খুলনাঞ্চলের সব্জির বাজারে আগুন দিশেহারা সাধারণ মানুষ

বি এম রাকিব হাসান, খুলান ব্যুরো: দিশেহারা হয়ে পড়েছে সাধারণ মানুষ। যেমন বেড়েছে চালের দাম তার সাথে পালস্না দিয়ে বাড়ছে সব্জির দাম। বসে নেই গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিও। সব মিলিয়ে সকল পনদ্রব্যের মূল্য বৃদ্ধিতে সাধারণ মানুষ নাসত্মানাবুদ। যেন দেখার কেউ নেই। যে যার ইচ্ছ মত বৃদ্ধি করছে পন্যমূল্য। গতকাল মুলার কেজি ৫০ টাকা আর পালং শাকের কেজি পঞ্চাশ টাকা। কাঁচা মরিচের একশত গ্রামের দাম ২৫ টাকা। এমনভাবেই প্রতিটি সবজির দাম বেড়েছে।

বাজার ঘুরে ক্রেতা বিক্রেতাদের সাথে আলাপকালে জানা যায়, গ্রীষ্মকালীন সবজির সরবরাহ কমে আসায় বাজারে সব ধরনের শাক-সবজির দাম বেড়েছে। তবে নভেম্বরের শুরুতে বাড়বে শীতকালীন সবজির সরবরাহ। ওই সময় দাম কমে আসবে বলে জানিয়েছেন সংশিস্নষ্টরা। ইতোমধ্যে মুলা, পালং শাক , ফুলকপি, বাঁধাকপি ও শিমের মতো শীতকালীন সবজি বাজারে আসতে শুরম্ন করেছে। তবে দাম চড়া। গড়ে ৬০ টাকার নিচে কোন সবজি নেই বাজারে। মরিচের দাম সামান্য কমেছে। এছাড়া এ বছর অতিবৃষ্টি ও বন্যার কারণে ফসলি জমি নষ্ট হয়ে যাওয়ার প্রভাব পড়েছে বাজারে। প্রতিবছর শীত মৌসুম সামনে রেখে এ সময়টাতে সব ধরণের সবজির দাম বেড়ে যায়।
নগরীর ময়লাপোতা ও গলস্নামারীর সন্ধ্যা বাজারে ভাল মানের বেগুন, বরবটি, ঢ্যাঁড়স, ঝিঙে, চিচিঙ্গা, করলা, শসা প্রভৃতি প্রতিকেজির দাম ৬০ থেকে ৭০ টাকা। একটি লাউ বিক্রি হচ্ছে ৫০-৬০ টাকায়। একটি জালি কুমড়া কিনতে খরচ হচ্ছে ৪০ টাকা। কম দামি সবজির মধ্যে আছে কাঁচা পেঁপে, প্রতিকেজি ২০-২৫ টাকা। কাঁচা মরিচের দাম সামান্য কমেছে। ১০০ গ্রাম ২০ টাকা ও ২৫০ গ্রাম ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এক কেজি কিনলে দাম পড়ছে মানভেদে ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ২৫০ টাকায় উঠেছিল।
গতকাল ময়লাপোতার সন্ধ্যা বাজার, মিস্ত্রীপাড়া বাজার, বৈকালী বাজার, নিউ মার্কেট এবং বয়রা বাজার ঘুরে দেখা যায়, বাজারে আলুর মূল্য সর্বনিম্ম, প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২০টাকায়। অপরদিকে উচ্ছে ৬০টাকা, পটল ৪০টাকা, সীম ১৪০টাকা, কুসি ৫০টাকা, ধুন্দল ৪০টাকা, পেঁপে ৩০টাকা, খিরাই ৪০টাকা, টমেটো ১০০টাকা, মানকচু ৪০টাকা, বেগুন ৬০টাকা, বরবটি ৫০টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৪০টাকা, ঢ্যাড়স ৫০টাকা, মেটে আলু ৬০টাকা, ঝিঙে ৪০টাকা, জলপাই ৬০টাকা, কাঁচা মরিচ ১৬০টাকা, ওল ৫০টাকা, চাল কুমড়া ৩০ থেকে ৩৫টাকা, মুলা ৫০ থেকে ৬০টাকা, কচুর মুখি ৩০টাকা, আমড়া ৫০টাকা, লাউশাক ৪০টাকা, পুইশাক ৩০টাকা, কাকরোল ৬০টাকা, লালশাক ৪০টাকা, বাঁধাকপি ৬০টাকা, গাজর ১৫০টাকা, পালং শাক ৫০টাকা, ধনে পাতা ২৫০ থেকে ৩০০টাকা, চুইঝাল ৪০০ থেকে ৮০০টাকা, লাউ প্রকার ভেদে প্রতিটি ৩৫ থেকে ৫০টাকা, শুকনো মরিচ ২২০ থেকে ২৪০টাকা, দেশি পেয়াজ ৫৫টাকা, আমদানীকৃত পেয়াজ ৫০টাকা, দেশি রসুন ৭০ থেকে ৯০টাকা, আমদানীকৃত রসুন ৯০ থেকে ১১০টাকা, আদা প্রকার ভেদে ১৩০ থেকে ১৪০টাকা, মশুর ডাল (চিকন) ১১৫ থেকে ১২০টাকা, মশুর ডাল (মোটা) ৮০টাকা, ছোলার ডাল ৮৫টাকা, মুগ ডাল (চিকন) ১৪০টাকা, মুগ ডাল (মোটা) ১২৫ থেকে ১৩০টাকা, খেশারির ডাল ৮০টাকা, জিরা ৩৮০ থেকে ৪০০টাকা, বোতলজাত সয়াবিন তৈল লিটার প্রতি ১০৫টাকা, খোলা সয়াবিন কেজি প্রতি ৯০ থেকে ৯৪টাকা, কিসমিস ৩০০ থেকে ৩৫০টাকা, লবণ প্রতি প্যাকেট ৩৮টাকা, চিনি ৬৫টাকা, ছোলা ৮০টাকা, প্যাকেট ময়দা ৪৪টাকা, প্যাকেট আটা ৩৩টাকা, খোলা আটা ২৮টাকা, ব্রয়লার মুরগি ১২০টাকা, দেশি মুরগি ৩৫০টাকা, গরম্নর গোশত ৫০০টাকা, খাসি ৭০০টাকা এবং ডিম প্রতি হালি ২৮ থেকে ৩২টাকা।
এদিকে, সবজির সঙ্গে চলতি সপ্তায় কেজিতে ১০-১২ টাকা বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। দেশী ও আমদানিকৃত সব ধরনের পেঁয়াজের দাম এখন বেশি। খুচরা বাজারে প্রতিকেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়। এক সপ্তাহ পূর্বে এই পেঁয়াজ ৩৫-৪০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে ব্রয়লার মুরগির বিক্রি হচ্ছে ১২৫-১৩৫ টাকায়। এছাড়া আদার দাম বেড়ে প্রতিকেজি ২০০-২৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ৮০-১০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি রসুন। এছাড়া চাল, ডাল, আটা, ভোজ্যতেল, চিনি এবং অন্যান্য পণ্যের দাম সি’তিশীল রয়েছে।
কেসিসির বাজার মনিটরিং কমিটির দাম নিয়ন্ত্রণে রাখার কোন পদড়্গেপ নেই এমনটাই অভিযোগ ভোক্তাদের। যদিও সিটি মেয়র মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান বলেছেন, খুচরা বিক্রেতারা যাতে সিন্ডিকেট করে পণ্যের দাম বাড়াতে না পারে সেজন্য সার্বক্ষণিক বাজার মনিটরিং করা হচ্ছে।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post