কার্ডভিত্তিক লেনদেন ঝুঁকিমুক্ত করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের বিশেষ নির্দেশনা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : নগদ অর্থ লেনদেন হরাস বা নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন পেমেন্ট চ্যানেলের মাধ্যমে সম্পাদিত কার্ডভিত্তিক লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণ, ঝুঁকি হরাস এবং গ্রাহক সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য একাধিক বিশেষ নির্দেশনা জারি করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের পেমেন্ট সিস্টেমস্ ডিপার্টমেন্ট থেকে দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংকের প্রধান নির্বাহীর কাছে পাঠানো এ সংক্রান্ত এক প্রজ্ঞাপনে এসব নির্দেশনা জারি করা হয়।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, কার্ড লেনদেনের নিরাপত্তা নিশ্চিত ও লেনদেনের অবকাঠামোসমূহ আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন করতে ২০১৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে ব্যাংকগুলোকে পেমেন্ট কার্ড ইন্ডাস্ট্রি-ডাটা সিকিউরিটি স্ট্যান্ডার্ড সার্টিফাইড হতে হবে। আগে ইস্যু করা এ ধরনের সব কার্ডসমূহকে ২০১৮ সালের ৩০ জুনের মধ্যে এই প্রক্রিয়া পুরোপুরি সম্পন্ন করতে হবে। লেনদেনের সময় এটিএমে কার্ড আটকে গেলে গ্রাহকের আবেদনের ৭ দিনের মধ্যে কার্ড ইস্যু করা, নতুন পিন সরবরাহ করা, এটিএমগুলোয় বাধ্যতামূলকভাবে চিপ কার্ড পরিচালনার প্রযুক্তি, বুথে লেনদেনসমূহের ভিডিও ফুটেজ যথাযথভাবে পর্যবেক্ষণ ও নূ্যনতম ১ বছর তা সংরক্ষণ করতে হবে। এর বাইরে এটিএম সেবা প্রদানকারী ব্যাংকসমূহ প্রতিমাসে কমপক্ষে ২০টি এটিএম পরিদর্শন করবে।

প্রজ্ঞাপনটিতে আরও বলা হয়, প্রতিটি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানকে সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি মূল্যায়ন করে পরিচালনা পর্ষদের তত্ত্বাবধানে সাইবার সিকিউরিটি গভর্ন্যান্স সংক্রান্ত নীতি প্রণয়ন করতে হবে। এছাড়া যেকোনো সাইবার ঝুঁকি মোকাবিলা করার জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন করতে হবে। এর বাইরে প্রযুক্তিগত দুর্বলতা মূল্যায়ন পরিচালনা এবং আপদকালীন ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম প্রণয়নসহ পুরো ব্যবস্থা সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণের জন্য সপ্তাহের ৭ দিন কার্যরত তথ্য নিরাপত্তা কেন্দ্র স্থাপন করতে হবে। এছাড়া কার্ডভিত্তিক লেনদেন পরিচালনাকারী সব ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান হতে ইস্যুকৃত সব কার্ডের অভ্যন্তরীণ আন্তঃব্যাংক লেনদেন বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক পরিচালিত ন্যাশনাল পেমেন্ট সুইস বাংলাদেশের (এনপিএসবি) মাধ্যমে পরিচালনা করতে হবে। এসএমএস এলার্ট সার্ভিসের মাধ্যমে কার্ডভিত্তিক সব লেনদেনের তথ্য তাৎক্ষণিকভাবে গ্রাহককে অবহিত করতে হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, এটিএম বুথে নগদ টাকার সরবরাহ নিশ্চিত করার পাশাপাশি এটিএম সেবা সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। তবে বন্ধ বা অচল এটিএম বুথের সামনে অবশ্যই নোটিশ প্রদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এবং অনধিক ৭২ ঘণ্টার মধ্যে তা সচল করতে হবে। এছাড়াও বুথে কোনো ধরনের নতুন যন্ত্র সংস্থাপন বা মেরামতকালে এটিএম বুথে কর্মরত সিকিউরিটি গার্ড এ বিষয়ে ব্যাংকের ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগ করে আগতদের পরিচয় নিশ্চিত করবে। গ্রাহকদের সমস্যার তাৎক্ষণিক সমাধান নিশ্চিত করতে আবশ্যিকভাবে যোগাযোগের ফোন নম্বর নোটিশ হিসেবে এটিএম বুথে প্রদর্শনের ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। লেনদেন সংক্রান্ত সব ধরনের ফি বা চার্জ প্রদর্শন করতে হবে, পাশাপাশি এটিএম ব্যবহারের চিত্র-সংবলিত সঠিক নিয়মাবলী সহজ ভাষায় পোস্টার আকারে বুথে প্রদর্শন করতে হবে।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post