চট্টগ্রামে হঠাৎ চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে

chattogram

চট্টগ্রাম থেকে সেলিম চৌধুরী:   হঠাৎ চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে। এতে নিম্ন ও মধ্যেবিক্ত আয়ের মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছে। গত সপ্তাহ ধরেই ৫০ থেকে ৮০ টাকা করে দাম বাড়ছে প্রতিবস্তা চালের। গত রোববার আবার বস্তা প্রতি ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা দাম বেড়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানায়, এমনিতেই বন্যায় বোরো ক্ষেত নষ্ট হয়েছে। আবার এখন কৃষকদের ধানের দাম বাড়িয়ে দিতে গিয়ে ফের দাম বেড়েছে দেশিয় চালের। এদিকে বাইরে থেকে আমদানি করা চালের উপর শতকরা ৫৫ ভাগ শুল্ক বৃদ্ধির কারণে আমদানি করা চালের দামও বেড়েছে। চাক্তাই খাতুনগঞ্জ ও পাহাড়তলি পাইকারি বাজারে বস্তাপ্রতি ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা বেড়েছে। খুচরা বাজারে কেজিতে দাম বেড়েছে ৭ থেকে ৮ টাকা।

এতে বস্তা প্রতি দাম বেড়েছে ৩শ’ থেকে সাড়ে ৩শ’ টাকা। সরকার এখনি কোনো পদক্ষেপ না নিলে চালের বাজার সামলানো কঠিন হয়ে পড়বে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন তারা। চট্টগ্রাম নগরীর পাহাড়তলী বণিক সমিতির সহ-সভাপতি ও রাইস মিল মালিক সমিতির সভাপতি শান্তু দাশগুপ্ত জানান, এমনিতে মিল মালিকরা বন্যার অজুহাতে গত দুইমাস যাবত চালের দাম বৃদ্ধি করেছে। করোনার আগে থেকেই ধাপে ধাপে বৃদ্ধি পাচ্ছে চালের দাম।
chattogram
এখন আবার নতুন ধান সংগ্রহ করছে মিল মালিকরা। কিন্তু সরকার কৃষকদের ধানের ন্যায্যমূল্য দিতে গিয়ে প্রতি মণ ধানে দেড়শ থেকে ২শ’ টাকা দাম বাড়িয়েছে। যা এক মণ ধানে চাল হয় ২৫ কেজি। তাহলে ২৫ কেজি চালের দাম পড়ে ৩শ’ থেকে আড়াইশ টাকা। তাই বস্তাপ্রতি আবার ২শ’ থেকে ৩শ’ টাকা দাম বেড়েছে। আবার মিল মালিকরা বন্যার কারণ দেখিয়ে সিন্ডিকেট করে আগেই চালের দাম বাড়িয়েছে। তাই সরকার চাহিদা মেটাতে বিভিন্ন রাষ্ট্র থেকে চাল আমদানি করছে। কিন্তু চালের উপর শতকরা ৫৫ ভাগ শুল্ক বৃদ্ধি করায় আমদানি করা চালের উপরও ২শ থেকে আড়াইশ টাকা দাম বেড়েছে। এভাবে চলছে খুব শীঘ্রই পেঁয়াজের মতো চালের অবস্থাও হবে। কৃষকরা ন্যায্যমূল্য পাক আমরাও চাই। তবে এটি জনগণের কথা মাথায় রেখে আরেকটু কমানো দরকার ও বাইরের চালের উপর শুল্ক কমানো হলে আবার চালের বাজার নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে। পাহাড়তলী বণিক সমিতির সহ-সভাপতি জাফর আলম জানান, বন্যার কারণে এমনিতেই ধান ক্ষেত নষ্ট হয়ে গেছে। ডিসেম্বরের মধ্যে নতুন ধান উঠার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। মিলারদের কাছে ধান মজুত আছে। কিন্তু তারা দিচ্ছে না।
chattogram
এসব কারণেই আবার দাম বেড়েছে চালে। তিনদিন আগেও যে চালের বস্তা ২১৫০ টাকা ছিল কাল তার দাম বৃদ্ধি পেয়েছে ২৫০ টাকা। তিন দিন আগে ইরি আতপ চাল বিক্রি হয়েছিল বস্তাপ্রতি ১৮শ টাকা দরে। গতকাল ১৯৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। নূরজাহান সিদ্ধ বিক্রি হয়েছে ২১৫০শ টাকা দরে। কাল বিক্রি হচ্ছে ২৩০০ টাকায়। বেতি-২৯ বিক্রি হয়েছে ২০৫০ টাকা দরে।

কাল বিক্রি হচ্ছে ২২শ টাকায়। বেতি-২৮ চাল বিক্রি হয়েছে ২১৫০ টাকা দরে। কাল বিক্রি হচ্ছে ২২৫০ টাকায়। মিনিকেট আতপ চাল বিক্রি হয়েছে ২২৫০ টাকায়। কাল বিক্রি হয়েছে ২৩শ টাকায়। জিরাশাইল মানভেদে ২৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, কাল বিক্রি হয়েছে ২৬শ টাকায়। মোটা সিদ্ধ ১৬শ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ১৯শ টাকা দরে। আর গুটি সিদ্ধ ২১শ টাকা থেকে বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২২৫০ টাকায়। এভাবে চলতে থাকলে সাধারণ মানুষ নাভিশ্বাস হয়ে উঠবে। একদিকে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধি অপরদিকে চালের দাম বৃদ্ধিতে সচেতন মহল সিন্ডিকেট কারসাজি বন্ধ করতে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এসব নিয়ন্ত্রণ করতে কাজে লাগানোর দাবি জানান।

chattogram
চট্টগ্রামে হঠাৎ চালের বাজার অস্থির হয়ে উঠেছে

Post a Comment

Previous Post Next Post