মেহেরপুরে স্বামীর নির্যাতনে গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ


মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি  ঃ  মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার ষোলটাকা ইউনিয়নের সহড়াবাড়িয়া গ্রামে স্বামীর নির্যাতনে সেলিনা খাতুন (৩৫) নামের এক গৃহবধূর মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। ২ সন্তানের জননী সেলিনা সহড়াবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদ-এর স্ত্রী। 

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। 

স্থানীয়রা জানান গত মঙ্গলবার (৫এপ্রিল) দিবাগত রাত ১১টার দিকে সেলিনা স্বামীর ঘরের আড়ার সাথে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করার চেষ্টা করেছে দৌড়ে গিয়ে প্রতিবেশীদের এমন খবর দেয় তার স্বামী আব্দুল ওয়াহেদ। এসময় প্রতিবেশীরা সেলিনাকে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলতে দেখে তাকে উদ্ধার করে গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়। তার শারীরিক অবস্থার অবনতি দেখে কর্তব্যরত ডাক্তার তাকে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। কুষ্টিয়ায় ৩দিন আইসিইউতে থাকার পর শুক্রবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে তার মৃত্যু হয়। 

জানা যায়,গত ১৩ বছর আগে পারিবারিক সম্মতিতে গাংনী উপজেলার সাহারবাটী ইউনিয়নের ধর্মচাকী গ্রামের চেংগাড়া পাড়ার আজিজুল হকের মেয়ে সেলিনা খাতুনের সাথে বিয়ে হয় একই উপজেলার ষোলটাকা ইউনিয়নের সহড়াবাড়িয়া গ্রামের আব্দুল ওয়াহেদ-এর সাথে। বর্তমান তাদের সংসারে জন্ম নিয়েছে ২টি সন্তান। বড় সন্তান অনামিনা খাতুন (১১)ও ছোট ছেলে নাহিদ (০৮)। নাহিদ শারীরিক ও মানষিক প্রতিবন্ধী। ১৩ বছরের সংসার জীবনে প্রায়শঃ তাদের স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকতো। 

সেলিনার বড় ভাই মহিবুল ইসলাম জানান আমার বোনের সাথে তার স্বামী ওয়াহেদ-এর প্রায়ই ঝগড়া লেগে থাকতো। ইতোমধ্যে যৌতুক হিসাবে ওয়াহেদকে ১ লক্ষ টাকা দেয়া হয়েছে। তারপরও আমার ছোট বোনের উপর প্রায়ই নির্যাতন করতো। সর্বশেষে গত মঙ্গলবার রাতে সেলিনাকে ওয়াহেদ হত্যার লক্ষ্যে নিয়ে বেধম মারপিট করে। যখন সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে তখন ওয়াহেদ সেলিনাকে তড়িঘড়ি করে ঘরের আড়ার সাথে ঝুলিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে এমন নাটক সাজানোর মাধ্যমে  প্রতিবেশীদের জানায়। প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে হাসপাতালে ভর্তি করেন।

এদিকে,কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের একজন ডাক্তার জানিয়েছেন সেলিনাকে নির্যাতনের গলায় চিহ্ন রয়েছে। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে সেলিনার ময়না তদন্ত শেষে শুক্রবার বিকেলে তার বাবার পরিবারের সদস্যদের কাছে মরদেহ হস্তান্তর করা হয়েছে। এদিন সন্ধ্যায় সেলিনাকে তার বাবার বাড়ি ধর্মচাকী গ্রামে জানাজা শেষে স্থানীয় গোরস্থান ময়দানে দাফন করা হয়।  

গাংনী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আব্দুর রাজ্জাক জানান,এ বিষয়ে অভিযোগ পায়নি। অভিযোগ পেলে,তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 



Post a Comment

Previous Post Next Post