সচিবের মরণোত্তর লেনদেন - ছৈয়দ আন্ওয়ার

 

গণতন্ত্র

অদ্ভুত বটে। মৃত এক সচিবের নামে টানা চার বছর ঋণ দিয়েছে রাষ্ট্রায়ত্ত বাংলাদেশ কৃষি ব্যাংক (বিকেবি)। তাও আবার রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রের কারওয়ান বাজার করপোরেট শাখা। বলাবাহুল্য, দুর্নীতির বলিহারি। নজিরবিহীন বলতে হালকা দ্বিমত এই জন্য যে, আমরা এর আগে শুনেছি, মৃত ব্যক্তি আমাদের দেশে ভোটও দেয়। বিগত রকিব কমিশনের কল্যাণে একটি ভোট বৃদ্ধি পাওয়ায় কেউ যদি খুশি হয়ে থাকেন, সেটা ভিন্ন কথা। কারণ, মৃত ভোটারের পেছনে অর্থ গচ্ছা যাওয়া বা জনসাধারণের অর্থ আত্মসাতের প্রশ্নটি দেখা দেয়নি। কিন্তু এই রাষ্ট্রায়ত্ত
ব্যাংকটি যে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত দেখিয়ে বাংলাদেশ প্ল্যান্টেশন লিমিটেড (বিডি প্ল্যান্ট) নামের একটি কোম্পানিকে প্রায় ১০ কোটি টাকা ঋণ দিয়েছে, তা অনাদায়ে গচ্ছা যাবে রাষ্ট্র তথা জনগণের টাকা। এদিকে ব্যাংকটির ভারপ্রাপ্ত এক কর্মকর্তা বলেছেন, বিডি প্ল্যান্টের অনেক সম্পত্তি আছে। নিরাপদ মনে করেই ঋণ দেয়া হয়েছে। টাকা আদায়ে সেগুলো নিলামে বিক্রি করে দেব। কর্মকর্তার এমন আশ্বাস বাণীতে অনেকের মনেই প্রশ্ন জন্মেছে_ তিনিই আসল মোড়ল কি-না? আর চার বছর যাবৎ মৃত সচিবের স্বাক্ষর সংগ্রহের ব্যাপারে কোনো সদুত্তর মেলেনি। একসময়কার সরকারের পুর্তসচিব ২০১১ সালে মারা গেলেও ২০১৫ সাল পর্যন্ত বিভিন্ন সময় টাকা উত্তোলনে তার স্বাক্ষর রয়েছে ঠিকমতোই। এমন সব আশ্চর্যজনক ঘটনাবহুল দেশে আমাদের বসবাস। বিচারহীনতার অপসংস্কৃতিই
আজব আজব ঘটনার সাহস যোগাচ্ছে বলে সমাজ বিশ্লেষকদের মত।
পুনশ্চ ঃ আমরা চাই না, অসম্ভবের
দেশের তালিকায় বাংলাদেশের নাম উঠুক। মৃত ব্যক্তির ভোট গ্রহণ আর মৃত সচিবের নামে ঋণ দেয়ার মতো মিথ্যার পুনরাবৃত্তি না ঘটুক_ এমনটাই সবার প্রত্যাশা।

Post a Comment

Previous Post Next Post