ব্রিটিশ রাজপরিবারের একটি উজ্জ্বল অধ্যায়ের সমাপ্তি

 


kbdnews ডেস্ক

সমাজ যখন মৌলিকভাবে পরিবর্তিত হয়ে গেছে, তিনি জাতীয় ঐক্যের প্রতীক হিসেবে তার ভূমিকা পালন করে গেছেন। তিনি হলেন, ব্রিটেনের প্রয়াত রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। চলতি বছরের ৮ সেপ্টেম্বর তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ১০ দিনের রাজকীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে তাকে সমাহিত করা হয়। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে ব্রিটিশ রাজপরিবারের একটি উজ্জ্বল অধ্যায়ের সমাপ্তি হয়েছে।  রানি এলিজাবেথ ছিলেন জনগণের রাজকুমারী। বিবিসির এক খবরে বলা হয়েছে, ২১ বছর বয়সি একজন রাজকুমারী হিসেবে এলিজাবেথ তার জীবনকে মানুষের সেবায় উৎসর্গ করার শপথ নিয়েছিলেন। ১৯৭৭ সালে তার সিংহাসনে আরোহণের রজতজয়ন্তীর সময় সেই শপথের কথা মনে করে তিনি বলেছিলেন, যদিও সেই শপথ করা হয়েছিল আমার তরুণ দিনগুলোতে, অভিজ্ঞতার দিক থেকে যখন আমি ছিলাম অপরিপক্ব, তবুও সেই শপথের একটি শব্দ নিয়েও আমার কোনো অনুশোচনা নেই কিংবা তা আমি ফিরিয়েও নেব না।

 এর ৪৫ বছর পর গত জুনে তার সিংহাসনে আরোহণের প্ল্যাটিনাম জয়ন্তী উপলক্ষ্যে জাতির কাছে লেখা এক ধন্যবাদ-পত্রে সেবা করার সেই একই প্রতিশ্রুতি তিনি আবার তুলে ধরেছিলেন। এই জয়ন্তীর মাইলফলকটি উদযাপিত হয় বহু প্রাণবন্ত স্ট্রিট পার্টি এবং রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠান ও ব্রিটিশ জীবনযাত্রার ওপর নানা ধরনের রঙিন উৎসবের মধ্য দিয়ে। যদিও ভগ্ন স্বাস্থ্যের জন্য রানি বেশ কিছু অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত হতে পারেননি, তিনি শুধু বলেছিলেন, আমার সমস্ত হৃদয় রয়েছে আপনাদের সবার সঙ্গে। 

আমরা সবাই রানির বাইরের জীবন সম্পর্কে জানি। তার বন্ধুরা বলেন, ব্যক্তিগত জীবনে প্রাসাদের ভেতরে তিনি ছিলেন খুবই বিনয়ী এবং তার রসবোধ ছিল। তিনি ছিলেন এমন একজন নারী যাকে দেখে সমীহ জাগত এবং একই সঙ্গে হাসির মাধ্যমে দ্যুতি ছড়াতে পারতেন তিনি। তার সমালোচনাকারীরা মনে করতেন, তিনি ছিলেন নাগালের বাইরে এবং তার কাছে যাওয়া যেত না। কিন্তু তার অগণিত ভক্ত বলেন, তিনি কখনো জনগণের শ্রদ্ধা হারাননি। উইন্ডসর ক্যাসেলের অন্য সদস্যদের যেভাবে কেলেঙ্কারি স্পর্শ করেছে, সেটি রানির ক্ষেত্রে হয়নি।রানি এলিজাবেথের সময়কালে রাজতন্ত্র এবং ব্রিটিশ জনগণের মধ্যে সম্পর্ক নজিরবিহীন বদলে গেছে সমাজে এই পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে রাজতন্ত্রের ভেতর সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা অনুধাবনের অসামান্য শক্তি ছিল রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের একটি বা দুটি ব্যতিক্রম ছাড়া, তার রাজপ্রাসাদের দরজার বাইরে সামাজিক যে বিপ্লব ঘটে চলেছিল তার প্রতি তিনি সংবেদনশীল ছিলেন তার মৃত্যুতে ব্রিটেনের রাজপরিবারের এক উজ্জ্বল অধ্যয়ের শেষ হয়েছে

৭০ বছর রাজত্ব করার পর ব্রিটেনের সবচেয়ে দীর্ঘমেয়াদি রাজশাসক রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের মৃত্যুর পর রাজা হয়েছেন তার ছেলে তৃতীয় চার্লস। তার হাত ধরে নতুন যুগ শুরু করেছে রাজপরিবার। রাজ সিংহাসনে থাকাকালে কোনো কলঙ্ক রানিকে স্পর্শ করেনি। জনগণের শ্রদ্ধা, সম্মান আর ভালোবাসা ছিল রানির সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি। জনমনে তার মতো আবেদন ধরে রাখতে পারবে কি না, সেটাই আগামী দিনে ব্রিটিশ রাজপরিবারের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ

 

 

Post a Comment

Previous Post Next Post