স্টাফ রিপোর্টার : ভোজ্যতেল, আদা-রসুন, আলু, ডিম এবং সবজিসহ প্রায় সব ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম চড়া। ভারত রফতানি বন্ধের পর দাম বেড়ে দেশি পেঁয়াজ প্রতি কেজি ৮০ থেকে ৯০ টাকা এবং ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৭০ টাকায় স্থিতিশীল রয়েছে। এরইমধ্যে রাজধানীর বাজারে সপ্তাহের ব্যবধানে মানভেদে কেজিতে ২ থেকে ৪ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে চালের দাম। সরকারি হিসাবে গত এক বছরে মোটা চালের দাম বেড়েছে ২৭ শতাংশ। চিকন চালের দামও বেড়েছে ১৪ শতাংশ। মৌসুম শেষে মোটা চালের সরবরাহ কমায় এই দাম বেড়েছে বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার কয়েকটি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বর্তমানে মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা, যা আগে ছিল ৫৬ থেকে ৫৮ টাকা। নাজিরশাইল চালের দামও কেজিতে ২ টাকা বেড়ে ৬০ থেকে ৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর ৪৪ থেকে ৪৬ টাকা কেজিতে বিক্রি হওয়া মাঝারি মানের চালের দাম বেড়ে ৪৮ থেকে ৫৩ টাকা হয়েছে।
সরকারি বিপণন সংস্থা ট্রেডিং কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ-টিসিবির হিসাবেই গত এক বছরে মোটা চালের দাম বেড়েছে ২৭ শতাংশ। চিকন চালের দামও বেড়েছে ১৪ শতাংশ। মাঝারি মানের বিভিন্ন চাল বিক্রি হচ্ছে প্রতিকেজি ৪৮ থেকে ৫৩ টাকা। আর প্রতিকেজি চিকন মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে বাজারভেদে ৫৮ থেকে ৬০ টাকা।
টিসিবির তথ্যমতে, গত বছরের এই সময়ের তুলনায় এখন মাঝারি মানের চালের দাম ৯ শতাংশ ও সরু চালের দাম ১৫ শতাংশ বেশি। শুধু চালই নয়, ডাল, তেলসহ সব ধরনের পণ্যের দাম এখন বাড়তি। গড়ে ২০টি পণ্যের মধ্যে ১৭টি পণ্যের দামই বেশি ও বাড়তি বলে জানায় টিসিবি।
ব্যবসায়ীরা বলছেন, চালের দাম বাড়ার প্রধান কারণ হচ্ছে চালের চলতি মৌসুম শেষের দিকে। তাই সরবরাহ কম। অন্যদিকে, এবার সারাবছর দেশে প্রাকৃতিক দুর্যোগ ছিল। শিলাবৃষ্টি, ঘূর্ণিঝড় আম্পান, দেশের ৩৩ জেলাজুড়ে বন্যা, এ ছাড়া বছরজুড়ে করোনার প্রভাব, এসব কারণে বাজারে ধানের সরবরাহ কমে গেছে। ফলে দামও বেড়েছে।
বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক লায়েক আলী বলেন, চালের বাজারে কোনো কারসাজি নেই। ধানের মৌসুম শেষের দিকে। এখন বাজারে ধান নেই। এবার বছরজুড়েই একটার পর একটা দুর্যোগ লেগেই রয়েছে। প্রতিদিন বৃষ্টি হচ্ছে। কারোনার তা-ব তো আছেই। এসব কারণে বাজারে ধানের সরবরাহ কম, দামও বেশি। আর ধানের দাম বেশি হলে তো চালের দাম বাড়বেই।
কনজ্যুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ক্যাব)-এর সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট হুমায়ুন কবীর বলেন, করোনার কারণে মানুষ নানা ধরনের সংকটে রয়েছেন। মানুষের আয় নেই। হাতে জমানো টাকা শেষ হয়ে গেছে। এ সময় অনেকেই কর্মসংস্থান হারিয়েছেন। এ অবস্থায় নিত্যপণ্যের দাম বাড়াটা দুঃখজনক। এক্ষেত্রে সরকারের নজরদারি প্রয়োজন বলে মনে করি।
এদিকে খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার বলেছেন, চালের বাজার নিয়ে কেউ কারসাজি করলে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। দেশে পর্যাপ্ত চাল মজুদ আছে। তাই চাল নিয়ে কোনো ধরনের কারসাজি সরকার বরদাশত করবে না বলেও জানান তিনি।