খন্দকার মোশতাকের নির্দেশে জাতীয় ৪ নেতাকে হত্যা করা হয়
স্টাফ রিপোর্টার : খন্দকার মোশতাকের নির্দেশে জাতীয় ৪ নেতাকে হত্যা করা হয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় কারাগারে অস্ত্র নিয়ে ঢোকা যায় না। কিন্তু, তারা অস্ত্র নিয়ে ঢুকেছিল। বঙ্গভবন থেকে সেই নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। বলা হয়েছিল, যেভাবে ঢুকতে চায়, সেভাবেই যেন ঢুকতে দেয়া হয়। গতকাল রোববার জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে এই আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। শেখ হাসিনা বলেন, অনুমতি ছাড়া কেন্দ্রীয় কারাগারে প্রবেশ করা যায় না। তাই বাধা দেয়া হয়। তখন বঙ্গভবন থেকে টেলিফোন যায়, খুনি মোশতাক টেলিফোন দিয়ে নির্দেশ দেয়। এরা যখন অস্ত্র নিয়ে ঢুকতে যায়, তখনও বাধা দেয়া হয়েছিল। তখন বঙ্গভবন থেকে বলা হয়েছিল, আলোচনা করতে যাচ্ছে। যেভাবে ঢুকতে চায়, সেভাবেই ঢুকতে দেয়া হোক। তিনি বলেন, মোশতাকের পতন যখনই অনিবার্য হয়ে পড়লো, সাথে সাথে ওই খুনিদের একটি প্লেনে করে বিদেশে পাঠিয়ে দেয়া হলো। প্রথমে তারা তাদের ব্যাংককে নিয়ে যায়। সেখানে বসে তাদের পাসপোর্ট দেয়া হয়। তাদের ভিসার ব্যবস্থা করে কোন দেশে যাবে সেটাও ঠিক করে দেয়া হয়। এর সাথে কারা জড়িত, সেটাও কিন্তু ইতিহাসে আছে। তিনি বলেন, বিএনপি সরকারের অপকর্মের কারণেই দেশে ইমার্জেন্সি (জরুরি অবস্থা) জারি হয়েছিল। বিভিন্ন দেশি-বিদেশি চাপ আসে, তারপর আমরা নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণ করি।
বিএনপির সমালোচনা করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, একটা দল, যার চেয়ারপারসন এতিমের টাকা আত্মসাতের মামলায় জেলে, এত নেতা থাকতে যে মামলায় সাজাপ্রাপ্ত তাকে বানাল ভারপ্রাপ্ত প্রধান। যারা বিএনপি করে তাদের মেরুদ- আছে কিনা এটাই আমার সন্দেহ। তিনি বলেন, বিএনপির অবরোধ এখনও বহাল, তারা এখনও উঠায়নি। হরতাল দিয়েছে, অগি্নসংযোগ করেছে, বাসে আগুন দিয়েছে, লঞ্চে আগুন দিয়েছে। এসব হামলায় অনেক মানুষ মারা গিয়েছে। খালেদা জিয়াকে দেখে অনেকের মায়াকান্না। আমরা যারা ‘৭৫ সাল থেকে স্বজনহারা বেদনা নিয়ে আছি আমাদের জন্য কি মায়া লাগে না। তিনি বলেন, জনগণের সমর্থন নিয়ে ক্ষমতায় এসেছি। বাবা-মায়ের কাছে শিখেছি, দেশকে ভালোবাসা মানুষকে ভালোবাসা। দেশকে ভালোবাসলে দায়িত্ব পালন করা যায়। মানুষের সমর্থন পাওয়া যায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে বাংলাদেশ উন্নয়নের এক বিস্ময়। জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ গড়বই। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং জাতীয় ৪ নেতার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। জাতির পিতা এবং ৪ জাতীয় নেতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনের অংশ হিসেবে রোববার সকাল ৭টায় ধানম-ি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান তিনি। এরপর সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন প্রধানমন্ত্রী। পরে, আওয়ামী লীগের সভাপতি হিসেবে শেখ হাসিনা দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের আরেকটি শ্রদ্ধাঞ্জলি নিবেদন করেন। প্রসঙ্গত, ১৯৭৫ সালের এই দিনে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে রাতের আঁধারে বঙ্গবন্ধুর খুনিচক্র নির্মমভাবে জাতীয় ৪ নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলী ও এএইচএম কামরুজ্জামানকে হত্যা করে। যারা বঙ্গবন্ধুর অবর্তমানে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে নেতৃত্ব প্রদান করে জাতির জন্য বিজয় ছিনিয়ে এনেছিলেন।