সুন্দরবনে থেমে নেই হরিণ শিকার

সুন্দরবনে থেমে নেই হরিণ শিকার

ছবি :বি এম রাকিব হাসান,

বি এম রাকিব হাসান, খুলনা: সুন্দরবনের হরিণ শিকার উদ্বেগজনক হারে বেড়েছে। চলতি সপ্তাহে চোরা শিকারিদের কাছ থেকে হরিণের মাংস ও চামড়া উদ্ধার করেছে পুলিশ। এ সময় শিকারি চক্রের কয়েকজনকে আটকও করে পুলিশ। পরে তাঁদের বিরম্নদ্ধে বন্যপ্রাণী নিধন আইনে মামলা হয়েছে।
সংশিস্নষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জানুয়ারি মাসে খুলনা ও বাগেরহাট সীমানেত্ম করা তিনটি পৃথক অভিযানে সাতজন শিকারি চক্রের সদস্য গ্রেপ্তার করে সুন্দরবন থেকে শিকার করে আনা হরিণের প্রায় ১৬ কেজি মাংস ও ১৯টি চামড়া উদ্ধার করেছে পুলিশ।
স’ানীয় কয়েকটি সূত্রমতে, সুন্দরবন ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে পেশাদার হরিণ শিকারিদের আছে বিশেষ সিন্ডিকেট এবং তাঁদের সঙ্গে থাকে এজেন্ট ব্যবসায়ীরা। এসব এজেন্টের মাধ্যমে কখনো অগ্রিম অর্ডার আবার কখনো মাংস এনে তারপর বিভিন্ন জায়গায় বিক্রি করা হয়। আগের মতো আবারও বেড়েছে সুন্দরবনে হরিণ শিকার।
দাকোপ উপজেলার বাণীশানত্মা গ্রামের বাসিন্দা আবেদ খান জানান, ‘বনবিভাগের উচ্চ পদস’ কর্মকর্তাদের খুশি করতে ও তদবির হিসেবেও হরিণের মাংস সরবরাহ করে থাকে শিকারিরা। এসব কারণেই প্রধানত লোকালয়ের অনেক লোকই হরিণ শিকারকে পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন।’ তিনি আরও জানান, ‘শিকারিদেরকে বনবিভাগের লোকজন চেনেন, কিন’ তাদেরকে কখনো গ্রেপ্তার করে না।’
গত শুক্রবার দিবাগত রাত পৌনে দুইটার দিকে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলা সদরের ব্র্যাক অফিসের সামনে থেকে সুন্দরবন থেকে শিকার করে আনা হরিণের ১৯টি চামড়াসহ দুই পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে জেলা গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, শরণখোলা উপজেলার রাজৈর গ্রামের মো. মতিন হাওলাদারের ছেলে মো. ইলিয়াস হাওলাদার(৩৫) এবং একই উপজেলার ভদ্রপাড়া গ্রামের মো. মোশারেফ শেখের ছেলে মো. মনিরম্নল ইসলাম শেখ(৪৫)। গ্রেপ্তারের পরেদিন বিকেলে তাদের আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান পুলিশ।
বন বিভাগের মতে, বন ডাকাতরা এখন তুলনামূলকভাবে কম সক্রিয়, কিন’ হরিণ শিকারিদের চক্রগুলোর উৎপাত সুন্দরবন ও এর পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে আবার বেড়েছে। তবে হরিণ নিধন এবং শিকারের বিরম্নদ্ধে তাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
এদিকে সোমবার (২৫ জানুয়ারি) দিবাগত রাত একটার দিকে খুলনার দাকোপ উপজেলার পানখালী এলাকায় অভিযান চালিয়ে স’ানীয় মাসুদের দোকানের সামনে রাসত্মার ওপর সুন্দরবন থেকে শিকার করে আনা হরিণের ১১ কেজি মাংসসহ দুইজনকে গ্রেপ্তার করে থানা পুলিশ। এর আগে গত রোববার উপজেলার কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়নের রামনগর গ্রামের ধোপাদী গেটের পাশে গভীর রাতে অভিযান চালিয়ে ওই গ্রামের পাকা রাসত্মার ওপর থেকে হাতেনাতে সাড়ে চার কেজি হরিণের মাংসসহ তিন পাচারকারীকে গ্রেপ্তার করে।
গ্রেপ্তার ব্যক্তিরা হলেন, খুলনার খানজাহান আলী থানার আটরা পালপাড়া এলাকার খান গোলজার আহম্মেদের ছেলে খান মুজিবুল সুলতান(৩৩) ও একই থানার মসিয়ালী পশ্চিমপাড়া এলাকার আয়নাল ফকিরের ছেলে মো. টিটু হোসেন(২৪) এবং চট্টগ্রামের জোয়ারগঞ্জ (পুরাতন মিরসরাই) থানার বরাইয়া গ্রামের মৃত মুন্সি মোস্তফার ছেলে রুহুল আমিন ভুইয়া, রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর থানার ইসলামপুর গ্রামের মৃত আলী আকবর হাওলাদারের ছেলে আব্দুস সোবাহান(৬৫) ও দাকোপ উপজেলার কৈলাশগঞ্জ ইউনিয়নের রামনগর উত্তরপাড়া গ্রামের মৃত জিতেন্দ্রনাথ রায়ের ছেলে কুমারেশ রায়(৫৫)।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post