যেখানে পরীক্ষা সেখানেই প্রশ্নফাঁস

prosnofas

কাজী মাহফুজুর রহমান শুভ : এবার চলতি এসএসসি পরীক্ষায় প্রতিদিনই পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস হচ্ছে। প্রশ্নফাঁস রোধে সরকারের নেয়া কোনো পদক্ষেপই কোনো কাজে আসছে না। বর্তমান সরকারের সময়ে প্রশ্ন ফাঁসের ভয়াবহতা এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, যেখানে প্রশ্ন হয়, সেই প্রশ্নই ফাঁস হয়ে যাচ্ছে। এবার উত্তরসহ প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ পাওয়া গেছে। শুধু এসএসসি নয়, বর্তমান সরকারের সময়ে সব ধরনের পরীক্ষারই প্রশ্নফাঁস হচ্ছে- পিএসসি, জেএসসি, জেডিসি, এইচএসসি, সব ধরনের চাকরি বা বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি এমন কোনো পরীক্ষা নেই, যেখানে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটছে না।
গতকাল সোমবার জীববিজ্ঞান পরীক্ষা শুরুর ঘণ্টাখানেক আগে হোয়াটসঅ্যাপের একটি গ্রুপে প্রশ্ন ও উত্তরপত্র ফাঁস হয়েছে বলে জানা গেছে। তবে এবার বোর্ডের দেয়া অতিরিক্ত খাতায় (এঙ্ট্রা খাতা) এমসিকিউ’র সমাধান লেখা রয়েছে। সোমবার সকাল সোয়া ৯টার দিকে এই উত্তরপত্র হোয়াটস অ্যাপের একটি গ্রুপে দেয়া হয়। খাতার ওপর তারিখ দেয়া ফেব্রুয়ারি ১৯, দিন সোমবার এবং খাতায় পর্যবেক্ষকের স্বাক্ষরও রয়েছে। এর আগে সকাল ৯টার কিছু আগেই জীববিজ্ঞান প্রশ্নের একটি সেটও এই একই অ্যাপসে পাওয়া যায়। যার উত্তর বোর্ডের খাতায় লিখে একই গ্রুপে ছেড়ে দেয়া হয়।

বোর্ডের এই খাতা কীভাবে বাইরে এলো তা জানতে ঢাকা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক তপন কুমার সরকারের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি।

এবার এসএসসি প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে পরীক্ষার সময় কোচিং সেন্টার বন্ধ, পরীক্ষার্থীদের আধা ঘণ্টা আগে পরীক্ষাকক্ষে বসা এবং কেন্দ্রের ভেতর মোবাইল ফোন না নেয়ার ঘোষণা দিয়েছিল সরকার। কিন্তু কোনো পদক্ষেপই কাজে আসেনি। পরে প্রশ্ন ফাঁসকারীদের ধরিয়ে দিলে পাঁচ লাখ টাকা দেয়ার ঘোষণাতেও লাভ হয়নি। পরীক্ষার দিন ইন্টারনেট সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধের চেষ্টা করেও প্রশ্নপত্র ফাঁস ঠেকানো যায়নি।

জানা গেছে, প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় পুলিশ কেবল গ্রেফতার করেছে। কিন্তু কোথা থেকে প্রশ্নগুলো ফাঁস হচ্ছে, সেটিই শনাক্ত হচ্ছে না। একাধিক শিক্ষাবিদ ও শিক্ষা বোর্ডের কয়েকজন কর্মকর্তার মতে, এবারের মতো আগাম ঘোষণা দিয়ে ধারাবাহিকভাবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা আগে ঘটেনি।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একাধিক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার মতে, বর্তমান প্রক্রিয়ায় প্রশ্নপত্র ফাঁস একেবারে বন্ধ করা কঠিন। কারণ, বিতরণসহ প্রশ্নপত্রের সঙ্গে শিক্ষকসহ কমপক্ষে ১৫ হাজার মানুষ জড়িত। এ জন্য পরীক্ষার দিন সকালে স্থানীয়ভাবে প্রশ্নপত্র ছাপিয়ে পরীক্ষা নেয়ার পরিকল্পনাও বাস্তবায়ন করা যাচ্ছে না। তবে আগামী দিনে ‘প্রশ্নব্যাংক’ করে প্রশ্নপত্রের অধিক সেট করে পরীক্ষা নেয়ার কথা ভাবা হচ্ছে। এমসিকিউ তুলে দেয়া হবে।

২০১৫ সালে টিআইবির একটি গবেষণায় বলা হয়েছিল, প্রশ্নপত্র প্রণয়ন ও বিতরণের সঙ্গে জড়িত সরকারি ব্যক্তিরা কোনো না কোনো পর্যায়ে প্রশ্ন ফাঁসে জড়িত। প্রশ্ন তৈরি, ছাপানো ও বিতরণে প্রায় ১৮টি ধাপে প্রশ্ন ফাঁসের ঝুঁকি রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রশ্নপত্র ফাঁস রোধে যে ধরনের পদক্ষেপ নেয়া দরকার, তা কখনো নেয়া হয়নি। কারও বিরুদ্ধে দৃশ্যমান কোনো ব্যবস্থাও নেই। মামলা হলে সাজাও হয় না। আগে অস্বীকারও করা হতো। ফলে সমস্যাটি আরও বেড়েছে।

এ বিষয়ে খোদ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সচিব মো. সোহরাব হোসাইনও স্বীকার করেছেন, চলমান পরীক্ষা পদ্ধতি অনুসারে প্রশ্নফাঁস রোধ করা সম্ভব হবে না। এখন পরীক্ষা পদ্ধতিও পরিবর্তনের চিন্তা চলছে। এক্ষেত্রে ‘ওপেন বুক এঙ্াম’ অর্থাৎ বই দেখে পরীক্ষা নেয়ার কথাও আলোচনায় রয়েছে।

বিশ্লেষকরা বলছেন, বর্তমান সরকারের আমলে শিক্ষার গুণগত মান ক্রমেই অবনতির দিকে যাচ্ছে। সর্বক্ষেত্রে অনিয়ম, দলীয়করণ এমন পর্যায়ে পৌঁছেছে যে, কোনো ধরনের পদক্ষেপই প্রশ্নফাঁস ঠেকাতে পারছে না। বিভিন্ন সময় প্রশ্ন ফাঁসের সাথে সরকারি দলের নেতাকর্মীদের নাম আসলেও মূল হোতারা ধরাছোঁয়ার বাইরেই থেকে যাচ্ছে। এসএসসি পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে শিক্ষামন্ত্রী একাধিকবার বলেছেন, অন্য কোথাও থেকে প্রশ্ন বাইরে যাওয়ার সুযোগ নেই। কিছু শিক্ষক পরীক্ষা শুরু হওয়ার আগে প্রশ্নপত্রের প্যাকেট খোলার পর তা বাইরে পাঠিয়ে দেন। এ জন্যই এবারের এসএসসি পরীক্ষা সকাল ১০টায় শুরু হলেও শিক্ষার্থীদের সকাল সাড়ে ৯টায় সিটে বসা বাধ্যতামূলক করা হয়। এর পরই প্রশ্নের প্যাকেট খোলার সিদ্ধান্ত হয়। কেন্দ্রসচিব একটি অ্যানালগ ফোন ছাড়া অন্য কেউ কোনো ফোন ব্যবহার করতে পারবেন না বলেও জানিয়ে দেয়া হয়। কিন্তু এরপরও পরীক্ষার প্রথম দিনই সকাল সাড়ে ৯টার আগেই ফেসবুকের বিভিন্ন আইডিতে প্রশ্নপত্রের এমসিকিউ অংশ হুবহু পাওয়া যায়।

বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায়, ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটেছে এই আমলে। ২০০৯ সাল থেকে এ পর্যন্ত বিসিএস, গোয়েন্দা কর্মকর্তা, সমাজসেবা কর্মকর্তা, খাদ্য অধিদফতরের কর্মকর্তা, অডিট, এনবিআর, এটিইও, মেডিকেল, প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষা, এসএসসি, এইচএসসি, অগ্রণী ব্যাংক, রূপালী ব্যাংক, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষাসহ বিভিন্ন পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ও অভিযোগ পাওয়া যায়। মন্ত্রণালয় সূত্র, বিশিষ্টজন ও চাকরি প্রার্থীদের মতে, বর্তমান সরকরের সময়ের মতো অতীতে এত বেশি ও গণহারে প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনা ঘটেনি। গত বছরের ৩১ মে ফাঁস হয়ে যায় অগ্রণী ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন। প্রশ্নপত্র ফাঁসের সত্যতা পাওয়ার পর ১২ জুন ঐ পরীক্ষা বাতিল করা হয়।

২০১০ সালের ৮ জানুয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়। ফাঁস হওয়া প্রশ্নে পরীক্ষা হলেও পরীক্ষা বাতিল হয়নি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ৯১ বছরের ইতিহাসে প্রথম প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটে গত ২০১০ সালের ২১ জানুয়ারি। শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইআর) ২০০৯-১০ শিক্ষাবর্ষে অনার্স প্রথমবর্ষ ভর্তি পরীক্ষার ৩টি সেটের সবটাই ফাঁস হয়। এ ঘটনায় ঐ পরীক্ষা স্থগিত করা হয়েছিল।

২০১০ সালের ১৬ জুলাই বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা কর্মকর্তা পদে নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়। এতে ঐ পরীক্ষা বাতিল করে কর্তৃপক্ষ। ২০১০ সালের ২৮ আগস্ট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নিয়োগের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হয়। ২০১০ সালের ৮ জুলাই সরকারি মাধ্যমিক স্কুলের সহকারী নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস হওয়ায় পরীক্ষা স্থগিত করা হয়। ২০১০-১১ সালে মেডিকেল কলেজের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। ২০১১ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনায় সিন্ডিকেট চক্রের ছাত্রলীগ, বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকসহ ২৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।

২০১১ সালে অডিট বিভাগের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। ২০১২ সালের ২৭ জানুয়ারি ফাঁস হওয়া প্রশ্নেই খাদ্য অধিদফতরের নিয়োগ পরীক্ষা নেয়া হয়। শেষ পর্যন্ত ঐ পরীক্ষা বাতিল করা হয়। ২৭ জুলাই জনতা ব্যাংকের নির্বাহী কর্মকর্তা পদে নিয়োগ পরীক্ষার আগের রাতে পুরান ঢাকার একটি হোটেল থেকে ফাঁস হওয়া প্রশ্নসহ ১৬ জনকে আটক করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।

২০১৪ সালে প্রতিটি পাবলিক পরীক্ষার শুরু থেকেই প্রতিটি বিষয়ে একের পর এক প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা এবং অভিযোগ আসতে থাকে। ফাঁস হওয়া অনেক প্রশ্নের সাথে পরীক্ষার হলের প্রশ্নপত্র হুবহু মিলে যায়। ২০১৩ সালে সমাপনী পরীক্ষায় ইংরেজি এবং বাংলা বিষয়ে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা তদন্তে প্রমাণিত হয়। ইংরেজি ৮০ এবং বাংলা ৫৩ শতাংশ প্রশ্ন মিলে যায় ফাঁস হওয়া প্রশ্নের সাথে। তবু এ পরীক্ষা বাতিল হয়নি। ২০১২ সালেও সমাপনী পরীক্ষায় বাংলা ও গণিতে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটে। ২০১৩ সালের এসএসসি ও সমানের পরীক্ষায়ও সব প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। গণিত, ইংরেজি প্রথম পত্রসহ বিভিন্ন বিষয়ে ফাঁস হওয়া প্রশ্নের হুবহু মিল পাওয়া যায়। প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগের ভিত্তিতে স্থগিত করা হয় ৩৩তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা ও অগ্রণী ব্যাংকের নিয়োগ পরীক্ষা। একই কারণে প্রাইমারি স্কুলে সহকারী শিক্ষক নিয়োগের পরীক্ষাও ১৭ জেলার বাতিল করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩৪তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসেরও অভিযোগ রয়েছে।

চলতি এসএসসি পরীক্ষায় গত মঙ্গলবার পরীক্ষা শুরুর এক ঘণ্টা আগে বাসভর্তি শিক্ষার্থীদের হাতে প্রশ্ন পাওয়া যায়। পদার্থবিজ্ঞান পরীক্ষার আগে চট্টগ্রামের এক স্কুলের পরীক্ষার্থীদের মোবাইল ফোনে পাওয়া গেছে ফাঁস হওয়া প্রশ্ন, যা পরীক্ষার আসল প্রশ্নের সাথে মিলেও গেছে। বন্দরনগরীর ওয়াসা মোড়ে পরীক্ষার আগে দাঁড়িয়ে থাকা শ্যামলী পরিবহণের একটি বাসে অভিযান চালিয়ে ঐ প্রশ্ন পাওয়া যায় বলে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মুরাদ আলী জানান।

সূত্র জানায়, ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় আলোচিত এসএসসি পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নও দুইবার ফাঁস হয়েছে। ১৯৯৭ সালে এসএসসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটে। ঐ ঘটনায় কারও শাস্তি হয়নি। ১৯৯৯ সালে আবার এসএসসি পরীক্ষার আগে ভোলার একটি কেন্দ্র থেকে ইংরেজি দ্বিতীয়পত্র পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়। এ ঘটনায় পরীক্ষা বাতিল করে গঠন করা হয় তদন্ত কমিটি। কিন্তু কারও শাস্তি হয়নি। এছাড়া ঐ আমলে বিসিএসসহ বিভিন্ন চাকরির নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠে।

প্রশ্নপত্র ফাঁস, প্রকাশ বা বিতরণের সঙ্গে জড়িত থাকার শাস্তি নূ্যনতম ৩ বছর থেকে সর্বোচ্চ ১০ বছরের কারাদ-সহ অর্থদ-। পাবলিক পরীক্ষাসমূহ (অপরাধ) আইন, ১৯৮০ এবং সংশোধনী ১৯৯২-এর চার নম্বর ধারায় এই শাস্তির বিধান রয়েছে। কিন্তু এই আইন প্রণয়নের পর বিসিএসসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় ৮০ বারের বেশি প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটলেও শাস্তির নজির নেই। তদন্ত হয়েছে মাত্র ৩৩টির। অপরাধীরা পার পেয়ে যাচ্ছে প্রতিটি ঘটনায়।

টিআইবি’র নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করার জন্য ২০১২ সালে একটা নীতিমালা হয়েছিল। এতে শিক্ষকদের কোচিং বাণিজ্য বন্ধ করার সুস্পষ্ট নির্দেশনা আছে। কিন্তু এটা লঙ্ঘন করে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের একাংশ এর সাথে জড়িত আছে। প্রশ্ন ফাঁস করার শান্তি আগে ছিল ১০ বছরের কারাদ-, কিন্তু ১৯৯২ সালে এটা কমিয়ে ৪ বছর করা হয়। এতে একটা দৃষ্টান্ত স্থাপন হলো যে অপরাধটা তত গুরুতর নয়। তাও আবার কখনো কারো শাস্তিই হয়নি।

Post a Comment

Previous Post Next Post