Kbdnews ডেস্ক: ডোনাল্ড ট্রাম্পকে হারিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী হয়েছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। আগামী ২০ জানুয়ারি তিনি প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণ করবেন। আনুষ্ঠানিক দায়িত্ব নেওয়ার পর সবার প্রথমে বাইডেন যে পদক্ষেপগুলো নেবেন ইতোমধ্যেই সে বিষয়ে তিনি তার পরিকল্পনা ঘোষণা করেছেন।
বাইডেন তার পদক্ষেপে করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলাকে সবচেয়ে বেশি প্রাধান্য দেবেন বলে জানানো হয়েছে। বাইডেন শিবির থেকে জানানো হয়েছে যে, করোনাভাইরাসের পরীক্ষা অনেক বেশি বাড়িয়ে দেয়া হবে এবং মার্কিন নাগরিকদের মাস্ক পরতে বলা হবে। ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ উপেক্ষা করে করোনাভাইরাস মহামারিকে যেমন হালকাভাবে দেখা হয়েছে তা বেশ সমালোচিত হয়েছে। বিশেষ করে মাস্ক পরা ও সামাজিক দূরত্বকে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয়া হয়নি। যদিও বিশ্বের সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু যুক্তরাষ্ট্রেই।
জো বাইডেন ট্রাম্প প্রশাসনের এসব নীতিমালায় ব্যাপক পরিবর্তনের ইঙ্গিত দিয়েছেন। তার বিজয়ী ভাষণেই একটি বিশেষজ্ঞ দল তৈরির ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। এই দলটি করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবেলায় নেতৃত্ব দেবে। জো বাইডেন মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করতে চান। সকল মার্কিন নাগরিকদের জন্য নিয়মিত বিনামূল্যে করোনাভাইরাসের পরীক্ষার ব্যবস্থা এবং সকলের জন্য বিজ্ঞানভিত্তিক নির্ভরযোগ্য তথ্য ভিত্তিক নির্দেশিকা প্রচলন করতে চান তিনি। যুক্তরাষ্ট্রে এখন পর্যন্ত দুই লাখ ৩৭ হাজারের মতো মানুষ করোনাভাইরাসে প্রাণ হারিয়েছেন।
করোনাভাইরাস মহামারির কারণে অর্থনীতির যে ক্ষতি হয়েছে তা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে নানা পদক্ষেপ গ্রহণের পরিকল্পনা করা হচ্ছে।
প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেয়া নীতিমালাগুলোকে যত দ্রুত সম্ভব সংস্কার করবেন বাইডেন। যদিও ট্রাম্প বলেছেন বাইডেনের জয় এখনো অনুমান যেহেতু কিছু গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যে এখনো ব্যালট গণনা চলছে। তবে বাইডেন শিবির জানুয়ারিতেই ক্ষমতা গ্রহণের বিষয়টি মাথায় রেখে তাদের পরিকল্পনা নিয়ে অগ্রসর হচ্ছে। কারণ জয় পেতে যে পরিমাণ ইলেকটোরাল ভোট প্রয়োজন ছিল তার চেয়েও অনেক বেশি ভোট পেয়েছেন তিনি। মার্কিন গণমাধ্যমে বলা হচ্ছে ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেয়া বেশকিছু বিতর্কিত নির্বাহী আদেশ, যার জন্য কংগ্রেসের অনুমোদন দরকার হয় না, সেগুলোকে আগের অবস্থানে নেওয়ার পরিকল্পনা করছেন জো বাইডেন। ডোনাল্ড ট্রাম্পের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী প্যারিস জলবায়ু চুক্তি থেকে বের হয়ে গিয়েছিল যুক্তরাষ্ট্র।
তাতে আবারো যোগ দেবে দেশটি। জো বাইডেন এমনই এক সময়ে দায়িত্ব নিচ্ছেন যখন যুক্তরাষ্ট্রে শ্বেতাঙ্গ পুলিশের হাতে কৃষ্ণাঙ্গ নাগরিকদের একের পর এক মৃত্যুকে ঘিরে দীর্ঘ সময়ে সহিংস বিক্ষোভে চলেছে। ট্রাম্পের সময়ে বর্ণভিত্তিক বিভেদ বৃদ্ধি এবং শ্বেতাঙ্গ শ্রেষ্ঠত্ববাদীদের উত্থান হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বাইডেন বর্ণভিত্তিক বৈষম্য উচ্ছেদকে তার প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ ভীত হিসেবে তৈরি করতে চান। তিনি সরকারি তহবিল ব্যবহার করে সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীর জন্য সাশ্রয়ী মূল্যে বাসস্থান ও চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে চান। কৃষ্ণাঙ্গ, লাতিনো ও অন্যান্য জনগোষ্ঠীর সাথে সম্পদের বৈষম্য দূর করতে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেন আরও জোরালোভাবে কাজ করে সেটি নিশ্চিত করতে চান তিনি। পুলিশ বাহিনীর জন্যও কিছু পরিবর্তন আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিশেষ করে কোন অপরাধীকে আটক করার সময় শক্তি প্রদর্শনের পন্থা বাতিলের কথা ভাবা হচ্ছে। পুলিশ প্রশাসনে সংস্কারের জন্য একটি কমিশন করার কথাও ভাবছেন বাইডেন।