(ফলোআপ) গাংনীতে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রীর শ্লীলতাহানির ঘটনায় থানায় ও শিক্ষা অফিসে লিখিত অভিযোগ


আমিরুল ইসলাম অল্ডাম  ঃ গাংনী সহড়াতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকের বিরুদ্ধে স্কুল ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। উপজেলার তেঁতুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের সীমান্তবর্তী  গ্রাম সহড়াতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক আবু আফফানের বিরুদ্ধে ছাত্রীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়া ও শ্লীলতাহানির অপচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। 

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, উপজেলার সহড়াতলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণির ছাত্রী (ছদ্মনাম-নদী)কে স্কুলে ক্লাস চলাকালীন সময়ে দুপুরের দিকে শিক্ষক ক-ুনজর ও কুপ্রস্তাব দেয় এবং অশালীন আচরন করে ছাত্রীর স্পর্শকাতর স্থানে হাত দেয়ার অভিযোগ এলাকায় ছড়িয়ে পড়েছে। প্রথমতঃ শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার বিষয়টি তার বান্ধবীদের অবহিত করে। এনিয়ে স্কুলের শিক্ষকের অপকর্মের ঘটনা ছড়িয়ে পড়লে গ্রামবাসী  ক্ষোভে ফুঁসে  উঠেছে। লম্পট শিক্ষকের উপযুক্ত বিচারের দাবীতে স্কুলে আটকিয়ে রাখে। পরে  গ্রামের প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের সুষ্ঠু বিচারের  আশ্বাসে শিক্ষক আবু আফফানকে ছেড়ে দেয়া হয়।এ ঘটনার পর থেকে শিক্ষক পলাতক রয়েছে। 

লম্পট শিক্ষক সহড়াতলা গ্রামের প্রাক্তণ শিক্ষক আব্দুস সামাদের ছেলে।  পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, স্কুলের পাশেই শিক্ষকের বাড়ি। শিক্ষক আফফান ১ সন্তানের জনক। তার ২য় স্ত্রী মেহেরপুর হাসপাতালের একজন সেবিকা।১ম স্ত্রী এসব অনৈতিক কাজের কারনে ছেড়ে চলে গেছে। 

গ্রামে সমাজপতিদের কাছে ন্যায্য বিচার না পেয়ে ভুক্তভোগীর বাবা জাকিরুল ইসলাম গাংনী থানায় ,উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও উপজেলা  শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

অভিযোগ পাওয়ার পর  রবিবার (২৬/০৬/২২) শিক্ষা অফিসের সহকারী শিক্ষা অফিসার ফয়সাল বিন হাসান সরেজমিনে প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেছেন।  

 ভুক্তভোগী ছাত্রীর মা ফরিদা খাতুন জানান,গত শনিবার দুপুরে আমার মেয়ে প্রতিদিনের ন্যায় দুপুরে টিফিনে বললো মা শিক্ষক আমার শরীরের স্পর্শকাতর জায়গায় হাত দিয়ে লাঞ্ছিত করেছে। আমি আর ঐ স্কুলে পড়তে যাব না। মেয়ের অভিযোগ নিয়ে আমি স্কুলে গেলে অভিযুক্ত শিক্ষককে গ্রামবাসী অবরুদ্ধ করে রাখে । পরে গ্রাম্য মাতব্বররা  সালিশের আশ্বাস দিয়ে লম্পট শিক্ষককে ছাড়িয়ে নিয়ে যায়।

এব্যাপারে উক্ত বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মঞ্জুয়ারা খাতুনের  সাথে আলাপকালে তিনি জানান, আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকার কারনে স্কুলে যেতে পারিনি। বিষয়টি আমি শুনেছি। 

শিক্ষকের লাম্পট্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ ও উপযুক্ত বিচার চেয়ে সহড়াতলা গ্রামের স্কুল পাড়ার ছাত্রীর মা ফরিদা খাতুন জানান,আমরা গরীব বলে আমাদের কি উজ্জত সম্মান নেই। আমার মেয়েকে লাঞ্ছিত করেছে আমি ঐ লম্পট শিক্ষকের বিচার চাই। এই অন্যায়ের সাথে আমরা কখনও আপোষ করবো না।  মেয়ের ফুফু লিপিয়ারা খাতুন ও মেয়ের দাদা শুকুর আলী জানান, আমরা যদি এর উপযুক্ত বিচার চাই। তা না হলে আমাদের মেয়েদের স্কুলে পাঠাবো কি ভাবে ? 

গ্রামের মেম্বর লাটু জানান, আমি গ্রামে ছিলাম না। পদ্মা সেতুর উদ্বোধন অনুষ্ঠান থেকে ফেরার  পথে  মোবাইল ফোন মাধ্যমে জেনেছি।  বিষয়টি খুব খারাপ। শিক্ষক সমাজের বদনাম। ব্যবস্থা নিতে উভয় পক্ষকে নিয়ে সমাধানের চেষ্টা করা হবে। 

এনিয়ে অভিযুক্ত আবু আফফানের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি আত্মগোপনে রয়েছেন। তার বাবা  আব্দুস সামাদ মাষ্টার অন্য মাধ্যমে জানিয়েছেন, আমার ছেলে নির্দোষ ,একটি কুচক্রীমহল আমাদের সমাজে হেয় করতে এরকম অপবাদ ছড়াচ্ছে। পরিবারের লোকজন তার অবস্থান সম্পর্কে জানেন না বলে জানিয়েছেন।

এব্যপারে গাংনী থানার ওসি আব্দুর রাজ্জাক জানান, আমি সহড়াতলা গ্রামের ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবার লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা  নেয়া হবে।                     





Post a Comment

Previous Post Next Post