নিপাহ ভাইরাসে মৃত্যুর হার ৭১ শতাংশ

 


 আইইডিসিআরের তথ্যমতে, দেশে ২০০১ সালে মেহেরপুরে প্রথম নিপাহ ভাইরাস শনাক্ত হয়। এরপর ২০০৩ সালে হয় নওগাঁয়। তবে এর সবচেয়ে বড় প্রাদুর্ভাব হয় ২০০৪ সালে ফরিদপুর জেলায়। সেখানে ৩৫ জন আক্রান্ত হয়ে মারা যায় ২৭ জন।গতকাল বুধবার বিকালে মহাখালীর আইইডিসিআর অডিটরিয়ামে ‘শীতকালীন সংক্রামক রোগ ও নিপা ভাইরাস সংক্রমণ’বিষয়ক সেমিনারে এ তথ্য জানানো হয়। আইইডিসিআর এই সেমিনারের আয়োজন করে।

সেমিনারে আইইডিসিআরের পরিচালক অধ্যাপক তাহমিনা শিরিন বলেন, ২০০১ সালে প্রথম নিপা ভাইরাস দেশে শনাক্ত হয়। এরপর থেকে এ পর্যন্ত আক্রান্তদের মধ্যে গড় মৃত্যু ৭১ শতাংশ। বছরের জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত এই রোগের সংক্রমণ দেখা দেয়। যখন খেজুরের রস সংগ্রহ শুরু হয়, তখন থেকে নিপাহ ভাইরাসের সংক্রমন দেখা দেয়। চলতি বছর এক জন এ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন। তবে ২০২২ সালে এই রোগে তিন জন আক্রান্ত হয়। এর মধ্যে দুই জনের মৃত্যু হয়। তাহমিনা আরো বলেন, নিপা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীর প্রথমত জ্বর আসে, এরপর জ্ঞান হারিয়ে ফেলা এবং আক্রান্ত ব্যক্তির মাথাব্যথাসহ বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। এছাড়া আক্রান্ত রোগীর সংস্পর্শে এসেও মানুষ সংক্রমিত হতে পারে, সে কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে এলে হাত সাবান দিয়ে ভালো করে ধুতে হবে বলে জানান তিনি। অধ্যাপক তাহমিনা খেজুরের রস ফুটিয়ে খাওয়ার পরামর্শ দেন এবং গাছ থেকে পড়া অর্ধখাওয়া ফল খেতে নিষেধ করেন।

 নিপা ভাইরাসের ওপর প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন আইইডিসিআরের সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ডা. শারমিন সুলতানা। তিনি বলেন, নিপা ভাইরাস একটি নতুন ভাইরাস, যা বাদুড় থেকে মানুষের মধ্যে সংক্রমিত হয়। ১৯৯৯ সালে প্রথম দেখা দেয় মালয়েশিয়ায়। এই রোগে মৃত্যুর হার অনেক বেশি। বাংলাদেশে নিপাহ ভাইরাসের টেস্ট প্রতি বছর হচ্ছে। নিপাহ ভাইরাসের কেইস কম হলেও এর মৃত্যুহার অনেক বেশি। কোভিডে মৃত্যুহার ১ দশমিক ২৩ হলেও নিপা ভাইরাসে মৃত্যুহার গড়ে ৭১ শতাংশ। কোভিডের মতো নিপাহও সংস্পর্শে ছড়ায়, তাই সাবধনতা অবলম্বন জরুরি।

আইইডিসিআরের সহযোগী অধ্যাপক ডা. মনঞ্জুর হোসাইন খান বলেন, ‘আমাদের দেশে শীত খুব কম সময় থাকে। নভেম্বর থেকে মার্চ পর্যন্ত সময়ে শীতকালীন কিছু রোগের প্রাদুর্ভাব বেড়ে যায়। এর মধ্যে নিপাহ ভাইরাস, নিউমোনিয়া, অ্যাজমা, রোটা ভাইরাস, ডায়রিয়া—এসব রোগ বিভিন্ন ধরনের ভাইরাসের আক্রমণে হয়ে থাকে।     

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন প্রিন্সিপাল সায়েন্টিফিক অফিসার ডা. আহমেদ নাওশের আলম, আইইডিসিআরের সাবেক সিনিয়র বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন।

 

 


Post a Comment

Previous Post Next Post