ছবি ঃ আমিরুল ইসলাম অল্ডাম
মেহেরপুরে বারোমাসি থাই কাটিমন জাতের আমচাষ করে কৃষক বুলুবুল এখন উদাহরণ
আমিরুল ইসলাম অল্ডাম, মেহেরপুর জেলা প্রতিনিধি ঃ মেহেরপুরে এবার বারোমাসি কাটিমন হাইব্রিড জাতের আম চাষে সাড়া ফেলেছে বুলবুল। বুলবুলের বাগান দেখতে প্রতিদিনই সাংবাদিকরা তথ্য নিতে বাগানে ছুটে আসছে।
মেহেরপুর জেলায় হিমসাগর আমের খ্যাতি রয়েছে দেশসহ ইউরোপের বাজারে। বোম্বাই, হিমসাগর, ল্যাংড়া,জেমিতে সুমিষ্ট ও স্বাদে ভরপুর কাটিমন জাতের আম চাষে ব্যাপক সাফল্য অর্জন করেছেন মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের আমচাষী মঈন-উল-আলম ওরফে বুলবুল।
আমঝুপি বিএডিসি বীজ উৎপাদন খামারের পাশেই বুলবুলের আম বাগান। যেখানে ২৪০টি আম গাছের ডালে ডালে ঝুলছে থোকা থোকা আম। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারে বেড়েছে আমের ফলন। ফলে প্রতি বছরই বাড়ছে আমের বাগান। গেল কয়েক বছর জেলার হিমসাগর আম দেশ ছাড়িয়ে ইউরোপের বাজারে রপ্তানি হয়েছে। স্থানীরা মনে করেন আগামী বছরে বারোমাসি থাই কাটিমন জাতের আম জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় রপ্তানি করা হবে।
আমচাষী বুলবুল জানান, পরীক্ষামূলক ভাবে ১ একর জমিতে ২৪০টি থাই কাটিমনের চারা রোপণ করেছিলাম ২০২১ সালের শুরুতে। গাছগুলোর বর্তমান বয়স মাত্র দেড় বছর। এ বছরে গাছ থেকে ৩ বার আম বিক্রি করা হয়েছে।
তিনি আরও বলেন এই বাগান নির্মাণ করতে ১লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে। প্রথমে পাশর্^বর্তী চুয়াডাঙ্গার জেলার দর্শনা থেকে থাই কাটিমন জাতের চারা পিচ প্রতি ২৫০টাকা দরে সংগ্রহ করে রোপণ করি। বর্তমানে আমার বাগান থেকে চারা বিক্রি করে থাকি। আমের ফলন ভালো হওয়ায় বাগানের পরিধি আরো বাড়ানোর চিন্তা-ভাবনা রয়েছে।
আম চাষি বুলবুল আরো জানান, প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে সকল খরচ বাদ দিয়ে এ বাগান থেকে কমপক্ষে আড়াই লক্ষ টাকা আয় করা সম্ভব। তাছাড়া মেহেরপুর খরা প্রবণ এলাকা। মানুষের বেঁচে থাকার তাগিদে অক্সিজেন ছাড়া সম্ভব নয়। একারণে গাছের বিকল্প নেই। গাছ অক্সিজেনের চাহিদা পূরণ করে এবং অর্থনৈতিক চাকাকে সচল রাখতে সহায়তা করে।
তবে জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধির কারণে গেল কয়েকদিনে বেড়েছে কীটনাশকসহ কৃষি উপকরণের দাম। এ বছর বৃষ্টি না হওয়ার কারণে জমিতে আমের পরিচর্যা করা হচ্ছে। খরা প্রবণের কারণে আমের পরিচর্যায় অনেক বেগ পেতে হচ্ছে। ২০ দিন পর পর জমিতে সেচ দিতে হয়। ফলে এখন বাগানে থোকায় থোকায় আম ঝুলছে। সঠিক সময়ে বাজারজাত করতে না পারলে বড় ধরণের ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান,ইউটিউবে দেখে উদ্বুদ্ধ হয়ে পরীক্ষামূলক ভাবে এক একর জমিতে কাটিমন জাতের হাইব্রিড থাই বারোমাসি আম চাষে সাফল্য পেয়েছেন মেহেরপুর সদর উপজেলার আমঝুপি গ্রামের চাষী মঈন উল-আলম বুলবুল। তার সাফল্য দেখে নতুন করে এবছর জেলায় আরও ৩ জন কৃষক থাই আম চাষ শুরু করেছেন। কৃষি অফিসের পক্ষ থেকে গাছ পরির্চার জন্য চাষীদের বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। গত মৌসুমে মেহেরপুর জেলায় ২ হাজার ৩৪৫ হেক্টর জমিতে আম চাষ করা হয়েছে। যা থেকে ২৬ হাজার ছয়শত ৯৫ মেট্রিক টন আম উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল।