মেহেরপুরে ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষে তিন বন্ধু সাফল্য

ব্ল্যাক বেবি তরমুজ

ছবি=কৌশিক আহমেদ শিমুল

কৌশিক আহমেদ শিমুল :  মাত্র ৬০ দিন থেকে ৬৫ দিনের আবাদে তাইওয়ানের ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজে প্রতি বিঘায় দুই লাখ টাকা লাভের আশা করা যায়। আর এতে প্রতি বিঘায় খরচ মাত্র ৫০-৬০ হাজার টাকা। মাচা পদ্ধতিতে এ তরমুজ চাষে ঝড়-বৃষ্টিতেও তেমন ক্ষতির আশঙ্কা থাকে না। স্বল্প খরচে অল্প দিনে অধিক মুনাফা পাওয়া যায়।
মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার গাঁড়াডোব পুড়াপাড়া গ্রামের সাইদুর রহমান লিজন। ৬-৭ মাস আগে কোরিয়া থেকে দেশে ফিরে আসেন। তারা তিন বন্ধু মিলে ১০ বিঘা জমিতে এ জাতের তরমুজের চাষ করে সফলতার মুখ দেখতে শুরু করেছেন। লিজন জানান, বিদেশে খুব একটা ভালো সময় যাচ্ছিল না তার। ইন্টারনেটের মাধ্যমে চাষাবাদসহ বিভিন্ন ব্যবসা সর্ম্পকে জানতে পেরে তার মনে হচ্ছিল বিদেশের চেয়ে দেশে তিনি ভালো কিছু করতে পারবেন। তাই এলাকার আরো দুই বন্ধুর সঙ্গে কথা বলে তিনি কোরিয়া থেকে দেশে ফিরে আসেন। আগে থেকেই তার জানা ছিল পাশের কয়েকটি জেলায় ব্ল্যাক বেবি নামের তাইওয়ানী জাতের তরমুজ চাষের কথা। তাই দেশে ফিরে ১০ বিঘা জমি লিজ নিয়ে তারা তিন বন্ধু মিলে ব্লাক বেবি জাতের তাইওয়ানী তরমুজ চাষ শুরু করেছেন। সাইফুল ও আজাদ জানান, গ্রীষ্মের প্রচন্ড তাপদাহের মাঝে এবছর মাহে রমজান শুরু হয়েছে। পবিত্র রমজানের ইফতারিতে রসালো ফল তরমুজ রোজদারের রসনা তৃপ্তির জন্যে ভারি মজাদার খাবার। তাই আমরা রমজান মাসকে সামনে রেখে গাঁড়াডোব গ্রামের পুড়াপাড়া মাঠে প্রায় ১০ বিঘা জমিতে স্বল্প মেয়াদী তাইওয়ানী জাতের ব্ল্যাক বেবি তরমুজ চাষ করেছি। পরম মমতায় আর চরম পরিচর্যার সবটুক নির্যাস ঢেলে তরমুজ খেতের পরিচর্যা করছি। ক্ষেতের নান্দনিকতায় মনপ্রাণ জুড়িয়ে যাচ্ছে। তারা জানান, প্রকৃতিক দূর্যোগে বড় ধরনের ক্ষতি না হলে প্রতি বিঘা জমি থেকে ২ লাখ টাকা করে লাভের ব্যাপারে ভীষণ আশাবাদী। ঢাকার কারওয়ান বাজারের এক ব্যবসায়ীর সঙ্গে চুক্তি হয়েছে। তিনি ১৬০০ টাকা মন দরে সব তরমুজ কিনবেন বলে জানিয়েছেন। তারা আরো বলেন- ব্ল্যাক বেবি তরমুজ তাইওয়ান থেকে আনা কালো রঙের হলেও তরমুজের ভেতরটা টকটকে লাল। এছাড়া প্রতিটি তরমুজ ৩-৫ কেজি ওজনের। অত্যন্ত সুমিষ্ট গ্রীষ্মকালীন ফল। শীত ছাড়া পুরো বছরই এ তরমুজ চাষ করা যায়।
জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. আক্তারুজামান বলেন, বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলায় তরমুজ চাষ করা হলেও মেহেরপুর জেলায় এই প্রথম। লাভের আশায় বিদেশ থেকে বাড়ি ফিরে লিজন ভুল করেননি। লিজন বিদেশের চেয়ে অনেক বেশি আয় করতে পারবেন।
তিনি আরো বলেন- ব্ল্যাক বেবি জাতের তরমুজ চুয়াডাঙ্গাসহ কয়েকটি জেলায় জনপ্রিয়তা লাভের ধারাবাহিকতায় এখন মেহেরপুরে সমপ্রসারিত হচ্ছে। কৃষকেরা স্বল্পমেয়াদী এই তরমুজ চাষের ব্যাপারে ভীষণ আশাবাদী। ফলে আগামী বছর থেকে এই তরমুজ মেহেরপুরের অনান্য উপজেলাতে সমপ্রসারিত হবে বলে আশা করা যায়।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post