। যারা ভর্তি হয়েছে তারাও বিদ্যালয়ে আসছে না। ছাড়পত্র নিয়ে স্কুল ছেড়ে গ্রামে চলে যাচ্ছে অনেক শিক্ষার্থী। শিক্ষকদেরও প্রায় ৪ মাসের বেতন বকেয়া পড়েছে।
অন্যদিকে, খুলনা অঞ্চলের রাষ্ট্রায়ত্ত আট পাটকলে গেল ১১ কার্যদিবসে কর্মবিরতি অব্যাহত রেখেছে শ্রমিকরা। নেই মিলে তাঁতের শব্দ। নেই মিল চালু থাকার সোরগোল। নিস্তব্ধ হয়ে পড়েছে গোটা মিল এলাকা। এরই বিরূপ প্রভাব পড়েছে স’ানীয় অর্থনীতিতেও।
উল্লেখ্য, ধর্মঘটের কারণে ২৮ ডিসেম্বর থেকে খুলনা-যশোর অঞ্চলের ৮টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে উৎপাদন বন্ধ রয়েছে। এর মধ্যে ২ জানুয়ারি একই দাবিতে ঢাকা ও চট্টগ্রামের আরো ১২টি রাষ্ট্রায়ত্ত পাটকলে ২৪ ঘন্টার ধর্মঘট পালিত হয়।
খুলনা-যশোর পাটকল শ্রমিক সিবিএ-নন সিবিএ পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসেন জানান, ১১ দফা দাবিতে শ্রমিকরা পাটকলে টানা কর্মবিরতি পালন করলেও সঙ্কট নিরসনে উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এ কারণে দ্বিতীয় দফা আন্দোলন কর্মসূচিতে রাজপথ-রেলপথ অবরোধের মতো কঠোর কর্মসূচি থাকছে। তিনি বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট অব্যাহত থাকবে।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post