রাজশাহী থেকে নাজিম হাসান : রাজশাহীর বিভিন্ন বাজারে বেড়েই চলেছে হুর হুর করে শীতকালিন সবজির দাম। এছাড়াও লাগামহীন হয়ে পড়েছে নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম। কোনভাবেই কমছে না এসব দ্রব্যের মূল্য। সাধারণ মানুষের ক্রয় ক্ষমতার বাইরে চলে যাচ্ছে প্রতিটি পণ্যের দাম। বিশেষ করে সবজির বাজারে দেখা দিয়েছে ভয়ানক আগুন।
বাজার ঊর্ধ্বগতির জন্য সবজি বিক্রেতারা আমদানিকে দায়ী করলেও বাজার মনিটরিং না হওয়াকে দায়ী করছেন ক্রেতারা। তাদের দাবি এখন সবজির আমদানী অনেক বেশি কিন্তু বাজার মনিটরিং না থাকায় দাম বেশি নিচ্ছে বিক্রেতারা। পর্যাপ্ত পরিমাণ আমদানির পরও বাজারে কৃত্তিমভাবে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে ব্যবসায়ীরা। গত কয়েক মাস ধরেই তরতরিয়ে দাম বাড়ছে সব ধরনের সবজিতে। এক সপ্তার ব্যবধানে কেজি প্রতি দাম বেড়েছে অন্তত ২০ থেকে ৩০ টাকা। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, শীতকালিন সিম, টমেটু, পাতাকপি, ফুলকপি, গাজলসহ বিভিন্ন সবজি বিক্রেতাদের সিন্ডিকেটের কারণেই দাম বাড়তি। এসব বিক্রেতা রাজশাহীর আশেপাশের এলাকায় উৎপাদিত সবজি নিয়ে বাজারে তোলেন। সিন্ডিকেট করে তারা কৃত্রিম সংকটন তৈরি করেন। এরপর সুযোগ বুঝে দাম নির্ধারণ করে দেন। তবে এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন বিক্রেতারা।
ক্রেতাদের অভিযোগ, বিক্রেতারা জোট করে দাম বাড়াচ্ছেন। আর বিক্রেতাদের সেই চিরাচরিত বাণী, পাইকারি বাজারে দাম বাড়তি, চাহিদার তুলনায় সরবরাহ কম ইত্যাদি। এসময় বাজারে পর্যাপ্ত শীতের সবজি থাকলেও হঠাৎ করে দাম বৃদ্ধিতে সাধারণ ক্রেতারা হতভম্ব হয়ে পড়েছেন। মহনগরীসহ পুঠিয়া, দুর্গাপুর, বাগমারা, বাঘা, চারঘাট, গোদাগাড়ী, তানোর, মোহনপুর কাচা বাজারগুলোতে ভোর থেকেই সেখানেই পাইকারী সবজি কেনাবেচা হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয় খুচরা কেনাবেচা। এদের কেউ কেউ ভোরে সস্তায় সবজি কিনে পরে চড়া দামে বিক্রি করেন। আলু কেজি প্রতি ২২ থেকে ২৫ টাকা, মিষ্টি কুমড়া কেজিপ্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা, মাঝারি সাইজের ফুলকপি প্রতি পিস ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, প্রতি পিস লাউ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, প্রতি পিছ মাঝারি সাইজের চাল কুমড়া ২৫ থেকে ৩০ টাকা, কাঁচাকলা হালি প্রতি ১৫ থেকে ২০ টাকা, বেগুন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, পটল ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, ঝিঙ্গা ৩০ থেকে ৩৫ টাকা, ঢেঁড়স ৩০ থেকে ৪০ টাকা, কাঁকরোল ৪০ থেকে ৪৫ টাকা, চিচিংগা ৩৫ থেকে ৪০, ঝিঙে ৩৫ থেকে ৪০ টাকা, কাচা মরিচ ৩০ থেকে ৪০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। পিয়াজ ১৮০ টাকা।
তাছাড়া লেবুর হালি ১৮ থেকে ২০ টাকা বিক্রি হচ্ছে। এছাড়াও নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারসহ উপজেলার বিভিন্ন হাট-বাজার ঘুরে দেখা গেছে প্রতিটি নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যের বাজারের দ্রব্য মূল্যের ঊর্ধ্বমুখি। এ সপ্তাহে বেড়েছে ভোজ্যতেলের দাম। চলতি সপ্তাহে চালের বাজারে তেমন কোনো পার্থক্য দেখা যায়নি। এ সপ্তাহে মানভেদে সয়াবিন খোলা তেল বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা, প্রতি কেজিতে ৪ থেকে ৫ টাকা হারে বেড়েছে। মানভেদে আটা বিক্রি হচ্ছে ২৮ থেকে ৩৬ টাকা দরে কেজি প্রতি বিক্রি হচ্ছে। কোনভাবেই কমছে না প্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম।
এতে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন খেটে খাওয়া মানুষেরা। বাজার করতে গিয়ে চরম বিপাকে পড়ছে দিন এনে দিন খাই সাধারণ লোকজন। দফায় দফায় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের দাম যেভাবে বৃদ্ধি পাচ্ছে, তাতে কষ্টের মাত্রা আরো বেড়ে যাচ্ছে সাধারন মানষের। রাজশাহীর হাট-বাজারগুলোতে এখন সবজি নিম্নবিত্তদের নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে। এবং হাট-বাজারগুলোতে মনিটরিং না থাকায় সাধারণ মানুষ বেকায়দায় পড়েছেন।