নেত্রকোনা প্রতিনিধি :নেত্রকোনার সদর উপজেলার ঠাকুরাকোনা-ফকিরের বাজার এলজিইডি কর্তৃক
নির্মিত পর্যন্ত সাত কিলোমিটার সড়কটি সংস্কার করার এক বছরের মধ্যে বিনষ্ট হয়ে
গেছে। বর্তমানে সড়কের ঠাকুরাকোনা থেকে তাতিয়র কংস নদের ওপর
সেতুসংলগ্ন এলাকা পর্যন্ত চার কিলোমিটার অংশে কার্পেটিং, পিচ ও পাথর উঠে গিয়ে
১ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটি নির্মাণ করা হয়েছিল।স্থানীয়
লোকজন জানান, গত বছর এই সড়কের পাশ দিয়ে প্রবাহিত কংস নদ খনন করা হয়। এ সময় তাতিয়র
এলাকায় নদী খননের বালি সড়কের ওপর স্তূপ করে রাখা বালু। সমপ্রতি ট্রাক ও লড়িতে করে
এই বালু জেলা শহরসহ বিভিন্ন স্থানে পরিবহন করা হচ্ছে। এ কারণে গ্রামীণ সড়কটির
বিভিন্ন স্থানে ভেঙে গেছে। এতে করে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে সাধারণ মানুষকে।
স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি)
নেত্রকোনা কার্যালয় সূত্র জানা গেছে, গত ২০১৯-২০ অর্থ বছরে ঠিকাদারি
প্রতিষ্ঠান মের্সাস ভূঁইয়া এন্টার প্রাইজ কাজটি বাস্তবায়ন করে এবং গত ২০২১ সালের
ডিসেম্বরে এলজিইিডির নিকট হস্তান্তর করে। গুরুত্বপূর্ণ এই সড়কটি দিয়ে প্রতিদিন
মিনি বাস, টেক্সি, মাইক্রোবাস সিএনজি, ইজিবাইক, রিকশা, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ছোট ও
মাঝারি যানে করে শতশত মানুষ যাতায়াত করেন। বিভিন্ন স্কুল-কলেজসহ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে
যাতায়াত করে আরো সহস্রাধিক শিক্ষার্থী। কিন্তু সম্প্রতি সড়কের পাশে তাতিয়র সরকারি
প্রাথমিক বিদ্যালয় এলাকায় স্তূপ করে রাখা কংস নদের বালু ট্রাক ও লরিতে করে
পরিবহনের কারণে সড়কের স্থানে স্থানে ভেঙে গেছে।
সরেজমিনে এলাকা পরিদর্শনে দেখা গেছে,
ঠাকুরাকোনা থেকে তাতিয়র সেতু পর্যন্ত অন্তত চার কিলোমিটার এলাকায় স্থানে ভেঙে
গেছে। এরমধ্যে খালপাড়, সংসদ বাজার ও সিংড়াজান এলাকায় স্থানে স্থানে সড়কটি দেবে
গেছে। খালপাড় এলাকায় বালুভর্তি একটি ট্রাক দেবে আকটা পড়ে আছে। বেশ কয়েক জন শ্রমিক
সড়কের মাটি খুঁড়ে ট্রাকটি সরানোর চেষ্টা করছেন।ঐ এলাকার বাসিন্দা আব্দুল
করিম বলেন, সড়কটি গত এক বছর আগে নতুন করে করা হয়েছে। গত দেড় মাস ধরে রাত-দিন ট্রাক
ও লরিতে করে বালু বহনের ফলে সড়কের তিন মিলোমিটার অংশ বিধ্বস্ত হয়ে গেছে। আমরা
ট্রাক চালকদের বাধা দিলে তারা তা না মেনে উলটো হুমকি দেন।
একই এলাকার ইজিবাইকচালক কবির মিয়া বলেন, ‘আগে
ঠাকুরাকোনা থেকে তাতিয়র সেতু পর্যন্ত চার কিলোমিটার পথ ৮ থেকে ১০ মিনিটে যাওয়া
যেত। এখন এই পথ যেতে আধাঘণ্টার মতো সময় লাগে।
ঠাকুরাকোনা ইউনিয়ন পরিষদের ৫ নম্বর ওয়ার্ডের
সদস্য নজরুল ইসলাম বলেন, তাতিয়র থেকে নেত্রকোনা বাইপাস সড়কে ট্রাক দিয়ে বালু
নেওয়ার এমন দশা হয়েছে। তাদের বাধা দিলে উলটো মামলা-হামলার ভয় দেখান
বালু ব্যবসায়ীরা। বিষয়টি চেয়ারম্যানের মাধ্যমে কর্তৃপক্ষকে জানালেও কোনো ব্যবস্থা
নেওয়া হয়নি।
ইউপি
চেয়ারম্যান আবদুর রাজ্জাক বলেন, বালুর ট্রাকের কারণে নতুন সড়কটি মাত্র এক মাসেই
ভেঙে গেছে। ট্রাক ও লরি চালকরা কোনো কথা শুনছেন না। এ ব্যাপারে এলজিইডির
নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবদুর রহিম শেখ বলেন, এই সড়ক দিয়ে ভারী যানবাহন চলাচল
করা নিষেধ। সড়কটি বৃহস্পতিবার পরিদর্শন করেছি। বালু ব্যবসায়ীসহ ট্রাকচালকদের
বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারসহ জেলা প্রশাসনকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। নতুন করে
সড়কটি সংস্কারের ও ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন।