পেঁয়াজের দাম যেন অপ্রতিরোধ্য। কেজি ২৬০ গত ৩ দিনে বেড়েছে ১০০ টাকা

 

 

পেঁয়াজের দাম যেন অপ্রতিরোধ্য। কেজি ২৬০ গত ৩ দিনে বেড়েছে ১০০ টাকা
পেঁয়াজের দাম যেন অপ্রতিরোধ্য। কেজি ২৬০ গত ৩ দিনে বেড়েছে ১০০ টাকা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার : পেঁয়াজের দাম যেন অপ্রতিরোধ্য। কেউ থামাতে পারছে না এর ঊর্ধ্বগতি। প্রতিদিনই দামের নতুন রেকর্ড গড়ে টক অব দ্য টাউনে পরিণত পেঁয়াজ। বাসা-বাড়ি, হোটেল, বাজার, পাড়া-মহল্লা সর্বত্রই আলোচনার বিষয়বস্তু বাঙালির রান্না তরকারির অন্যতম উপকরণটি। হবেইবা না কেন? কারণ ৩ দিনের ব্যবধানে ৩ দফায় কেজিতে ১০০ টাকা বেড়ে এখন পেঁয়াজের দাম ২৫০ টাকা পাড় করেছে। মাসখানেক আগেও যে পেঁয়াজের দাম ছিল কেজিপ্রতি ৩০ টাকা সেই পেঁয়াজই এখন বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ২৬০ টাকা দরে। আর পেঁয়াজের এমন দাম বাড়ায় দিশেহারা হয়ে যেমন হতবাক ক্রেতারা তেমনি এই ঊর্ধ্বগতির কোন সদুত্তর নেই খুচরা বিক্রেতাদের কাছেও। পাইকারদের কাছ থেকে পেঁয়াজ কিনে তারাও রীতিমতো ভিরমি খেয়ে চলেছেন। তবে এদের মধ্যেই কেউ কেউ আবার বর্ধিত দামের সাথে ‘অল্প’ একটু মুনাফা করে নিচ্ছেন। ভারত রফতানি বন্ধ করায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর থেকেই দেশের পেঁয়াজের বাজার অস্থির। এরপর থেকে দফায় দফায় বাড়তে থাকে পেঁয়াজের দাম। পেঁয়াজ রপ্তানি বন্ধ করার সংবাদে ২৯ সেপ্টেম্বর প্রথমবারের মতো ১০০ টাকায় পৌঁছায় দেশি পেঁয়াজের কেজিপ্রতি মূল্য। খুচরা পর্যায়ে ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ ১০০-১১০ টাকা কেজি বিক্রি হতে থাকে। এরপর অবশ্য কিছুদিন পেঁয়াজের ওই দাম অনেকটাই স্থির ছিল। মাঝে ৭০ থেকে ৮০ টাকাতেও কেজিপ্রতি মূল্য নেমে এসেছিল। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় বুলবুলের পর আবারও পেঁয়াজের দাম বেড়ে যায়। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে রোপণ করা পেঁয়াজের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে এবং আমদানি করা পেঁয়াজ আসছে না_ এমন অজুহাতে ব্যবসায়ীরা পেঁয়াজের দাম আবার বাড়িয়ে দেন। ফলে আবারও ১০০ টাকায় পৌঁছে যায় পেঁয়াজের কেজি।

পেঁয়াজের দাম যেন অপ্রতিরোধ্য। কেজি ২৬০ গত ৩ দিনে বেড়েছে ১০০ টাকা
পেঁয়াজের দাম যেন অপ্রতিরোধ্য। কেজি ২৬০ গত ৩ দিনে বেড়েছে ১০০ টাকা

পেঁয়াজের দাম যেন অপ্রতিরোধ্য। কেজি ২৬০ গত ৩ দিনে বেড়েছে ১০০ টাকা

এরপর বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি এক বক্তৃতায় বলেন, পেঁয়াজের কেজি ১০০ টাকার নিচে নামা সম্ভব নয়। মন্ত্রীর এই বক্তব্য পেঁয়াজের দাম বাড়ার বিষয়টিকে আরও উসকে দেয় বলে অভিযোগ ক্রেতাদের। যার ফলে রাতারাতি ১০০ টাকা থেকে পেঁয়াজের কেজি ১৩০ টাকায় পৌঁছে যায়। এ পরিস্থিতিতেই শিল্পমন্ত্রী জাতীয় সংসদে বলেন, পেঁয়াজের দাম স্বাভাবিক আছে। ঠিক তার পরের দিনই ওই পেঁয়াজের কেজি পৌঁছে যায় ১৫০ টাকায়। তবে এখানেই থেমে থাকেনি পেঁয়াজের দাম বাড়ার প্রবণতা। গত বুধবার ১৫০ টাকা থেকে পেঁয়াজের দাম এক লাফে ১৭০ টাকা হয়। বৃহস্পতিবার সেই দাম আরও বেড়ে ২০০ টাকায় পৌঁছে যায়। আর সপ্তাহের শেষ দিন গতকাল শুক্রবার তা আরও বেড়ে ২৬০ টাকা পর্যন্ত ঠেকেছে। এর আগে কখনো দেশের বাজারে এত দামে পেঁয়াজ বিক্রি হয়নি। শুক্রবার ঢাকার সব থেকে বড় পাইকারি বাজার শ্যামবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মিসর থেকে আসা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২১০-২২০ টাকা কেজি। দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হয়েছে ২৩০-২৪০ টাকা।

ব্যবসায়ী পরিচয় দিয়ে কথা বললে শ্যামবাজারের এক পাইকারি দোকানের মালিক বলেন, আজ (গতকাল) পেঁয়াজের দাম অনেক বাড়তি। দেশি পেঁয়াজ শ্যামবাজারে ২৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। মিসরের পেঁয়াজ এখানে ২২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। পপুলার বাণিজ্যালয়ের এক বিক্রয়কর্মী বলেন, বাজারে পেঁয়াজ নেই। পেঁয়াজের ঘাটতির কারণে দফায় দফায় পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। আজ পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৩০ টাকা। এ দাম কোথায় গিয়ে ঠেকে তার কোনো ঠিক নেই।

পেঁয়াজের দাম যেন অপ্রতিরোধ্য। কেজি  ২৬০  গত ৩ দিনে বেড়েছে ১০০ টাকাপেঁয়াজের দাম যেন অপ্রতিরোধ্য। কেজি  ২৬০  গত ৩ দিনে বেড়েছে ১০০ টাকা

এদিকে রামপুরার বিভিন্ন বাজারে খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে, প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ২৩০-২৬০ টাকা কেজিতে। পেঁয়াজের দামের বিষয়ে রামপুরা বাজারের এক ব্যবসায়ী বলেন, প্রতিদিনই পেঁয়াজের দাম বাড়ছে। আমাদের করার কিছু নেই। বুধবার শ্যামবাজার থেকে ১৬০ টাকা কেজি পেঁয়াজ কিনেছি। বৃহস্পতিবার পেঁয়াজ কিনতে হয়েছে ২০০ টাকায়। আর আজ (গতকাল) শ্যামবাজারে পেঁয়াজ ২৩০ টাকা কেজি। পেঁয়াজের এমন দাম বাড়ায় নিরুপায়-হতবিহ্বল জনগণের মাঝে ক্ষোভ ও অসন্তোষ ক্রমেই বাড়ছে। বিশেষ কারে নিম্নবিত্তদের মাঝে রীতিমতো আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ছে। প্রতিনিয়তই দাম বাড়ার শঙ্কায় দিন কাটছে সাধারণ মানুষের। এদিকে বাজারে বেশি দামে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ করতে অভিযানে নেমেছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণসহ সংশ্লিষ্টরা। তবে বাজার তদারকি হলেও পেঁয়াজের দাম কবে নাগাদ কমবে তা নিয়ে রয়েছে প্রশ্ন।

Post a Comment

Previous Post Next Post