মেহেরপুরের বিভিন্ন গ্রামের মাঠে চাষ হচ্ছে চিচিংগা

Meherpur Snake-gourd Pic-=Kbdnews :মেহেরপুর জেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে চাষ হচ্ছে চিচিংগা। সবজি ও বীজ বিক্রি করে অধিক লাভবান হওয়ায় এলাকার চাষীরা চিচিংগাকে অর্থকরী ফসল হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। দিনে দিনে এলাকার মাঠে বৃদ্ধি পাচ্ছে চিচিংগা চাষ। স্বাবলম্বী হচ্ছেন এলাকার চাষীরা।
মেহেরপুর সদর উপজেলার যাদবপুর, রাজাপুর, বাড়িবাঁকা, শালিকা, উত্তর শালিকা, শোলমারী, গাংনী উপজেলার সাহারবাটি, গাড়াবাড়িয়া, ধলা ও কাথুলীসহ জেলার বিভিন্ন গ্রামের মাঠে সবজি উৎপন্ন ও বীজ তৈরির জন্য চিচিংগা চাষ করছেন। লাল তীর, মেটাল সীড়, গ্যাটকো ও বিএডিসি’র সহযোগিতায় দিনে দিনে এলাকার চাষীরা বীজ তৈরীতে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। চিচিংগার বীজ সংগ্রহের পূর্বে প্রথম দিকে এক বা দুই চালান চিচিংগা সবজি হিসেবে ড়্গেত থেকে তুলে বাজারে বিক্রি করা যায়। পরবর্তীতে গাছে ধরা চিচিংগা বীজ তৈরীর জন্য রাখা হয়। উৎপাদিত বীজ ৪শ’ টাকা কেজি দরে লাল তীরসহ বিভিন্ন কোম্পানি কিনে নিচ্ছেন। এ ছাড়া বর্তমানে প্রতিমন চিচিংগা মেহেরপুরের বাজারে পাইকারী ৮শ’ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। মেহেরপুরের উৎপাদিত

Meherpur Snake-gourd Pic-2চিচিংগা পার্শ্ববতী কুষ্টিয়া, রাজবাড়ী ও ফরিদপুরসহ দেশের কয়েকটি জেলায় রপ্তানি হচ্ছে।
মেহেরপুর সদর উপজেলার যাদবপুর গ্রামের কৃষক সামছুদ্দিন ওরফে লাবলু পার্শ্ববর্তী ঢেলা পীরের মাঠে দেড় বিঘা জমিতে চিচিংগার চাষ করেছেন। চাষী লাভলু জানান, একই মাঠে একই গ্রামের মনি আড়াই বিঘা, চাঁদ আলী দেড় বিঘা, কুদ্দুস ২বিঘা ও জাকারিয়া আড়াই বিঘা জমিতে চিচিংগার চাষ করেছেন। এছাড়া পার্শ্ববর্তী মাথাভাঙ্গা মাঠেও চিচিংগা চাষ হচ্ছে। মাত্র ৩ মাসের ফসল চিচিংগা। যারা সবজি হিসেবে বাজারে বিক্রি করেন তারা চিচিংগার চাষ করেন। তিনি আরো বলেন, প্রতিবিঘা জমি থেকে একশ’ মন পর্যনত্ম চিচিংগা তোলা যায়। এছাড়া যারা চিচিংগা বীজ তৈরি করছেন তারাও প্রাথমিক ভাবে এক-দুই চালান চিচিংগা তুলে বাজারে বিক্রি করে চাষ খরচ তুলে নিতে পারেন।
তিনি আরো জানান, প্রতিবিঘা জমিতে চিচিংগা চাষ করতে সেচ, সার, বীজ ও চাষ বাবদ ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে প্রতিবিঘা জমি থেকে উৎপাদিত চিচিংগা ৬০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা পর্যনত্ম বিক্রি করা সম্ভব। এছাড়া প্রতিবিঘা জমি হতে ৭০ কেজি থেকে ৮০ কেজি পর্যনত্ম বীজ উৎপন্ন হয়। প্রতি বিঘা জমির উৎপাদিত বীজের মূল্য প্রায় ২৮ হাজার থেকে ৩২ হাজার টাকা।
এদিকে জেলার অনেক সবজি চাষী জানালেন, মেহেরেপুরের বাজারে সবজি বিক্রি মূল্যের অর্ধেকের কম মূল্য পান চাষীরা। এড়্গেত্রে মধ্যশর্ত ভোগিরা বেশী লাভবান হন। সবজি ব্যবসায়ী আমজাদ হোসেন জানান, প্রতি কেজি চিচিংগা আড়ৎ থেকে কিনতে তাদের ২০ টাকা খরচ হয়। এছাড়া অন্যান্য খরচ বাবদ অতিরিক্ত ২ টাকা ব্যয় হয়। বর্তমানে বাজারে চিচিংগা ২৮ টাকা থেকে ৩২ টাকা পর্যনত্ম কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।
মেহেরপুর জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের হিসেব মতে গেল বছর মেহেরপুর জেলায় মাত্র ৬৪ হেক্টর জমিতে চিচিংগার চাষ হয়েছিল। এবছর মেহেরপুর সদর ও গাংনী উপজেলায় প্রায় ৮৫ হেক্টর জমিতে চিচিংগার চাষ হয়েছে। চাষীরা চিচিংগার বাজার মূল্য পেয়ে লাভবান হচ্ছেন জেনে এ জেলার কৃষি বিভাগে কর্মরত কর্মকর্তারাও বেজায় খুশি।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post