ছবিঃ আমিরুল ইসলাম অল্ডাম
KBDNEWS ঃ মেহেরপুর সদর উপজেলার কালীগাংনী ভিটাপাড়া গ্রামে গ্রীষ্মকালীন লাউ চাষ করে সবজি চাষী মুছা এখন লাখপতি বনে গেছেন। মুছা চাষে সফলতা দেখে এলাক্রা অনেক চাষী লাউ চাষে ঝুঁকে পড়েছে। শীতকালীন ফসল হলেও স্বল্প খরচে বেশী লাভজনক হওয়ায় লাউ চাষ বেড়েই চলেছে।বিঘা প্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা খরচে হাউব্রিড জাতের লাউ চাষে ২ লক্ষাধিক টাকা আয় করে মুছা সহ এখন অনেকেউ স্বাবলম্বী।বর্তমানে মেহেরপুর সদরের ঝাউবাড়ীয়া, কালীগাংনী,শ্যামপুর, আমঝুপি গাংনী উপজেলার নওপাড়া, সাহারবাটি, রংমহল, কাথুলী, হিন্দা, বাশবাড়ীয়া গ্রামের চাষীদের লাউ চাষে আগ্রহ বেড়েছ্।ে
সরেজমিনে নওপাড়া জামতলা মাঠে ঘুরে লাউ চাষী মুছা মিয়া, আবু তালেব,হানা রিপনের লাউ ক্ষেত পরিদর্শন করে জানা গেছে, শখের বশে এক সময় বাড়ীতে অল্প জমিতে লাউ চাষ করতাম। লাউ খুব স্বাদের সবজি। সবজি তরকারী হিসাবে লাউ খুব মজাদার নরম সবজি। প্রতিটা পরিবারে লাউয়ের তরকারীর চাহিদা রয়েছে। সে সুবাদে বাজারে প্রচুর চাহিদা রয়েছে।শীত কিবা গ্রীষ্মকালে সারাবছর বাজারে লাউয়ের চাহিদা থাকে।লাউ চাষী মহিবুল ইসলাম জানান, আমি মাত্র ৫ কাঠা জমিতে হাউব্রিড ‘উষা’ জাতের লাউ চাষ করে ভাল লাভবান হয়েছিলাম। অল্প জমিতে প্রচুর লাউ ধরেছিল। প্রতি ১ দিন পর পর ৮০ থেকে ১০০ টি লাউ বাজার জাত করেছি। লাউয়ের বাজার মূল্যও ভাল । মুছা মিয়া এবছর দেড় বিঘা জমিতে লাউ চাষ করেছেন। লাউ চাষ লাভজনক হওয়ায় তেমন লোকসান হয়না। জমি থেকে পাউকাররা ১৫ টাকা থেকে ২২-২৩ টাকা দরে ক্রয় করে নিয়ে যায়। এই লাউগুলো বাজারে ২০-২৫ টাকা থেকে ৩০-৪০ টাকা দরে বিক্রি হয়ে থাকে। একই ভাবে স্থানীয় বাজারে চাহিদা মিটিয়ে বাংলাদেশের ঢাকাসহ বিভিন্ন শহরে সরবরাহ করা হয়ে থাকে। মুছা হক জানান, লাউ চাষে খরচ তেমন লাগে না। জমি প্রস্তুত, সার, ও জমিতে মাচা তৈরীতে বাঁশের খুটি, সূতা, তার এবং শ্রমিক খরচ সহ বিঘা প্রতি কমবেশী ২০-২২ হাজার টাকা খরচ হয়। দেড় বিঘা জমি থেকে প্রতি একদিন পর পর ৫ শ’ লাউ বাজার জাত করা হয়। যার বাজার মূল্য ছয় মাসের জন্য এই লাউ জমিতে থাকে। আবাদ শেষে ১০ হাজার টাকা। সেই হিসাবে আবাদ শেষে খরচ বাদে দেড় বিঘা জমি থেকে ৬ লাখ টাকা থেকে ৭ লাখ টাকা সম্ভাব্য আয় হবে।
ছবিঃ আমিরুল ইসলাম অল্ডাম
একই রকম তথ্য দিলেন সাহারবাটি গ্রামের লাউ চাষী মোতালেব হোসেন, কিতাব আলী ও তহসিন আলী। তারা জানান, সাহারবাটি গ্রামের অনেকেই লাউ চাষ করে লাখপতি হয়েছেন।
লাউ চাষীরা জানান, হাউব্রিড জাতের লাউয়ের মধ্যে, বুলবলি, উষা, ময়না, আয়না, বাউলা ইত্যাদি জাতের লাউ চাষে চাষীরা লাভবান হচ্ছে। এর মধ্যে উষ্,া ময়না ও বুলবুলি জাতের লাউ আমাদের এলাকায় বেশী আবাদ হয়ে থাকে। এই লাউ গুলো দেখতে নরম, সুন্দর ও সুস্বাদু।এই জাতের লাউয়ে পোকা মাকড়ের আক্রমন কম হয়।
ছবিঃ আমিরুল ইসলাম অল্ডাম
লাউ চাষ নিয়ে গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার লাভলী খাতুন জানান,গাংনী উপজেলায় এবছর ৩৫ হেকটর জমিতে হাউব্রিড জাতের গ্রীষ্মকালীন লাউ চাষ হয়েছে।অন্যান্য ফসল যেমন ধান ,পাট,গম, ভূট্টা চাষের পাশাপাশি কম খরচে লাভজনক আবাদ হিসেবে লাউ চাষ প্রতিবছরই বাড়ছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে উপ সহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের নিকট থেকে আধুনিক প্রযুক্তি ও পরামর্শ নিয়ে চাষীরা লাউ চাষে লাভবান হচ্ছেন।