গাইবান্ধা থেকে মো. শাহাদৎ হোসেন খোকন : ভরা তিস্তা নদী এখন মরায় পরিণত হয়েছে। তিস্তার বুক জুড়ে ধু-ধু বালু চর এখন সবুজের সমারোহে ভরে উঠেছে। নানাবিধ ফসলের চাষাবাদে ব্যস্ত এখন চরাঞ্চরের কৃষকরা। স্বাধীনতার পর থেকে আজ পর্যন্ত সুন্দরগঞ্জ উপজেলা ৬টি ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত রাক্ষুসি খরস্রোতা তিস্তা নদীতে পলি জমে এখন আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। এই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে চরাঞ্চলের কৃষকরা সবুজে সবুজে ভরে তুলেছে তিস্তার চরাঞ্চল। চরাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে ফিরে দেখা গেছে নানাবিধ ফসলের চাষাবাদ। বিশেষ করে গম, ভুট্টা, আলু, বেগুন, পিঁয়াজ, তিল, তিসি, ডাল, মরিচ, তামাক, তোষাপাট, বাদাম, কাউনসহ ইরো-বোরো চাষাবাদ হচ্ছে ব্যাপক হারে। চলতি মৌসুমে উপজেলায় ১ হাজার ২০০ হেক্টর জমিতে ভুট্টা চাষাবাদ হয়েছে। ভুট্টার ফলনও হয়েছে আশানুরূপ। চাষাবাদের সিংহভাগ ভুট্টাই তিস্তার চলাঞ্চলে চাষ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ফলন ঘরে তুলতে শুরু করেছে চাষিরা। উপজেলার চর চরিতাবাড়ি, কানি চরিতাবাড়ি, রিয়াজ মিয়ার চর, চর মাদারীপাড়া, কালাই সোতার চর, বাদামের চর, ফকিরের চর, কেরানীর চর, চর বিরহিম, বেকরীর চর, চর খোর্দ্দাসহ বিভিন্ন চরাঞ্চলে ব্যাপক হারে ভুট্টার চাষাবাদ হয়েছে।
কথা হয় চর চরিতাবাড়ি গ্রামের ভুট্টা চাষি আব্দুর রউফ মিয়ার সাথে। তিনি জানান, অল্প খরচে অধিক মুনাফা লাভের আশায় আমি ৩ বিঘা জমিতে ভুট্টা চাষ করেছি। আশা করছি ফলন ঘরে তুলতে পারলে ৫০ হাজার টাকা মুনাফা অর্জন করতে পারব। তিনি আরও জানান, ভুট্টা চাষাবাদ থেকে শুরু করে ফলন ঘরে তোলা পর্যন্ত ১ বিঘা জমিতে খরচ হয় ৫ হাজার টাকা। ফলন যদি ভালো হয় তাহলে ১ বিঘা জমির ভুট্টা বিক্রি করে আয় হবে ১৫ হতে ২০ হাজার টাকা। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ রাশেদুল ইসলাম জানান, দিন দিন ভুট্টা চাষাবাদের পরিমাণ বেড়েই চলছে। বিশেষ করে চরাঞ্চলের কৃষকরা ভু্ট্টাসহ অন্যান্য ফসল চাষাবাদে ঝুঁকে পড়েছে। গত বছরের তুলনায় চলতি মৌসুমে প্রায় ৩০০ হেক্টর বেশি জমিতে ভুট্টা চাষ হয়েছে।