কক্সবাজার ও পটিয়া প্রতিনিধি : কক্সবাজারের মহেশখালীতে জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগরদের আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান শুরু হয়েছে। গতকাল শনিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মহেশখালী উপজেলার কালারমারছড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মাঠে আত্মসমর্পণ অনুষ্ঠান শুরু হয়। গতকাল ১২টি বাহিনীর ৯৬ জন জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগর আত্মসমর্পণ করেছে। একইসঙ্গে তাদের কাছে থাকা ১৫৫টি দেশীয় তৈরি আগ্নেয়াস্ত্র ও ২৭৩ রাউন্ড গোলাবারুদ জমা দিয়েছে। প্রধান অতিথি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মো. আসাদুজ্জামান খান কামাল বেলা ১১টার দিকে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছেন। অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারী।
কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মোহাম্মদ ইকবাল হোসাইন জানান, আত্মসমর্পণকারীদের মধ্যে মহেশখালীর কালারমারছড়ার আলোচিত জিয়া বাহিনীর প্রধান জিয়াউর রহমান জিয়া, তার বাহিনীর মানিক, আয়াতুল্লাহ, আবদুস শুকুর, সিরিপ মিয়া, একরাম ও বশিরসহ অন্তত ১৫, চেয়ারম্যান তারেক শরীফের অনুসারী হিসেবে পরিচিত কালা জাহাঙ্গীর বাহিনীর প্রধান জাহাঙ্গীর আলম, সদস্য আবুল, সোনা মিয়া, জমির উদ্দীনসহ প্রায়
১৫ জন, মহেশখালীর নুনাছড়ির মাহমুদুল্লাহ বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ আলী, সেকেন্ড-ইন-কমান্ড বদাইয়াসহ ১৫ জন, ঝাপুয়ার সিরাজ বাহিনীর প্রধান সিরাজ-উদ-দৌলাহ, নলবিলার মুজিব বাহিনীর প্রধান মজিবুর রহমান প্রকাশ শেখ মুজিব এবং কুতুবদিয়ার লেমশিখালীর কালু বাহিনীর প্রধান কালু প্রকাশ গুরা কালুসহ তার বাহিনীর ১৫-২০ জন জলদস্যু ও অস্ত্র কারিগর রয়েছে। ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর র্যাবের মাধ্যমে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার ৪৩ জলদস্যু আত্মসমর্পণের পর ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় অনেক শীর্ষ দস্যু ও অস্ত্র কারিগর। যার কারণে বিভিন্ন পাহাড় ও সাগর উপকূলে অভিযান বৃদ্ধি করে পুলিশ। অভিযানের মুখে আবারও আত্মসমর্পণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া ও পেকুয়ার দস্যু ও অস্ত্র কারিগররা।
আত্মসমর্পণে আগ্রহী অনেক দস্যু ও অস্ত্র কারিগর জানিয়েছে, অর্থের লোভে এ অন্ধকার জগতে জড়িয়ে পড়েন। আবার কেউ প্রভাবশালীদের ক্যাডার হিসেবে ব্যবহার হয়েছেন। অনেকে আবার বংশ পরম্পরায় আধিপত্য রক্ষায় এ কলংকিত জগত বেছে নিয়েছিলেন। এ জগতে পা বাড়িয়ে অনেক পথ হেঁটেছেন। একাধিক মামলা মাথায় নিয়ে ফিরতে পারেনি স্বাভাবিক জীবনে।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইকবাল হোসাইন আরও জানান, আত্মসমর্পণকারী দস্যুরা দীর্ঘদিন জেলেদের জিম্মি করে মুক্তিপণ আদায়, মাছ লুট, ঘের ডাকাতি, বংশ পরস্পরের বিরোধ নিয়ে খুনোখুনি ছিল নিত্তনৈমিত্তিক ঘটনা। এতে স্থানীয়রা থাকতো আতঙ্কে।
উল্লেখ্য, ২০১৮ সালের ২০ অক্টোবর র্যাবের মাধ্যমে মহেশখালী-কুতুবদিয়ার ৪৩ জলদস্যু আত্মসমর্পণের পরও ধরাছোঁয়ার বাইরে থেকে যায় অনেক শীর্ষ দস্যু ও অস্ত্র কারিগর। যার কারণে বিভিন্ন পাহাড় ও সাগর উপকূলে অভিযান বৃদ্ধি করে পুলিশ। অভিযানের মুখে আবারও আত্মসমর্পণ করতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া ও পেকুয়ার দস্যু ও অস্ত্র কারিগররা।