রাজশাহী প্রতিনিধি : রাজশাহীর বাগমারা উপজেলায় গ্রামের মাঠে মাঠে শোভা পাচ্ছে হলুদ বর্ণের সরিষা খেত। গ্রামের মেঠোপথ ধরে হাটলে দু’চোখে পড়ছে বিস্তুর্ণ সরিষা খেত। সকালে এই সব সরিষা খেতের পাশ দিয়ে হাঁটলে দেখা যায় মৌমাছির আনাগোনা। মধু সংগ্রহে এ ফুল থেকে আরেক ফুলে ঘুরে বেড়াচ্ছে মৌমছি। উপজেলায় এবার বিগত বছরের চেয়ে বেশি ভাগ জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। ধানের উৎপাদন খরচ বেশি পড়ায় ধান চাষে আগ্রহ হারিয়ে বেশি লাভের আশায় এলাকার কৃষকরা ধানের চেয়ে কম খরচে এবার সরিষার চাষে নেমে পড়েছেন। আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবং মৌমাছিরা ফুলে সঠিকভাবে পরাগায়ন সৃষ্টি করতে সমম্ভ হওয়ায় এ উপজেলায় এবার সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে আশা করছেন সংশ্লিষ্ট কৃষকরা।
জানা গেছে, বাগমারা ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার লোক কৃষির উপর নির্ভরশীল। এখানে কৃষকরা ব্যাপক হারে পান, আলু, পাট, ধানসহ বিভিন্ন ফসল উৎপাদন করে থাকে। বিগত কয়েক বছর ধরে কৃষককের উৎপাদিত ফসলের মূল্য হরাসে উৎপাদন খরচ জুটছিল না। উপজেলার মাধাইমুড়ি গ্রামের কৃষক সামুউদ্দীন, তাহেরপুর গ্রামের কৃষক সাইদুর রহমান, নরদাশ গ্রামের কৃষক আজাহার আলীসহ আরো অনেকে জানান, চলতি বছরে আবহাওয়া অনুকূল থাকায় সরিষার অন্য বছরের ন্যায় অনেক ভালো ফলন হবে। সরেজমিনে বাগমারার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার ১৬ টি ইউনিয়ন ও দু’টি পৌরসভা এলাকার দিগন্ত জোড়া মাঠে এখন সরিষা
ফুলের হাতছানি দিচ্ছে। গত বছরের অক্টোবরের শেষের দিকে ও নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহের দিকে একটানা ভারি বর্ষণের কারণে সঠিক সময়ে জমিতে সরিষার বীজ বপন করা সম্ভব হয়নি। এ কারণে গত বছর এ অঞ্চলে সরিষার আবাদ কিছুটা কম হয়েছিলো। তবে চলতি মৌওসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অক্টোবরের মাঝামাঝির দিকেই কৃষকেরা জমিতে সরিষা বীজ বপন করেন। এখন পর্যন্ত আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় ঝাঁকে ঝাঁকে মৌমাছিরা মধু আহরণের লক্ষ্যে সরিষা গাছের ফুটন্ত ফুলে বসে পরাগায়ন সৃষ্টি করছে। তবে গত তিন দিন ধরে হঠাৎ করে সন্ধ্যার পর থেকেই ঘনকুয়াশার কারণে মৌমাছিদের পরাগায়ন সৃষ্টিতে কিছুটা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হচ্ছে। বাগমারা উপজেলা কৃষি অফিস বলছেন, উপজেলার ১৬টি ইউনিয়ন ও দু’টি পৌরসভায় চলতি মওসুমে ১৪ হাজার ১১০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে টরি-৭, বারি-১৪ এবং বারি-১৫ জাতের সরিষা রয়েছে। এ বছর আবহাওয়া অনুকূল থাকায় সরিষার বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানা গেছে।