রায়পুরায় ৩ শিশু কন্যাসহ অগ্নিদগ্ধ ৪ আটক ২

শিশু কন্যাসহ অগ্নিদগ্ধ

নরসিংদী প্রতিনিধি : পূর্ব শত্রুতার জের হিসেবে দেয়া আগুনে ৩ শিশুকন্যা ও ১ বৃদ্ধা অগ্নিদগ্ধ হয়েছে। রায়পুরা উপজেলার উত্তর বাখরনগর ইউনিয়নের লোচনপুরা গ্রামের শামসু মিয়ার বাড়িতে গতকাল মঙ্গলবার ভোরে এ ঘটনা ঘটে। অগ্নিদগ্ধ মুক্তা মণি (১৬), শ্রুতি (১৩), কচি (১১) ও খাতুনের নেছা (৬০)কে রায়পুরা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেঙ্ েভর্তি করা হয়। পরে উন্নত চিকিৎসার জন্যে তাদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছে। খবর পেয়ে নরসিংদী পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন বিপিএম, অতিঃ পুলিশ সুপার শফিউর রহমান, রায়পুরা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. শফিকুর রহমান ও রায়পুরা থানার ও.সি মহসীন কবির ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।

পুলিশ সুপার মিরাজ উদ্দিন সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে জানান, গত ৬ ফেব্রুয়ারি রায়পুরা উপজেলার লোচনপুরা গ্রামের দুলাল গাজী (৪০) নামে এক ব্যক্তিকে কুপিয়ে হত্যা করে প্রতিবেশী শামসু মিয়ার পুত্র বিপ্লবসহ তার সহযোগীরা। এ ঘটনায় উত্তেজিত এলাকাবাসী বিপ্লবের বাড়িঘরে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করে। দুলাল গাজী হত্যা মামলায় বিপ্লবকে আসামি করা হলে সে পরিবার-পরিজন নিয়ে বাড়িঘর ছেড়ে অন্যত্র চলে যায়। সোমবার বিকেলে বিপ্লবের ফুফু খাতুনের নেছা (৬০), বিপ্লবের বোন মুক্তা মণি (১৬), অপর বোন শ্রুতি (১৩) ও কচি (১১) বাড়ি ফিরে আসে। গতকাল মঙ্গলবার ভোরে এরা অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় প্রথমে রায়পুরা উপজেলা কমপ্লেঙ্ েচিকিৎসা নেয়। পরে এরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হয়। কারা তাদেরকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেছে, তা জানা যায়নি। তাছাড়া অগ্নিকান্ডের ব্যাপারে আশেপাশের কেউ কোন তথ্য জানাতে পারেনি। তিনি আরও জানান, বিপ্লবের বাড়ির বিল্ডিং-এর যে কক্ষে তারা অগ্নিদগ্ধ হয়েছে বলে জানাচ্ছেন সেটি আসলে গত ৬ ফেব্রুয়ারি দুলাল গাজী হত্যার ঘটনায় উত্তেজিত এলাকাবাসী কর্তৃক পুড়িয়ে দেয়া কক্ষ। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। আসলে কেউ আগুন লাগিয়ে দিয়েছে নাকি প্রতিপক্ষকে মামলা দিয়ে ঘায়েল করার জন্য ঘটনা সাজানো হয়েছে। তিনি জানান, এ ঘটনায় রবিন ও মামুন নামে দু’ জনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে এবং ঘটনায় ব্যবহৃত একটি স্পিরিট ভর্তি প্লাস্টিকের বোতল ঐ কক্ষ থেকে উদ্ধার করা হয়েছে।

ইউপি মেম্বার হাবিবুর রহমান জানান, লোচনপুরা গ্রামের শামসু মিয়ার পুত্র বিপ্লব মূলতঃ বিএনপি সমর্থক। হানিফ, মিস্টার ও দুলাল গাজী হত্যা মামলার আসামি সে। তিনটি হত্যা মামলা মাথায় নিয়ে সে পালিয়ে বেড়াচ্ছে। তবে মঙ্গলবার সকালে কিভাবে তার বাড়িতে অগ্নিদগ্ধের ঘটনা ঘটেছে তা জানাতে পারেননি তিনি।

নিহত দুলাল গাজীর বড় বোন জুমাদি বেগম (৫৫) জানান, বিপ্লবের বাড়িতে আগুন দিতে কেউ দেখে নাই। কিভাবে আগুন লেগেছে তাও জানেনা। আওয়ামী লীগ সমর্থক দুলাল গাজীকে কুপিয়ে হত্যা করেছিল বিএনপির সমর্থক বিপ্লব ও তার সহযোগিরা। দুলাল গাজী হত্যা মামলার আসামি বিপ্লব দীর্ঘদিন যাবৎ বাড়ি ছেড়ে অন্যত্র বসবাস করত। তারা কখন বাড়িতে এসেছে, তা কেউ জানেনা বলে জানান তিনি।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post