খাসোগির 'শেষ টুকরো' _ ছৈয়দ আন্ওয়ার

 

sanor

সৌদি সাংবাদিক খাসোগির শেষ কর্মটিও প্রমাণ দিচ্ছে, তিনি আরবে মত প্রকাশের স্বাধীনতা প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন লালন করতেন। আর এর জন্যই হয়তো আজ তার এই পরিণতি। তবে তার এই সংগ্রামকে আমরা সম্ভাবনার দ্বার হিসেবে ধরে নিতে পারি। কারণ মাত্র ৭০০ শব্দের যে নিবন্ধনে খাসোগি আরব বিশ্বের অন্যায্যতাকে নির্দেশ করেছেন, তার এই আর্তি যেন শুধু আরব বিশ্বের নয় সমগ্র বিশ্বের দৈন্যতারই ইঙ্গিত বহন করছে।

গত ১৭ অক্টোবর ওয়াশিংটন পোস্ট খাসোগির ‘আরব বিশ্বে দরকার অবাধ বাকস্বাধীনতা’ শিরোনামের একটি লেখা প্রকাশ করেছে। এতে তিনি বলেছেন, মধ্যপ্রাচ্যের সরকারগুলো অবাধে সংবাদমাধ্যমের কণ্ঠ রোধ করে যাচ্ছে এবং এই হার ক্রমাগত বাড়ছে।

পত্রিকাটির গ্লোবাল ওপিনিয়নস সম্পাদক ক্যারেন এটি প্রকাশ করেছেন। তিনি এক নোটে লিখেছেন, খাসোগি নিখোঁজ হওয়ার একদিন পর তার অনুবাদক ও সহকারীর কাছ থেকে তিনি এই লেখাটি পেয়েছেন। এই লেখাতে খাসোগি আরো বলেছেন, আরব বিশ্বের বেশির ভাগ দেশের সাধারণ মানুষ অনেক বিষয় নিয়েই প্রকাশ্যে আলোচনা করতে পারেন না। যেসব বিষয় দেশ ও নিজেদের প্রাত্যহিক জীবনকে প্রভাবিত করছে, সেসব বিষয় নিয়েও তারা মুখ খুলতে পারেন না। রাষ্ট্র পরিচালিত মাধ্যমগুলো জনগণের মানসিকতাকে গুরুত্ব দেয় না। একটি বৃহৎ অংশ অনেক সময়ই মিথ্যা তথ্যের শিকার হন। দুঃখজনক হলো, এ অবস্থা পরিবর্তনের কোনো সম্ভাবনা নেই।

যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমান এবং সৌদি রাজপরিবারের সমালোচক হিসেবে পরিচিত এই সাংবাদিক তাঁর সম্ভাব্য শেষ লেখাতে আরব বিশ্বের সাধারণ মানুষের প্রত্যাশা প্রকাশের মধ্য দিয়ে যেন সারা বিশ্বের মানুষের প্রত্যাশাকে তুলে ধরেছেন। তিনি মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলোতে সরকারের কর্তৃত্ব, অবিচল হস্তক্ষেপ ও তথ্যের ওপর নিষেধাজ্ঞা থেকে সাধারণ মানুষের স্বাধীন হওয়ার যে ব্যাকুলতা এবং যে প্রতীক্ষার প্রেক্ষাপট তুলে ধরেছেন তা থেকে আমরা কি খুবই আলাদা?

পুনশ্চ : সৌদির সাংবাদিক জামাল খাসোগির শেষ লেখাটি বিশ্বের সকল নির্যাতিত এবং অধিকার বঞ্চিত মানুষের ভাগ্যোন্নয়নে ভূমিকা রাখবে বলেই আমার বিশ্বাস।

Post a Comment

Previous Post Next Post