স্টাফরিপোটার ঃ মেহেরপুরের গাংনীতে অন্য বছরগুলোর তুলনায় এবার আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় গমের বাম্পার ফলনের আশাবাদ করেছেন চাষীরা।পাশাপাশি কোন কোন মাঠে গমের ড়্গেতে বস্নাষ্ট আক্রানত্ম হওয়ায় ফলন বির্পয়ের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। আগের বছর বস্নাস্ট রোগের আক্রমণের কারণে কৃষি অফিস গম চাষের ব্যাপারে চাষিদের নিষেধ ও নিরম্নৎসাহিত করেছিলেন। কৃষি অফিসের পরামর্শে গম চাষের পরিবর্তে অনেকে ব্যাপক পরিমাণ জমিতে করেছিলেন মসুরী চাষ। কিন’ গত ২ বছর গমের ভালো ফলন হওয়ায় এবছর উপজেলার বেশীরভাগ মাঠে গম আবাদ হয়েছে। গম ড়্গেতের চেহারাও ভাল ছিল । কিন’ হঠাৎ করে উপজেলার কোন কোন মাঠে বিশেষ করে ধানখোলা বাগানপাড়ার গম ড়্গেতে বস্নাষ্ট রোগে গমের শীষ সাদা হয়ে নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এছাড়াও গম ড়্গেতের কান্ড ও পাতা হলুদ হয়ে গাছ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, নতুন জাতের গম বারি-৩০,বারি-৩২ ও বারি-৩৩ বীজের উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে গম চাষ হয়েছে। যদিও গতবারে বস্নাস্ট লাগলেও এবছর গমড়্গেতে বস্নাস্ট রোগ তেমন একটা দেখা যায়নি ।
গাংনী উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কেএম শাহাবুদ্দীন আহমেদ জানান, এ বছর রবি মৌসুমে উপজেলায় প্রায় সাড়ে ৫ হাজার হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে।
উপজেলার ধানখোলা গ্রামের গমচাষী মনিরম্নজ্জামান ওরফে মনিরম্নল(আয়র্ুবেদিক ডাক্তার), সেন্টু মিয়া,আঃ কাদের,মহাবুল, মতিয়ার,ফতু জানান ,আমরা এবছর একেক জন ১-৩ বিঘা জমিতে গম চাষ করেছিলাম কিন’ বর্তমানে বস্নাস্ট রোগে সব শীষ সাদা হয়ে যাচ্ছে। মনিরম্নল ডাক্তার জানান, আমার বাড়িতে গমের বীজ ছিল। সেই বীজ বপন না করে কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী স’ানীয় ধানখোলা বাজারের তানভীর ট্রেডার্স থেকে নতুন জাত বারি-৩৩ গমের বীজ ক্রয় করে (নলমাঠ ও কান্দিমাঠে) বপন করেছি।কিন’ জমিতে দেখা যাচ্ছে পুরাতন বারি-২৬ ও ২৮ বীজ বা প্রদীপ বীজ বিক্রয় করে আমার সাথে প্রতারণা করেছে।বারি-৩৩ এর ইনটেক করা বসত্মা থাকলেও ভিতরে অবৈধ ভাবে পুরাতন বীজ সরবরাহ করা হয়েছে। আমার প্রতিবেশীরা সকলেই প্রতারিত হয়েছে। আমরা ড়্গতিপূরণ দাবি করছি। নইলে বীজ বিক্রেতাদের বিরম্নদ্ধে আইনগত ব্যবস’া নেব।
কৃষি অফিসের পরামর্শ অনুযায়ী ড়্গেতে নাটিভো, স্কোরসহ নানা প্রতিষেধক দিয়েও কোন কাজ হয়নি।এবছর সব ড়্গতি। ধানখোলা গ্রামের কৃষক কাদের জানান, এবার আমি আড়াই বিঘা জমিতে গম চাষ করেছি।কিছুই হবে না। সব ন্ষ্ট হয়ে গেছে।একই কথা জানালেন ,ধানখোলা গ্রামের চাষী মহাবুল ইসলাম।
এব্যপাওে ধানখোলা বাজারের তানভীর ট্রেডার্স এর তানভিরের সাথে অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি গাংনী বাজারের মেহেদীর নিকট থেকে ইনটেক বসত্মায় গম বীজ ক্রয় করে আমার এলাকার প্রায় শতাধিক কৃষকের কাছে বিক্রি করেছি। এ পর্যনত্ম মাত্র কয়েকজন অভিযোগ দিয়েছে বাদবাকী বেশীরভাগ কৃষক আজও কোন অভিযোগ নিয়ে আসেনি।
গমচাষের শুরম্ন থেকেই বস্নাস্ট নামের ছত্রাক জনিত রোগটির বিষয়ে এবার যথেষ্ট সজাগ ছিলেন তারা। তাই সময়মত জমির পরিচর্যা করাসহ বস্নাস্ট ছত্রাক থেকে বাঁচতে বালাইনাশক স্প্রে করেছিলেন। তারপরেও ফলন বির্পযয় দেখা দিয়েছে।
চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় কৃষি অফিসার কেএম শাহাবউদ্দীন আহমেদ জানান, মাঠে ফসলের অবস’া ভাল । চাষকৃত জমিতে একর প্রতি ১০ মন থেকে ১৪ মন গম পাওয়ার আশা করছেন চাষীরা।তবে তিনি শঙ্কার মধ্যে রয়েছেন বলে জানান। বর্তমান সময়ে যদি হঠাৎ ঝড় বৃষ্টি হয় তবে বস্নাস্ট রোগ ছড়িয়ে পড়ে ফলন কমে যেতে পারে। তিনি ড়্গতিগ্রসত্ম মাঠে সরেজমিনে ঘুরে দেখবেন এবং চাষীদের সাথে কথা বলে দোষী ব্যবসায়ীদের বিরম্নদ্ধে ব্যবস’া নিতে আশ্বাস দেন।
গমড়্গেতে বস্নাস্ট রোগে আক্রানত্ম হয়ে গমের দানা পরিপূর্ণ না হয়ে চিটা দেখা দিয়েছে । একারণে এবছরও উপজেলায় গমড়্গেত গুলোতে এ রোগের আক্রমণের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে কৃষি বিভাগের পরামর্শ নিয়ে যেসব কৃষক গম চাষ করেছেন, কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে তাদের সময়মত গমড়্গেতে বিভিন্ন ধরনের ছত্রাকনাশক ওষুধ স্প্রে করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। গমড়্গেত গুলোতে এবার ছত্রাকের প্রকোপ দেখা দিয়েছে। এবছর বারি-৩০,বারি-৩২ ও বারি-৩৩ কিছু নতুন বারী জাতের গম চাষ হয়েছে ।মাঠে গমের ফলন ভালো হবে বলে ধারণা করছেন কৃষি বিভাগ।
আমিরুল ইসলাম অল্ডাম
মেহেরপুর