তেঁতুলিয়ায় ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত

তেঁতুলিয়া সংবাদদাতা : তেঁতুলিয়ায় জেঁকে বসেছে কনকনে শীত।

গত কয়েক দিন ধরে হাড়কাঁপানো শীত পড়ায় বিপাকে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষ। ভোর ৬টা থেকে সকাল সাড়ে ৯টা পর্যন্ত কনকনে শীতের কারণে কাজে যেতে পারছেন না অনেকেই। তবে পেটের তাগিদে অনেককেই কাজ করতে দেখা যায়। তাদের কেউ কেউ নদী থেকে পাথর তুলছিলেন। কেউ আবার চা-বাগানে কাজ করছিলেন। অনেককে দিনমজুরের কাজ করতেও দেখা যায়। চা-শ্রমিক আরশেদ আলী, মমিন ও জাহেরুল ইসলাম জানান, কয়েক দিন ধরে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। সকালে চা-বাগানের পাতা তুলতে গিয়ে হাত-পা অবশ হয়ে আসে। তার পরও কাজ করতে হচ্ছে। পাথর শ্রমিক মর্জিনা, সমিরন ও জামিলা খাতুনসহ কয়েক জন শ্রমজীবী নারী জানান, আমরা ফজরের আজানের পরপরই ঘুম থেকে উঠি। কদিন ধরে খুব ঠান্ডা। ভোরে উঠে ঘরের মেঝে, আসবাবপত্র সব বরফের মতো লাগে। তার পরও পেটের দায়ে পাথরের কাজে যেতে হচ্ছে।

স্থানীয়রা জানান, এক সপ্তাহ ধরে জেলায় বেশি ঠান্ডা অনুভূত হচ্ছে। আগের থেকে তাপমাত্রা অনেক নিচে নেমে এসেছে। এ অঞ্চল হিমালয়-কাঞ্চনজঙ্ঘার কাছাকাছি থাকায় শীতের মাত্রাও একটু বেশি হয়। সন্ধ্যার পর থেকে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীত নেমে আসে। মধ্যরাত থেকে ভোর পর্যন্ত শীত অনুভূত হয়। দিনেও আগের মতো গরম নেই। বিকেল গড়ালেই ঠান্ডা লাগতে শুরু করে।

এদিকে দিন-রাতে তাপমাত্রা দুই রকম থাকায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। জ্বর-সর্দি-কাশি,শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়া, নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত শতাধিক রোগী চিকিত্সা নিতে আসছেন। এদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। চিকিৎসকরা বলছেন, আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে রোগীর চাপ বেড়েছে। এমনিতে শীত মৌসুমে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় বাতাসে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। শীতজনিত রোগ হিসেবে সর্দি-কাশি, শ্বাসকষ্ট বেশি হয়ে থাকে। আর শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত  হন। তাই এ সময়টাতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে কিছুটা হলেও সুরক্ষা মিলবে।

 তেঁতুলিয়া আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রাসেল শাহ বলেন, কদিন ধরেই তাপমাত্রা অনেকটা কমেছে। গতকাল মঙ্গলবার তেঁতুলিয়ায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা হিসেবে ১১ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে। সামনে তাপমাত্রা আরো নিচের দিকে নামতে পারে বলে তিনি জানান।

 


Post a Comment

Previous Post Next Post