কুষ্টিয়ায় সরকারি গুদাম থেকে আলোচিত ব্যবসায়ী রশিদের ৬০ মেট্রিক টন চাল ফেরত

চাল

জগতি খাদ্য গুদাম চালের পরিবর্তে যাচ্ছে খুদ

কুষ্টিয়া থেকে শরিফ মাহমুদ : একদিকে ভাঙা চাল আর তাতে অসংখ্য কালো দানা এ রকম একেবারেই খাবার অযোগ্য চাল সরকারি গুদামে সরবরাহ করায় চাল সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা বাংলাদেশ চালকল মালিক সমিতির সভাপতি কুষ্টিয়ার সেই আলোচিত চাল ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদের চাল ফেরত পাঠিয়েছে খাদ্য বিভাগ।
সোমবার দেশের আলোচিত চাল ব্যবসায়ী বাংলাদেশ চালকল মালিক সমিতির সভাপতি রশিদ এ্যাগ্রো ফুডের মালিক আব্দুর রশীদের দেয়া প্রায় ৬০ মে:টন চাল গ্রহণ না করে গুদামের গেট থেকেই ফেরত পাঠিয়ে দেয় খাদ্য বিভাগ। সূত্র জানায়, কুষ্টিয়া জেলায় এবার সরকারি ভাবে ১১ হাজার ৮ শ মেট্রিক টন আমন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে জেলা খাদ্য বিভাগ। এই লক্ষ্য মাত্রার প্রায় অর্ধেক ৫ হাজার মেট্রিক টন চাল সংগ্রহের কথা রয়েছে এই আলোচিত চাল ব্যবসায়ীর। সারা দেশের মত কুষ্টিয়াতে শুরু হয়েছে আমন মৌসুমে চাল সংগ্রহ অভিযান। গত ১০ ডিসেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে এ অভিযান শুরু হলেও মিল মালিকরা যে চাল সরবরাহ করছে তার মান অত্যন্ত নিম্নমানের। এরই মধ্যে চালের মান যাচাই করে নিম্নমানের চাল ফেরত দেয়ারও ঘটনা ঘটেছে। সোমবার দুপুরে জগতি ও সদর খাদ্য গুদামে ৪ ট্রাক চাল যার পরিমাণ আনুমানিক ৬০ মে:টন চাল ফেরত পাঠিয়েছে খাদ্য বিভাগ। জগতি খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সাইদুর রহমান জানান, দুপুরে রশিদ এ্যাগ্রো ফুডের পক্ষ থেকে ২ ট্রাকে প্রায় ৩০ মে:টন চাল গুদামে খালাসের সময় চালের গুনগত মান খারাপ হওয়ায় তা ফেরত পাঠানো হয়েছে। একই অভিযোগে আরো ২ ট্রাক চাল সদর উপজেলা খাদ্য গুদাম থেকেও ফেরত পাঠানো হয়েছে বলে দাবী করেছেন সদর খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির। এর আগেও ভাঙা ও নিম্নমানের চাল সরবরাহের অভিযোগে তা ফেরত দেয়া হয়। এর আগে অভিযান শুরুর পরের দিন গত শনিবার লিয়াকত এগ্রো ফুডের এরকম খাবার অযোগ্য প্রায় ১৫ টন চাল ফেরৎ পাঠায় খাদ্য বিভাগ। জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক তানভীর রহমান জানান, গুনগত মান যাচাই বাছাই করে চাল সংগ্রহ করা হচ্ছে মিলারদের কাছ থেকে। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রনালয়ের কঠোর নির্দেশনা রয়েছে। চলতি আমন মৌসুমে কুষ্টিয়ায় ৩৯ টাকা কেজি দরে ১১হাজার ৮শ’ মে:টন চাল কেনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। যা গত বোরো মৌসুমে থেকে ৬ হাজার মে: টন কম। সূত্র জানায়, গত মাস দুয়েক আগে কুষ্টিয়াসহ সারাদেশে হঠাৎ করেই চালের দাম কেজি প্রতি ২ থেকে সর্বোচ্চ ১৫ টাকা পর্যন্ত বেড়ে যায়। অভিযোগ রয়েছে দেশের চাল সিন্ডিকেটের অন্যতম হোতা বাংলাদেশ চালকল মালিক সমিতির সভাপতি কুষ্টিয়ার আলোচিত চাল ব্যবসায়ী আব্দুর রশিদসহ কয়েকজন প্রভাবশালী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট করে ধান সংকটের ধুয়ো তুলে দফায় দফায় চালের দাম বাড়িয়ে দেন। পরে খাদ্য মন্ত্রীর নির্দেশে প্রশাসন রশিদকে গ্রেফতারের জন্য কুষ্টিয়ার খাজানগর এলাকায় অভিযান চালায়। একই সাথে ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে রশিদের দুটি গোডাউনে বিপুল পরিমাণ চাল মজুদের প্রমাণ পান। ভ্রাম্যমান আদালত রশিদের মিলে জরিমানা আদায় করেন। এ ঘটনায় সারা দেশে তোলপাড় শুরু হয়। চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে রাখতে খাদ্যমন্ত্রী একাধিকবার চালকল মালিক, ব্যবসায়ী ও নেতৃবৃন্দের সাথে একাধিকবার বৈঠকে মিলিত হন।

Post a Comment

Previous Post Next Post