খুলনায় প্রায় শত কোটি টাকা হাতিয়ে পালিয়েছে ‘সেফ গ্রুপ’

 

সেফ গ্রুপ’
খুলনায় প্রায় শত কোটি টাকা হাতিয়ে পালিয়েছে

খুলনা ব্যুরো:   খুলনায় প্রায় শত কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে পালিয়েছে ‘সেফ গ্রুপ লিমিটেড’ নামক একটি প্রতিষ্ঠান। মাসিক মুনাফাভিত্তিক (এফডিআর) সঞ্চয়, সেফ ইসলামী ব্যবসায়ী কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড, ফ্ল্যাট-জমি ক্রয় এবং ড্রিংকিং ওয়াটারসহ বিভিন্ন প্রকল্পে বিনিয়োগের নামে গ্রাহকদের কাছ থেকে প্রতিষ্ঠানটি হাতিয়ে নেয় এ পরিমাণ অর্থ।
এদিকে, অক্টোবর মাসের লভ্যাংশ নিতে এসে প্রতিষ্ঠানের কোনো কর্মকর্তাকে অফিসে না পেয়ে বিক্ষোভ শুরু করেন শত শত গ্রাহক। শনিবার দিনভর নগরীর বয়রাস’ গ্রিন টাওয়ারে অবসি’ত ‘সেফ গ্রুপ’র নিজস্ব কার্যালয়ে এ বিক্ষোভ প্রদর্শন করা হয়। তবে, পরবর্তীতে সোনাডাঙ্গা পুলিশের উপসি’তিতে পরিসি’তি কিছুটা স্বাভাবিক হলেও গ্রাহকদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও হতাশা বিরাজ করছে।
ক্ষুব্ধ গ্রাহকদের অভিযোগ, ‘সেফ গ্রুপ’ খুলনার বিভিন্ন এলাকায় অফিস নিয়ে ১০ সহস্রধিক গ্রাহকের কাছ থেকে প্রায় শত কোটি টাকা আমানত সংগ্রহ করে এর কর্তৃপক্ষ আত্মগোপন করেছে।
গত ১৫ দিন ধরে প্রতিষ্ঠানের চেয়ারম্যান চরমোনাই পীরের মুরিদ ডা. মোখতার হোসাইন, ব্যবস’াপনা পরিচালক মোখতার হোসাইনের ছেলে ইসলামী যুব আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা আব্দুল্লাহ আল মামুন ও পরিচালক অপর ছেলে আব্দুল্লাহ মাহমুদ ফয়সাল, পরিচালক ইসমাইল হোসেন বাবু, সপরিবারে নিরুদ্দেশ রয়েছেন। তারা ভারত যাওয়ার কথা বলে অফিসের সঙ্গে সকল ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দিয়েছেন। যে কারণে গ্রাহকরা লভ্যাংশ দূরের কথা, এখন সারা জীবনের কষ্টার্জিত সঞ্চয়ও ফিরে পাবেন কি-না তা নিয়ে সংশয়ে রয়েছেন।
গ্রাহক মো. কামরুজ্জামান বলেন, তিনি ৩ বছর মেয়াদে ১০ লাখ টাকা রেখেছেন। প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকা লভ্যাংশ পেতেন। এখন মূলধনের কি হবে?। এভাবে হোসনে আরা ১০ লাখ, বদরুল আলম ১৫ লাখ, নূর ইসলাম ৩ লাখ, শিউলী আক্তার ও সালেহা বেগম এক লাখসহ শতাধিক গ্রাহক তাদের জমাকৃত টাকা ফেরত পাওয়া নিয়ে চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।
প্রতিষ্ঠানের অফিস সহকারী শান্তনু শিকদার ও রেজাউল করিম বলেন, ২৬ অক্টোবর থেকেই কোনো কর্মকর্তা অফিসে আসছেন না। তারা ভারতে যাওয়ার কথা বলে নিরুদ্দেশ হয়েছেন। কোনো যোগাযোগ করতে পারছেন না। এছাড়া হিসাবরক্ষক রিপন বাবু, প্রশাসনিক কর্মকর্তা হাবিবুর রহমান এবং অপর পরিচালক এসএম রাজুল হাসান রাজুও অফিসে আসছেন না। যে কারণে তারা গ্রাহকদের কোনো লভ্যাংশ প্রদান করতে পারছেন না।
এদিকে গ্রাহকদের বিক্ষোভের খবর পেয়ে সোনাডাঙ্গা থানার এসআই তৌহিদুল ইসলাম বলেন, বিক্ষোভের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস’ল পরিদর্শন করেন। আইন-শৃঙ্খলা পরিসি’তির অবনতি না ঘটিয়ে এ বিষয়ে তিনি আইনের আশ্রয় নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বলে জানান।
এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সেফ গ্রুপের নিজস্ব ভবন গ্রিন টাওয়ার এবং ব্যবস’াপনা পরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুনের বয়রাস’ বাসভবন বিভিন্ন ব্যাংকের কাছে দায়বদ্ধ রয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post