মো. মজিবর রহমান : কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলায় স্বল্প সময়ে অল্প ব্যয়ে অধিক লাভ হওয়ায় ক্রমেই ভুট্টা চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকের। ভুট্টা উৎপাদন ও পরবর্তীতে ভুট্টা বিক্রয়ে ন্যায্য মূল্য পেলে আরো অনেকেই ভুট্টা চাষে এগিয়ে আসবে এমনটি জানিয়েছেন স্থানীয় চাষিরা। ফলে দেশীও জাতীয় খাদ্য ঘাটতির চাহিদা পূরণে দেখা দিয়েছে উজ্জ্বল সম্ভাবনা। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়-উপজেলার কচাকাটা, কেদার, বল্লভেরখাস, বলদিয়া ও নারায়ণপুরের উপর দিয়ে বয়ে যাওয়া দুধকুমর, ফুলকুমর, সংকোষ ও গঙ্গাধ নদ-নদীর অববাহিকায় জেগে উঠা চরাঞ্চল নারায়ণপুরের চরঝাউকুটি, চরবারোবিশ, অষ্টআশিরচর, মাঝিয়ালি, পাখিউড়া, আইড়মারি, ভেড়ামারা, কালাইয়েরচর, চৌদ্দঘুড়ি, কচাকাটার ধনিরামপুরের, জালিরচর, বালাহাট, খলিলেরচর, নবারচর, কেদারের চরবিষ্ণুপুর, টেপারকুটি, চরপুটিমারি, টাপুরচর, চরবালাবাড়ি, বল্লভেরখাসের চরধারিয়ারপাড়, চরকৃষ্ণপুর, বেরুবাড়িরচর, রহমানের কুটি, কালিগঞ্জের চরকাঠগিরি, সাহেবগঞ্জচর, চরবেগুনীপাড়া, নামাচর, নুনখাওয়ার ব্যাপারীরচর, কাপনারচর, চরফকিরগঞ্জ, চরনুনখাওয়া, চরপাটতলা, রায়গঞ্জের চরদামারগ্রাম, পাঁচমাথারচর, বামনডাঙ্গার চরলুচনীসহ নদীর আশপাশের নিকটবর্তী নিচু জমিগুলো যেন সবুজ চাঁদরে ঢেকে গেছে ভুট্টার লম্বা পাতায়-পাতায়। আর সে পাতার ফাঁক-ফোঁকড় দিয়ে বের হওয়া ভুট্টার কুঁড়িতে নিজেদের স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন স্থানীয় ভুট্টা চাষিরা। জানতে চাইলে অনেকের মতো চর বিষ্ণুপুরের ভুট্টা চাষি আলহাজ্ব আব্দুল মজিদ ব্যাপারী বলেন, এবার দুই একর জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি, আশা করছি ভালোই ফলন হবে। সে সাথে অনেকের অভিযোগ- কৃষি বিভাগ থেকে ভুট্টা চাষের উপকরণ দিলেও সংশ্লিষ্ট বিভাগের উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তাগণ নিয়মিতভাবে খেত পরিদর্শনে না আসায় সময়মতো সঠিক পরামর্শের অভাবে সম্ভাবনাময় ভুট্টা চাষ/ফলন নিয়ে শঙ্কায় দিন কাটান তারা। কচাকাটা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল বলেন, অতীতের তুলনায় এবার অনেকেই উপজেলা কৃষি অফিসের আওতায় বিনামূল্যে ভুট্টা ও সার পেয়ে আনন্দে ভুট্টা চাষ করছেন।
ভুট্টার অবস্থা এখন পর্যন্ত খুবই ভালো। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ফলন ভালো হবে আশা করা যায়। নাগেশ্বরী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ সামসুজ্জামান জানান, ভুট্টা উৎপানে আমরা চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১৬ হেক্টর জমি নির্ধারণ করেছি, সে লক্ষ্যে উপজেলা কৃষি বিভাগ হতে কৃষি প্রণোদনা হিসাবে ১৪৫০ জন কৃষকের মাঝে ২ কেজি হাইব্রিট ভুট্টা বীজ, ২০ কেজি ডিএপি, ১০ কেজি পটাশ বিতরণ করেছি। কিন্তু ভুট্টা চাষে কৃষকের স্বতস্ফূর্ত অংশগ্রণে আমাদের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আরো প্রায় ২৪শ হেক্টর জমিতে বেশি ভুট্টা চাষ হয়েছে। এর কারণ জানতে চাইলে- ভুট্টা চাষে কৃষকের আগ্রহ বাড়াতে কৃষি বিভাগের ব্যাপক প্রচারণা, বিঘাপ্রতি ধানের চেয়ে বেশি ফলন ও ভুট্টা বিক্রিতে ধানের মতো মূল্য থাকায় কৃষকরা ভুট্টা চাষে স্বতস্ফূর্তভাবে এগিয়ে আসছেন বলে দৈনিক জনতা’কে উল্লেখ করেন উক্ত কর্মকর্তা।