রিফাইনারিগুলো যন্ত্রপাতি আপগ্রেড না করে পেট্রোলের মান কমাতে চাচ্ছে

labanonn

Kbdews ডেস্ক :  দেশের জ্বালানি তেল শোধনাগার বা রিফাইনারিগুলো নিজেদের যন্ত্রপাতি আপগ্রেড না করে পেট্রোলের মান কমাতে চাচ্ছে। তারা চাচ্ছে দেশীয়ভাবে পেট্রোলের আলাদা মানদ- নির্ধারণ করতে। সেজন্য শিল্প মন্ত্রণালয়কে তারা চিঠি দিয়েছে। তবে পেট্রোলের মান কমাতে নারাজ বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি)। অথচ দেশীয় রিফাইনারিগুলো নিজেদের আধুনিকায়ন করলেই মানসম্পন্ন পেট্রোল উৎপাদন সম্ভব। কিন্তু তারা তা না করে বরং মান নির্ধারক সূচকই কমাতে বলছে। শিল্প মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, নিম্নমানের পেট্রোলের কারণে অপেক্ষাকৃত দ্রুত সময়ে গাড়ির যন্ত্র নষ্ট-বিকল হয়। যন্ত্রের জীবনকালও কমে যায়। একই সাথে বাড়ে পরিবেশ দূষণও। ফলে জনগণ দু’ভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন অবস্থায় সম্প্রতি উচ্চ আদালত দেশে মানসম্পন্ন তেল সরবরাহ নিশ্চিত করতে বিপিসি, বিএসটিআইসহ সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে। সেই প্রেক্ষিতে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ও সংশ্লিষ্ট সংস্থা-প্রতিষ্ঠানগুলোকে নির্দেশনা দিয়েছে। কিন্তু এমন অবস্থায় রিফাইনারিগুলো নিজেদের যন্ত্রপাতি আপগ্রেড না করে মান সূচকই পালটে ফেলতে বলছে।

সূত্র জানায়, দেশের পরিবহন, কৃষি ও শিল্প খাত ভেজাল ও মানহীন জ্বালানি তেলের চক্র থেকে বের হতে পারছে না। মূলত সিংহভাগ দেশীয় রিফাইনারিগুলো আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী গ্যাসের উপজাত (কনডেনসেট) পরিশোধন করতে না পারায় পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে না। এখন রিফাইনারিগুলো শিল্প মন্ত্রণালয়কে নিজেদের মেশিনারিজ আপগ্রেড না করে জ্বালানি তেল পেট্রোলের মান কমিয়ে আলাদাভাবে দেশীয় মানদ- নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে। আর এ বিষয়ে বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশনকে (বিপিসি) মতামত দিতে নির্দেশক্রমে অনুরোধ করেছে মন্ত্রণালয়।

সূত্র আরো জানায়, আন্তর্জাতিক মানদ- অনুযায়ী পেট্রোলে রিসার্চ অকটেন নাম্বার (আরওএন) অন্তত ৮৭ থাকতে হয়। সে অনুযায়ী বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশন (বিএসটিআই) রিফাইনারিগুলোর জন্য পেট্রোলে আরওএন ৮৭ মাত্রায় রাখার জন্য বাধ্যতামূলক করেছে। কিন্তু বেসরকারি খাতের ১৩টি রিফাইনারির (কনডেনসেট ফ্র্যাকশনেসন প্ল্যান্ট) মধ্যে ১১টি ওই মান অনুযায়ী পেট্রোল উৎপাদন করতে পারে না। তাদের পেট্রোলে আরওএনের পরিমাণ ৮০র বেশি থাকে না। বরং অনেক সময় তা আরো কম থাকে। এমন অবস্থায় সরকারের আরেক সংস্থা পেট্রোবাংলা সম্প্রতি ওই ১১টি রিফাইনারিতে দেশীয় গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে পাওয়া কনডেনসেট বিক্রি-সরবরাহ বন্ধ করে দিয়েছে। এ প্রেক্ষাপটে রিফাইনারিগুলো তেলের রিসার্চ অকটেন নাম্বার কমাতে শিল্প মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে। তারা আরো এন ৮০ নির্ধারণের অনুরোধ করেছে। শিল্প মন্ত্রণালয়ের কয়েক জন শীর্ষ কর্মকর্তারও তাতে প্রাথমিক সম্মতি রয়েছে। ওই ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি এ বিষয়ে মতামত চেয়ে বিপিসিকে চিঠি পাঠিয়েছে শিল্প মন্ত্রণালয়। এদিকে এ প্রসঙ্গে শিল্প মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান, রিফাইনারিগুলোর চাওয়া এবং অনুরোধ বিপিসিকে জানিয়ে মতামত দিতে বলা হয়েছে। তাদের মতামত পাওয়ার পর পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। অন্যদিকে এ বিষয়ে বিপিসির চেয়ারম্যান মো. সামছুর রহমান জানান, দেশের ও জনগণের স্বার্থেই আন্তর্জাতিক মানদ- রক্ষা করে তেল উৎপাদন ও বিপণন করা জরুরি। এর ব্যত্যয় হলে ক্ষতির আশঙ্কা থাকে।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post