অর্থনৈতিক রিপোর্টার : করোনা সংক্রমণের পরিস্থিতিতে সংসদ ভবনজুড়ে আতঙ্ক ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। এর মধ্যেই আজ বুধবার বিকেল ৫টায় শুরু হতে যাচ্ছে ইতিহাসের সংক্ষিপ্ততম বাজেট অধিবেশন। আগামীকাল বৃহস্পতিবার জাতীয় সংসদে বিকেল ৩টায় ২০২০-২১ অর্থবছরের নতুন বাজেট উপস্থাপন করবেন অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। এরপর আগামী ২৯ জুন অর্থবিল ও ৩০ জুন মূল বাজেট পাস হবে। মাত্র ১২ কার্যদিবসে আগামী ৯ জুলাই শেষ হতে পারে দেশের ইতিহাসে সংক্ষিপ্ততম এই বাজেট অধিবেশন।
জানা গেছে, দেশে সংসদ সদস্য ছাড়াও সংসদের ৪৩ জন কর্মকর্তা-কর্মচারী করোনা আক্রান্ত। তাদের আইসোলেশনে পাঠানো হয়েছে। যেসব কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনা পজেটিভ এসেছে তাদের অনেকের আসা যাওয়া ছিল স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, প্রধান হুইপসহ ভিআইপিদের রুমে। এছাড়া পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহরিয়ার আলমের বাসায় কর্মরত চারজনসহ বেশ কয়েকজন সংসদ সদস্যের পরিবার, সংসদ সচিবালয়ের কয়েকজন কর্মকর্তা-কর্মচারী ও তাদের পরিবার এবং সংসদ নিরাপত্তায় নিয়োজিত পুলিশ ও আনসার বাহিনীর প্রায় ২০০ সদস্য করোনা আক্রান্ত। করোনা সংক্রমণের এই ঘটনায় সংসদ ভবনজুড়ে আতঙ্ক ও উদ্বেগ বিরাজ করছে। সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, করোনা সতর্কতার অংশ হিসেবে অধিবেশন সংক্ষিপ্ত করার কথা জানানো হয়েছে। এবারো অধিবেশনের আগে সংসদের কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হচ্ছে না। এর আগে সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার কারণে গত ১৮ এপ্রিল এক দিনের জন্য বসা সংসদের সপ্তম অধিবেশনের আগেও কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক হয়নি। আর সংসদ অধিবেশনে উপস্থিতি ১০০ জনের কম রাখতে বিশেষ উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বিশেষ করে প্রবীণ ও অসুস্থদের না আসার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। বিষয়টি সমন্বয় করার জন্য হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা জানান, এরই মধ্যে সংসদ সদস্যরা নিজ নিজ উদ্যোগে করোনা পরীক্ষা করাচ্ছেন। আর সংসদ সচিবালয়সহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোর প্রায় ৫০০ জন কর্মকর্তা-কর্মচারীর করোনা পরীক্ষা হয়েছে। ফল নেগেটিভ নিশ্চিত হলে তাদের আগামী অধিবেশনে সংসদ ভবনে দায়িত্ব পালনে পাঠানো হবে। ইতোমধ্যে যাদের নেগেটিভ এসেছে, তাদের সংসদ সচিবালয়ের তত্ত্বাবধানে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে।
সংসদের প্রধান হুইপ নূর-এ আলম চৌধুরী লিটন বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ঝুঁকি ও আতঙ্ক থাকলেও তা মোকাবিলার জন্য কঠোর সতর্কর্তাও অবলম্বন করা হচ্ছে। বাজেট অধিবেশন থেকে যাতে নতুন কেউ সংক্রমিত না হন, সে বিষয়ে ইতোমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে। এছাড়া প্রবীণ ও অসুস্থ এমপিদের অধিবেশনে না আসার জন্য অনুরোধ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে, নতুন বছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের ওপর মাত্র পাঁচ দিন আলোচনা হবে। আর পুরো বাজেট পাসের প্রক্রিয়া ব্যয় হবে ১০ দিন। সেক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ২০ ঘণ্টা বাজেট আলোচনা হতে পারে। গত বছর প্রায় ৬০ ঘণ্টা আলোচনা হয়েছিল। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত এই আলোচনা চলবে।