কেবিডিনিউজ /কৌশিক আহমেদ শিমুল: মেহেরপুরে আম সংগ্রহ শুরু হয়েছে। বিষমুক্ত আম প্রাপ্তির লক্ষ্যে ইতিমধ্যে জাত ভিত্তিক সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। কিন’ এতে নির্ধারিত সময়ে নির্ধারিত জাতের আম সংগ্রহের বিষয়টি চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জেলা কৃষি অফিসের দেয়া তথ্যমতে, গুটি ও বোম্বাই জাতের আম সংগ্রহের মধ্য দিয়ে বাজারে এসেছে মেহেরপুর জেলার আম। গত ১৮ মে থেকে গুটি ও বোম্বাই জাতের আম সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করা হয়। প্রশাসনের বেঁধে দেয়া সময় অনুযায়ী হিমসাগর ২৮ মে, ল্যাংড়া ৫ জুন, ফজলী ২০ জুন ও আম্রপালি ১০ জুলাই গাছ থেকে সংগ্রহের সময়। তাই আমের বাজার পুরোপুরি জমে উঠতে অপেক্ষা করতে হবে আরো সপ্তাহ খানেক। গত কয়েকদিন মেহেরপুরের বিভিন্ন বাগান থেকে বোম্বাই ও স’ানীয় জাতের আম সংগ্রহ করছেন চাষি ও ব্যবসায়ীরা। বাগানগুলো থেকে আম সংগ্রহে ব্যস- এখন তারা। এ আম স’ানীয় বাজারের চাহিদা মিটিয়ে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্নস’ানে পাঠাচ্ছেন ব্যবসায়ীরা।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সমপ্রসারণ বিভাগের উপ-পরিচালক ড. মুহা. আখতারুজ্জামান বলেন, এ বছর আবহাওয়াজনিত কারণে আম পাকার সময় অন্যান্য বছরের চেয়ে কিছুদিন পিছিয়েছে। জাত ভিত্তিক আম সংগ্রহের যে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে তার আগে আম সংগ্রহ করলে তা অপরিপক্ক হবে। নির্ধারিত সময়ের মধ্যেই আম পাকা শুরু হবে। পরিপক্ক আম সংগ্রহ করলে বিষ দিয়ে পাকানোর প্রয়োজন পড়বে না। বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, বোম্বাই ও আটি আমের চেয়ে হিমসাগর আম সু-স্বাদু ও দাম বেশি। তাই কিছু কিছু অসাধু ব্যবসায়ী নির্ধারিত সময়ের আগেই বেশি দামের আশায় হিমসাগর আম গাছ থেকে সংগ্রহ শুরু করেছে। সে কারণে অপরিপক্ক আম পাকাতে ব্যবহার করা হচ্ছে মানব দেহের জন্য চরম ক্ষতিকর কীটনাশক। আমগুলো স’ানীয় প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে পাঠানো হচ্ছে রাজধানী ঢাকায়। গাংনী উপজেলার আযান গ্রামের আম বাগান মালিক সিরাজুল ইসলাম বলেন, জেলা প্রশাসনের নির্দেশনা মতই আমরা আম সংগ্রহ করে বিক্রি করি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে জাত ভিত্তিক আমগুলো গাছেই ২/১টি পাকতে শুরু করে। এ আমের রং তেমন আকর্ষণীয় হয় না। কিন’ বিষ দিয়ে পাকানো আমের রং দেখতে আকর্ষণীয় হয়। বেশিরভাগ ক্রেতা রং দেখে আম ক্রয় করেন। এতে আমরা যারা বিষমুক্ত আম বাজারজাত করছি তারা ক্ষতিগ্রস’ হচ্ছি। জেলা প্রশাসনের বেধে দেয়া সময়ের মধ্যে সব বাগান থেকে আম সংগ্রহের বিষয়টি নিশ্চিতের দাবি জানান তিনি। কয়েকজন ভোক্তা জানান, বাজারে স্বল্প পরিমাণে আম পাওয়া যাচ্ছে। তবে বিষমুক্ত কিনা তা নিয়ে সংশয় রয়েছেন তারা। এজন্য ক্রেতাদের মাঝে আম কেনা নিয়ে তেমন সাড়া নেই। আম বাগান ও বাজার মনিটরিং জোরদার না করা হলে বিষমুক্ত আম পাওয়ার প্রত্যাশা করা যাবে না।
মেহেরপুরের ডিসি মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন বলেন, বিষমুক্ত আম বাজারজাত করার বিষয়ে কোনো প্রকার ছাড় নেই। এরইমধ্যে বাগান ও আড়তগুরোতে নজরদারি শুরু হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের কয়েকটি টিমও প্রস’ত রয়েছেন। গেল বছর যেভাবে অপরিপক্ক আম ধ্বংস করা হয়েছিলো এবারও তার ব্যত্যায় ঘটবে না বলেও জানান তিনি।