Kbdnews ঃ মেহেরপুরে আশংকাজনক হারে গো-খাদ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় ডেইরি খামারিরা সঙ্কটে পড়েছেন। কেউ কেউ লোকশানের কবলে পড়ে খামার বন্ধ করে দিয়েছেন। ফলে গো-মাংস ও গাভীর দুধ সঙ্কটের আশঙ্কা করছেন বিশ্লেকরা।
জেলা পশু সম্পাদ অফিস সূত্রে জানা যায়, জেলায় গবাদি পশুর সংখ্যা প্রায় ৪ লাখ ৩০ হাজার। এর মধ্যে উন্নতজাতের গবাদি পশু রয়েছে প্রায় লক্ষাধিথক। ছোট-বড় দুগ্ধ খামারের সংখ্যা প্রায় এক হাজার। এসব খামার থেকে তরল দুধ হোটেল, রেসত্মরাঁ ও বাসাবাড়িতে গাভীর দুধ সরবরাহ হয়ে থাকে। তবে এসব স’ানে ফ্যাট নিরূপণ না করে ৪০/৫০ টাকা দরে তা বিক্রি হচ্ছে।
বাওট মেম্বর অ্যান্ড সন্স খামারে সরেজমিন দেখা গেছে, এ ডেইরি খামারে গাভীর সংখ্যা কমে গেছে। এখন সেখানে ৪২ টি ছোট-বড় উন্নত জাতের গাভী রয়েছে। তাছাড়া গরম্ন মোটা তাজাকরণ প্রক্রিয়ায় ২৯টি গরম্ন রয়েছে। দু’মাস আগে ১২০ টি গরম্ন ছিলো এ খামারে বলে জানালেন প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী মহিবুল মেম্বর। মহিবুল মেম্বরের মতো অনেকেই খামার বন্ধ করে দিয়েছে কিংবা পশুর সংখ্যা কমিয়ে দিয়েছে। কারণ হিসেবে ফার্ম মালিকরা জানালেন, গো-খাদ্যের দামের সাথে পালস্না দিয়ে দুধ ও মাংসের দাম বাড়েনি বরং কমেছে। তাছাড়া গবাদি পশুর চিকিৎসা ও ওষুধ পাওয়া দুষ্কর। পশু হাসপাতালের কোন লোক খোঁজ খবর নেই না। স’ানীয় হাতুড়ে ডাক্তারই একমাত্র ভরসা। ভেটেনারী সার্জন কোন লোক পাঠালে তাকে ৫ শ’ টাকা ভিজিট দিতে হয়।
গো-খাদ্যের বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগে ৫০কেজি গমের বসত্মা ২৫০/৩০০ টাকা ছিল। এখন তা ৯০০ টাকা থেকে এক হাজার টাকার ওপর বিক্রি হচ্ছে। ৫০ কেজি ডালের ভুষি আগে বিক্রি হতো ২৫০/২৭৫ টাকা, এখন হচ্ছে ৭০০/৭৫০ টাকা। খৈল মণপ্রতি ৪৫০ টাকার স’লে ১ হাজার ৪০০ টাকা। ৫০ কেজির বসত্মা ধানের কুঁড়া ১১০ টাকার স’লে ৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
খামারিরা জানিয়েছেন, আগে যেখানে প্রতি লিটার গাভীর দুধ বিক্রি হতো ৫০-৬০ টাকায়। এখন হচ্ছে ৪০ টাকায়। ফলে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ায় প্রতিদিনেই তাদের লোকশানে পড়তে হচ্ছে।
খামারিরা আরো জানান, গবাদি পশু ও কর্মচারীর বেতন-ভাতা দিয়ে দুধ উৎপাদন খরচ বেশ কয়েকগুণ বেড়ে গেছে। সে হিসেবে অর্ধেক খরচও উঠছে না তাদের। জোড়পুকুরিয়া বিশ্বাস ডেইরী ফার্মের মালিক হোসেন আলী জানান, বিদেশে সরকারিভাবে গবাদি পশুর খামারগুলোতে ভর্তুকি দিয়ে থাকে। এ কারণে সেখানকার খামরগুলো দুধের চাহিদা মেটাতে পারছে। বাংলাদেশেও এমনটি থাকা প্রয়োজন। লোকশানের কারণে খামারগুলো বন্ধ হয়ে গেলে দেশে গো-মাংস ও গাভীর দুধ সঙ্কটে পড়বে বলে তিনি আশঙ্কা করছেন।