মেহেরপুরের গাংনীতে দর্শনীয় মোটাতাজা গরু‘রবিন হুড’ সবার নজর কেড়েছে

 


 আমিরুল ইসলাম অল্ডাম  : মেহেরপুরের গাংনীতে দর্শনধারী মোটাতাজা গরু ‘রবিন হুড ’(রুপক অর্থে)  সবার নজর কেড়েছে। আসন্ন কোরবানীকে সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণ  প্রকল্পে অনেকেই কোরবানীর গরু বাজারজাত করতে পশুপালন  করেছেন। এমন লক্ষ্যকে সামনে রেখে গাংনী পৌরসভার ২ ওয়ার্ড নিবাসী আক্তারুজ্জামান একটি বিশালাকৃতির গরু পালন করে  গাংনী তথা বাংলাদেশে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। তিনি একজন ক্ষুদ্র খামারী। স্বেচ্ছায় গড়ে তুলেছেন দেশী গরুর খামার। সরকারী অনুদান বা পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই বাড়ীর আঙ্গিনায় ছ্ােট্ট পরিসরে গড়ে তুলেছেন দেশী গরুর খামার। সখের বশেই তিনি ১৯৯৪ সাল থেকে গরু পালন করে আসছেন। বলা চলে গরু পালন তার একটি নেশা। বর্তমানে তার ছোট বড় ৮ টি গরু রয়েছে। গরু পালনকারী আক্তারুজ্জামান শিশিরপাড়া গ্রামের আব্দুল হান্নানের বড় ছেলে। একটি বড় এবং যৌথ পরিবারে আক্তারুজ্জামান বেড়ে উঠেছে। ছোট ভাই বোনদের লালন পালন পাশাপাশি বাবাকে সহযোগিতা সব মিলে কষ্ট করে সংসার গোছাতে হয়েছে। বাবার তেমন জমি জায়গা বা অস্থাবর না থাকাই কষ্ট করে জীবন জীবিকা করতে হয়েছে। 

 ছোট বেলা থেকেই আক্তারুজ্জামানের স্বপ্ন তিনি গরু  পালন করে ৩ কন্যা সন্তানকে উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত করবেন।স্বপ্ন পূরণে তিনি সফলও হয়েছেন। গরু পালন করে সেই গরু বিক্রি করে তিনি বড় মেয়েকে অনার্স মাষ্টার্স, মেঝো মেয়ে ইন্টারমিডিয়েট ফাইনাল ইয়ার এবং ছোট মেয়ে ৯ম শ্রেণির ছাত্রীর বাবা হিসেবে গর্বিত পিতা হয়েছেন। গরু লালন পালনে মেয়েদের অবদানও কম নয়।বড় গরুটিকে একনজর দেখতে প্রতিদিন অনেক সংখ্যক মানুষ বাড়ীতে  ভীড় জমায়। 

গরু মোটাতাজাকরণে আপনার শেষ ইচ্ছা কি এমন প্রশ্নের উত্তরে আক্তারুজ্জামান বলেন, আমি দীর্ঘদিন যাবত দেশী গরু লালন পালন করে আসছি। সরকারী কোন পৃষ্ঠপোষকতা ছাড়াই আমি ও স্ত্রী-কন্যা সকলেই নিরলস পরিশ্রম করে গরু পালন করে আসছি। আমি কৌতুহলবশতঃ গরুটির নাম রেখেছি রবিন হুড। ‘রবিন হুড’ নামক গরুটি আমার বাড়ীর গাভী থেকে আমি পেয়েছি। ৩ বছরকাল আমি অতি যতেœ গরুটি পালন করে এবারে কোরবানীর বাজারজাত করতে  প্রস্তুত করেছি। আধুনিক প্রযুক্তি বা উন্নত খাবার ছাড়াই শুধুমাত্র খড় বিচালী খাদ্য হিসাবে  ব্যবহার করেছি। লাল রংয়ের সুদর্শন  এই গরুটি আমি সর্বসাকেুল্যে ১০ লক্ষ টাকা মূল্য চেয়েছি। গরুটির আনুমানিক ওজন ধরা হয়েছে ৩০ মন। ইতোমধ্যেই স্থানীয় ও আশে পাশের গরু ব্যবসায়ীরা সাড়ে ৬ লাখ টাকা দাম বলেছে। আমি ন্যায্য মূল্য হিসাবে ১০ লাখ টাকা হলে বিক্রি করতে চাই। 

এলাকাবাসীর ধারণা  গাংনীতে এবছর রবিন হুড ই সবচেয়ে বড় গরু। এই গরু বাজারজাত করা হবে।  এ্রলাকার গরু ব্যবসায়ী বা দেশের যে কোন স্থান থেকে লাল বর্ণের মোটাতাজা সুঠাম দেহের অধিকারী গরুটি ক্রয় করতে চাইলে গরু মালিক আক্তারুজ্জামানের সাথে যোগাযোগ করতে পারেন।  যোগাযোগের  জন্য মোবাইল ফোন নং ০১৯৪৬-৮৪৪০৯৬। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গরুটির ছবি প্রকাশ করা হয়েছে। 

এব্যপারে গাংনী উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা জানান, গাংনী উপজেলায় এবছর কোরবানীর জন্য অনেক খামারীরা ও ব্যক্তি উদ্যোগে গরু পালন করেছে।  স্থানীয় ভাবেই এবছর কোরবানীর চাহিদা পূরণ হবে। গরু পালনকারী আক্তারুজ্জামানের গরুটি আমাদের প্রদর্শনী মেলায়  পুরস্কার লাভ করেছে।  

 

 

 আমিরুল ইসলাম অল্ডাম


Post a Comment

Previous Post Next Post