যশোরে জনসভায় ,আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট চান প্রধানমন্ত্রী

 

 


যশোর জনসভায় শেখ হাসিনা। ছবি: ফোকাস বাংলা 

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে জনগণের সেবা করার আহ্বান জানিয়েছেন।
 
বৃহস্পতিবার (২৪ নভেম্বর) বিকেলে তিনি যশোর স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় প্রধান অতিথির ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী সকালে বাংলাদেশ বিমানবাহিনী একাডেমির প্রেসিডেন্ট প্যারেডে যোগ দেন। সেখানে পাসিং আউট কুচকাওয়াজে তিনি অভিবাদন গ্রহণ করেন। দুপুরের খাবার খাওয়ার পর প্রধানমন্ত্রী যশোর স্টেডিয়ামে আয়োজিত জনসভায় যোগ দেন।

 

যশোরে জনসভায় বক্তব্য রাখছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ছবি: ফোকাস বাংলা

জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত নির্বাচনে যশোরের ৬টি আসনেই নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আপনারা আমাদের দেশ সেবার যে সুযোগ করে দিয়েছিলেন, তার জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানাই। তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতা, মাতৃভূমির জন্য কথা বলার সুযোগ পান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তাঁরই আহ্বানে বীরসেনারা বাংলাদেশের স্বাধীনতা এনে দেয়। উন্নয়নের পথে হাঁটতে শুরু করার পর বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করা হয়। সব হারানোর বেদনা নিয়ে আপনাদের পাশে এসেছিলাম আপনাদের সেবা করার জন্য।

বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর বিএনপি বাংলাদেশের আদর্শকে নিষিদ্ধ করে। ইতিহাস বিকৃতি করে। জয় বাংলা নিষিদ্ধ করে। একের পর এক হত্যা, ক্যু করা হয়। জিয়া-মোশতাক সবাই খুনি। বিএনপি যশোরের সাংবাদিক শামছুর রহমান ও সাইফুল আলম মুকুল এবং খুলনার মানিক সাহা ও হুমায়ুন কবীর বালুকে হত্যা করে। বিএনপি আসলে রক্ত ও হত্যা ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি। জিয়ার ভাঙা সুটকেস হয়েছে জাদুর বাক্স। সেই বাক্সে হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক বনে গেছে তারেক জিয়া। সে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। মানি লন্ডারিং মামলায় তার জেল-জরিমানা হয়েছে। তারা অস্ত্র কারবারি। বার বার তারা সত্যের মুখোমুখি হয়েছে। জনগণের অর্থ মেরে সাজাপ্রাপ্ত নেতা কী দেবে? তারা শুধু মানুষের রক্ত চুষেই খেতে পারে।আওয়ামী লীগ সভানেত্রী বলেন, মা, ভাই-বোন, স্বজনদের হত্যার বিচার চাওয়ার অধিকারও হারিয়েছিলাম। এই জাতির জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছি। আপনারা ভোট দিয়েছেন বলেই উন্নয়ন করা সম্ভব হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিক করে বিনামূল্যে ওষুধের ব্যবস্থা করেছি। ডিজিটাল বাংলাদেশ হয়েছে বলেই বহু মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। পৃথিবীর বুকে সম্মান আর মর্যাদার জাতিতে পরিণত করেছে। রূপকল্প-২১ এর মাধ্যমে আমরা আজ মধ্যম আয়ের দেশ। বাংলাদেশের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ জেলা যশোর। মহান মুক্তিযুদ্ধে এই জেলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু ৭৫-এর পর এই জেলার কোনো উন্নয়ন হয়নি। আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এসে উন্নয়ন শুরু করে। যশোরের অনেক উন্নয়ন হয়েছে। ডিজিটাল বাংলাদেশের যাত্রা যশোর থেকেই শুরু হয়েছে। এখানেই প্রথম গড়ে তোলা হয়েছে সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক। এখানকার পার্কে দেড়-দুই হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। বেনাপোলকে অটোমেশনের আওতায় এনেছি। এতে আমদানি-রফতানি সহজ হয়েছে। এয়ারপোর্টের উন্নয়ন করছি। যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর আমরা করেছিলাম। সেখানে অনেক ভবন আমরা করে দিয়েছি। স্কুল-কলেজ-মাদরাসার উন্নয়ন আমরা করেছি। প্রত্যেক উপজেলায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আমরা সরকারি করেছি। সাক্ষরতার হার বেড়েছে। করোনাকালে প্রত্যেক শ্রেণিপেশার মানুষের জন্য অর্থ সহায়তা দিয়েছি। বিনামূল্যে বই, ২ কোটি ২০ লাখ শিক্ষার্থীকে উপবৃত্তি আমরা দিয়েছি। উচ্চশিক্ষার ব্যবস্থা করেছি।সরকার প্রধান বলেন, পদ্মা সেতুর সুফল এখন এই অঞ্চলের মানুষ পাচ্ছে। এখানকার উৎপাদিত পণ্য সহজেই ঢাকায় যাচ্ছে। এখানে ইপিজেড করে দিচ্ছি। সেখানে ৪শ’ শিল্প প্লট হবে। স্থলবন্দরে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল হবে। ২০১০ সালে যশোর মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল করে দিয়েছি। এখানে ৫শ’ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল করে দিচ্ছি। চৌগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ১০০ শয্যায় উন্নীত করা হচ্ছে। ২৭৫টি কমিউনিটি হেলথ ক্লিনিক করা হয়েছে। এখানে ২৭৫ জন্য কমিউনিটি হেলথ প্রোভাইডার কাজ করছে। 

প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোনও দেশ করোনা ভ্যাকসিন বিনা পয়সায় দেয়নি। আমি দিয়েছি। এই করোনা মোকাবিলার জন্য বিশেষ বিমান পাঠিয়ে কোটি কোটি টাকা খরচ করে সামগ্রী এনেছি। রিজার্ভ মানুষের কাছে লেগেছে। যে গম ২০০ ডলারে কিনতাম, তা এখন ৬শ’ ডলার। যুদ্ধ আর নিষেধাজ্ঞার কারণে। তারপরও আমরা কিনে এনেছি, যাতে খাদ্য-ঘাটতি না দেখা দেয়। এ জন্য আমি জমি অনাবাদী না রেখে উৎপাদন করার কথা বলেছি।

 তিনি বলেন, দেশের একটি মানুষও গৃহহীন থাকবে না বলে জাতির জনকের যে প্রকল্প শুরু করেছিলেন, তার সেই পথ ধরে সারাদেশে গৃহহীনদের তালিকা করে জমিসহ ঘর করে দিয়েছি বিনা পয়সায়। প্রায় ৩৫ লাখ মানুষ এই ঘর পেয়েছে যাদের কোনো ঠিকানা ছিল না। এটা তাদের জীবন পাল্টে দিয়েছে। এই দেশের কোনো মানুষ ঠিকানাবিহীন থাকবে না। যে বাংলাদেশ খালেদা জিয়া রেখে গিয়েছিল ৪০ ভাগ দারিদ্র্যতার হার, এটা আমরা ২০ ভাগে নামিয়ে এনেছি। যে হতদরিদ্র ২৫ ভাগ ছিল, তা আমরা ১০ ভাগে নামিয়ে এনেছি।

তিনি বলেন, যশোরে ভবদহ জলাবদ্ধতার দূর করার প্রকল্প শেষ হয়েছে। এবার আমরা দ্বিতীয় প্রকল্প হাতে নিয়েছি। এর ফলে যশোর খুলনা সাতক্ষীরার জলাবদ্ধতা দূর হবে। ৮২ কিলোমিটার নদীর নাব্যতা ফিরিয়ে আনতে কাজ হাতে নিয়েছি। কপোতাক্ষের মতো ভবদহের জলাবদ্ধতার যেন না থাকে, সেই বিষয়েও আমরা পদক্ষেপ নেবো।তিনি বলেন, করোনার কারণে সারা পৃথিবীতে মন্দা চলছে। আমাদের অর্থনীতি শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করিয়ে রেখেছি। ব্যাংকে টাকা নেই বলে অপপ্রচার করা হচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। টাকা না থাকার কথা পুরোটাই মিথ্যা। প্রত্যেক ব্যাংকের কাছেই টাকা আছে। রেমিট্যান্সও আসছে। এই পরিস্থিতিতে অন্য অনেক দেশ হিমশিম খেলেও আমরা যথেষ্ট শক্তিশালী আছি।

রিজার্ভ নিয়ে সমালোচকদের জবাব দিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, অনেকে এখন রিজার্ভ নিয়ে নানা সমালোচনা করছে। আমাদের রিজার্ভ নিয়ে কোনো সমস্যা নেই। রেমিট্যান্স আসছে, বিদেশ থেকে বিনিয়োগ আসছে। আমদানি-রফতানি আয় বৃদ্ধি পেয়েছে। কর সংগ্রহ বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশ্বের অন্য দেশ যেখানে হিমশিম খাচ্ছে, নিজেরা অর্থনৈতিক মন্দায় ভুগছে, সেই তুলনায় বাংলাদেশ এখনও যথেষ্ট শক্তিশালী আছে। আজকে আমরা ধান উৎপাদনে সারাবিশ্বে তৃতীয় অবস্থানে। খাদ্য উৎপাদন আমরা করে যাচ্ছি। সবজি উৎপাদন করছি। এসব করছি দেশের মানুষের জন্য। আপনাদের প্রতি আহ্বান আপনারা যে যা পারেন, কিছু না কিছু উৎপাদন করেন।

যশোরে জনসভা করতে পেরে আনন্দিত উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই যশোরে আমার নাড়ির টান আছে। এখানকার মাটিতে আমার নানা শেখ জহুরুল হক শুয়ে আছেন। তিনি যশোরে চাকরি করতেন। আমার মায়ের বয়স যখন তিন বছর ছিলো, তখন তিনি মারা যান। ওই সময় যোগাযোগ ব্যবস্থা এতই খারাপ ছিলো, যে কারণে এখানে আসা যায়নি। তাই আমার নানাকে এখানে দাফন করা হয়েছে। এখানে আমার নানার স্মরণে প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট করা হবে।

যশোর স্টেডিয়াম সংস্কার করা হবে জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, এ জন্য যা যা দরকার আমাদের সরকার কাজ করবে। আমি আপনাদের দোয়া ও ভালোবাসা চাই। একই সঙ্গে আপনাদের কাছে ওয়াদা চাই, আপনারা আগামী নির্বাচনে আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে আমাদের জয়যুক্ত করবেন।

যশোরের খেজুর গুড়ের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই যশোর সবসময় একদিকে যেমন খেজুর গুড়ের দেশ তেমনি আবার ফুলে ফুলে শোভিত, ফুল উৎপাদনেও যশোর ১ নম্বরে আছে। আমরা কৃষকের সবরকম সুযোগ করে দিচ্ছি। ১০ টাকায় তারা ব্যাংক অ্যাকাউন্ট খুলতে পারে। কৃষি উপকরণ কার্ড দিয়েছি। দুই কোটি কৃষক সেই কার্ড পান। এক কোটি কৃষকের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট আছে। তাদের টাকা তাদের হাতে সরাসরি চলে যায়। ৯০ টাকায় সার কিনে মাত্র ১৬ থেকে ২২ টাকায় সেই সার আমরা কৃষককে দিচ্ছি। কৃষি উপকরণের কোনো অসুবিধা যাতে না হয় তার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি আমরা।

জনসভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, লুটপাটের বিরুদ্ধে, হাওয়া ভবনের বিরুদ্ধে এবার খেলা হবে। যশোর খুলনার মানুষ প্রস্তুত হয়ে যান। গণতন্ত্র হত্যাকারী বিএনপির মুখে গণতন্ত্রের কথা শোভা পায় না। এর বিরুদ্ধে হবে খেলা। শেখ হাসিরা ছাড় দেবে না। আগুন নিয়ে খেলা করতে দেবে না। বুকে আর অন্তরে যে জ্বালা তাদের, তা শেখ হাসিনা করেই ফেললো। মাত্র আড়াই ঘণ্টায় ঢাকা।

তিনি বলে, আমরা ভাগ্যবান যে শেখ হাসিনাকে পেয়েছিলাম। তিনি মাত্র তিন সাড়ে তিন ঘণ্টা ঘুমান। ৭৫ পরবর্তীকালে এত ভালো নেতা আমরা পাইনি। এত পরিশ্রমী মানুষ একজনও আসেনি। বাংলাদেশকে, মুক্তিযুদ্ধকে বাঁচাতে হলে আওয়ামী লীগকে বাঁচাতে হবে। উন্নয়ন দরকার হলে শেখ হাসিনাকে আরেকবার দরকার। উন্নয়নের জন্য শেখ হাসিনার সরকার। 

এ সময় তিনি নৌকা বলে তিনবার শ্লোগান দেন। শেখ হাসিনার নামেও শ্লোগান দিয়ে তিনি বক্তব্য শেষ করেন কবিতার ছন্দে: ‘আবার যদি ইচ্ছে করে, দুঃখ-সুখের ঢেউ খেলানো কপোতাক্ষের তীরে।’ তিনি যশোর-খুলনা মহাসড়ককের সংস্কার কাজ এক মাসের মধ্যে শেষ না হলে খবর আছে বলে হুশিয়ার করে দেন।এর আগে বৃহস্পতিবার সকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যশোর বিমান ঘাঁটিতে বিমান বাহিনীর একটি অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। তারপর দুপুর ২টা ৩৮ মিনিটে যশোর শামস-উল হুদা স্টেডিয়ামে জনসভা মঞ্চে আসেন। মঞ্চে উঠে তিনি হাত নেড়ে নেতা-কর্মীদের শুভেচ্ছা জানান। এ সময় উচ্ছ্বসিত নেতা-কর্মীরা শ্লোগানে শ্লোগানে গোটা এলাকা মুখরিত করে তোলেন। বিকেল ৩টা ১৫ মিনিটে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা লাখো জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেন। ৩৫ মিনিটের ভাষণে তিনি দেশের নানা উন্নয়নচিত্র; অতীত ও বর্তমান পরিস্থিতি তুলে ধরেন।
 
এর আগে দুপুর ১২টা ২২ মিনিটে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের সভাপতিত্বে সমাবেশ শুরু হয়। এতে বক্তব্য রাখেন কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা। জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহীন চাকলাদার এমপির পরিচালনায় জনসভায় বক্তব্য রাখেন ও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সড়ক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, বাগেরহাট-১ (চিতলমারী, মোল্লারহাট, ফকিরহাট) আসনের সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন, আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ড. আব্দুর রাজ্জাক, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আবদুর রহমান, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, আ ফ ম বাহাউদ্দীন নাছিম, সংগঠনিক সম্পাদক বিএম মোজাম্মেল হক, মির্জা আজম, এসএম কামাল হোসেন। সম্পাদকমণ্ডলী সদস্য ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া, সামছুন্নাহার চাপা, কার্যনির্বাহী সদস্য ডা. মোস্তফা জালাল মহিউদ্দিন, আনোয়ার হোসেন, সাহাবুদ্দিন ফরাজী, ইকবাল হোসেন অপু, আনিসুর রহমান, মেরিনা জাহান কবিতা ও পারভিন জামান কল্পনা।

 

 

 

 

Post a Comment

Previous Post Next Post