খুনিরা রাজনৈতিক কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে কয়েক যুগ ধরে একের পর এক ইউপি চেয়ারম্যান খুন

বি এম রাকিব হাসান, খুলনা ব্যুরো: : খুলনাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে জনপ্রতিনিধি হত্যার ঘটনা থামছে না। সর্বশেষ গত শুক্রবার ভোরে নড়াইলের কালিয়া উপজেলার হামিদপুর ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) চেয়ারম্যান নাহিদ হোসেন মোলস্নাকে (৫০) গুলি করে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। নিজ বাড়িতে ঘুমনত্ম অবস’ায় শুক্রবার ভোরে দুর্বৃত্তরা তাকে গুলি করে। এ নিয়ে স্বাধীনতার পর এ অঞ্চলের ৭৮ ইউপি চেয়ারম্যান খুন হলেন। একের পর এক হত্যাকান্ডের ঘটনায় এই অঞ্চল এখন আতংকের জনপদে পরিণত হয়েছে। সর্বশেষ শুক্রবার রাতে ঘুমানত্ম অবস’ায় কালিয়ার হামিদপুর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান নাহিদ মোলস্না হত্যাকান্ড। গেল ২৫ মে ফুলতলার দমোদর ইউপি চেয়ারম্যান সরদার আলাউদ্দীন মিঠুসহ দড়্গিণ-পশ্চিমাঞ্চলে এ পর্যনত্ম ৭৮জন ইউপি চেয়ারম্যান আতঁতায়ীর হাতে প্রাণ হারালেন। আতংকে অনেক ইউপি চেয়ারম্যান এখন নিজ এলাকার পরিবর্তে শহরে এসে বসবাস করছেন।

নিহত ইউপি চেয়ারম্যানের তালিকায় রয়েছেন খুলনার ফুলতলা উপজেলার দামোদর ইউপি চেয়ারম্যান সরদার আবু সাঈদ বাদল, কুষ্টিয়ার হাট হরিশপুর ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন সাচ্চু, কুমারখালীর কয়া ইউপি চেয়ারম্যান জামিল হোসেন বাচ্চু, খুলনার তেরখাদার সাচিয়াদহ ইউপি চেয়ারম্যান চান মিয়া শিকদার, ডুমুরিয়া সদরের আবদুল মজিদ, কবিরম্নল ইসলাম, মাগুরখালির অতুল সাহা, ফুলতলার দামোদর ইউপি চেয়ারম্যান সরদার আবুল কাশেম, আটরার শেখ সিরাজুল ইসলাম, শেখ আবদুর রউফ, কয়লাঘাট ইউপি চেয়ারম্যান এনত্মাজ আলি, ফুলবাড়ী ইউপি চেয়ারম্যান রম্নহুল আমিন, রূপসার নৈহাটি ইউপি চেয়ারম্যান গোলাম ফারম্নক, শ্রীফলতলার আবুল হোসেন, বটিয়াঘাটার সুরখালি ইউপি চেয়ারম্যান মোসত্মফা মোহাম্মদ হাবিব, শেখ জাহান আলী, দৌলতপুরের আবু গাজী, হাবিবুর রহমান, দিঘলিয়ার আবদুল গফুর, ফুলবাড়ি ইউপি চেয়ারম্যান ইমরান গাজী, বটিয়াঘাটার ভান্ডরকোট ইউনিয়নের ইউসুফ মোলস্না, আমীর আজম খান, পাইকগাছার দেলুটি ইউপি চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ মন্ডল, বাগেরহাটের জাহিদ হাসান, বুড়িরডাঙ্গা ইউপি চেয়ারম্যান পার্থ প্রতীম পিন্টু, ডেমা ইউপির আক্তার হোসেন তরফদার, কালুবাড়িয়ার ইউপি চেয়ারম্যান আতিয়ার রহমান, মোরেলগঞ্জের রামচাঁদপুর ইউপির সাবেক চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ খাঁ, তেলিগাতি ইউপি চেয়ারম্যান খান সাদেকুল ইসলাম সাদু খাঁ, ফকিরহাটের মানসা বাহিরদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আতর আলী, রামপালের বাইনতলী ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান, যশোরের চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলি ইউপি চেয়ারম্যান আশরাফ হোসেন আশা, বাঘারপাড়া রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান ওয়াজেদ আলী, নারিকেলবাড়িয়ার জামিল মাস্টার, রায়পুর ইউপি চেয়ারম্যান কাওছার আলী, বিদ্যানন্দকাঠির আনছার মলিস্নক, জামদিয়ার শেখ শফিউদ্দিন, যশোর সদরের বসুন্দিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মাজেদ শেখ, ঝিকরগাছা উপজেলার গঙ্গানন্দপুর ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল জলিল, শার্শার পুটিয়াখালি ইউনিয়নের নূরম্নদ্দিন, বেনাপোলের আবদুল করিম, কুষ্টিয়ার ঝাউদিয়া ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল আজিজ, আলী আকবর, খয়বর ম-ল, কয়া ইউপি চেয়ারম্যান আমু হোসেন, কুমারখালী ইউপি চেয়ারম্যান হেলাল উদ্দিন, হাটহরিদাস ইউপি চেয়ারম্যান মাহমুদ হোসেন সাচ্চু, চুয়াডাঙ্গা কালিদাসপুর ইউপি চেয়ারম্যান মেহের আলী, আলমডাঙ্গার হিজলী ইউপি চেয়ারম্যান ইবনে সাঈদ কচি, জীবননগরের আমদুলবাড়িয়া ইউপি সাবেক চেয়ারম্যান বাকবুল ইসলাম বাবুল, জামিল হোসেন বাচ্চু, নড়াইলের বিছালি ইউপি চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান, লোহাগড়ার মলিস্নকপুর ইউপি চেয়ারম্যান সিরাজুল ইসলাম, ঝিনাইদহের শ্যামপুর ইউপি চেয়ারম্যান রফিকুল ইসলাম, মেহেরপুরের মহাজনপুর ইউপি চেয়ারম্যান বাহারম্নল ইসলাম মিলকি, ফারম্নক হোসেন ভূঁইয়া, সাতড়্গীরার গহর আলী ও মিজানুর রহমান।
একের পর এক চেয়ারম্যান হত্যাকান্ডের ব্যাপারে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক খুলনার এক ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, ‘হত্যা মামলাগুলোর খুনিরা রাজনৈতিক কারণে ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যাচ্ছে। আইনের শাসন সুপ্রতিষ্ঠিত না হওয়ায় হত্যাকান্ডের সংখ্যা বাড়ছে। নাহিদ মোলস্নার খুনের ঘটনায় মর্মানিত্মক বলে তিনি উলেস্নখ করেন। তিনি বলেন, ঘুমের মধ্যেও কারো নিরাপত্তা নেই। আমরা আতঙ্কের মধ্যে বাস করছি।’
এদিকে নিহত নাহিদের চাচা ঠান্ডু মোলস্না জানান, ২০১৫ সালে খুলনা প্রেসক্লাবের পাশে নাহিদকে হত্যার উদ্দেশ্যে বোমা হামলা চালিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। এঘটনায় খুলনা থানায় হত্যা প্রচেষ্টা মামলা চলমান রয়েছে। রাজনৈতিক প্রতিপড়্গ ও ওই ঘটনার জেরে নাহিদকে হত্যা করা হতে পারে। এদিকে দিঘলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. হাবিবুর রহমান বলেন, কে বা কারা চেয়ারম্যান নাহিদকে হত্যা করেছে এখনো তা জানা যায়নি। এছাড়া হত্যাকান্ডে জড়িত কাউকে আটকও করা হয়নি।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post