ভারতের সাথে চুক্তি নিয়ে স্ট্যাটাসের জেরে খুলনায় আ.লীগ নেতা বহিষ্কার

খুলনায় আ.লীগ নেতা বহিষ্কার

 

বি এম রাকিব হাসান :  ফেসবুক স্ট্যাটাসের জেরে খুলনা বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) সভাপতি ডা. শেখ বাহারুল আলমকে আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
বুধবার রাতে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শেখ হারুনুর রশীদের সভাপতিত্বে দলীয় কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক জরুরি সভায় তাকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানা যায়, ফেসবুকে সরকার প্রধান ও দলীয় প্রধানের বিরুদ্ধে স্ট্যাটাস, ভারতের সাথে চুক্তি নিয়ে নেতিবাচক মন্তব্য, দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ ও রাষ্ট্রবিরোধী বক্তব্য প্রদান এবং তা প্রত্রিকায় প্রকাশিত হওয়ায় ডা. শেখ বাহারুল আলমকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একই সঙ্গে কেন তাকে স’ায়ী বহিষ্কারের জন্য কেন্দ্রে সুপারিশ করা হবে না, তা আগামী সাত দিনের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য বলা হয়েছে।
ডা. শেখ বাহারুল আলমের ফেসবুক ষ্ট্যাটাসটি হুবুহ তুলে ধরা হল
ভারত – বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় চুক্তি বলা হলেও বাস্তবে একপক্ষীয় সিদ্ধান্ত – বাংলাদেশের জনগণের স্বার্থ ও অধিকার চরম উপেক্ষিত
………………………
দুর্বল অবস’ানে থেকে বন্ধু-প্রতিম শক্তিধর প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সাথে বৈঠকে -ফলাফল শক্তিধরের পক্ষেই আসে। বাংলাদেশ- ভারত উভয়-পক্ষীয় সমঝোতা স্মারক নাম দেওয়া হলেও বাস্তবে একপক্ষীয় সিদ্ধান্তই মেনে নিতে হয় দুর্বল রাষ্ট্রকে।
ভারত বাংলাদেশ থেকে তার সকল স্বার্থই আদায় করে নিয়েছে। বিপরীতে বাংলাদেশ ভারতের কাছ থেকে এখনও ন্যায্য হিস্যা আদায় করতে পারে নি ।
১) দীর্ঘদিনের আলোচিত তিস্তা নদীর পানি বণ্টন এবারের দ্বিপক্ষীয় আলোচনায় স’ান পায় নি ।
২) ভারতের প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে কিছু না বললেও তার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ্‌ হুংকার দিয়েছে নাগরিক পঞ্জীতে বাদ পড়া জনগণকে বাংলাদেশে ঠেলে দেওয়া হবে। তারপরেও এবারের সমঝোতা চুক্তিতে ‘অভ্যন্তরীণ’ অজুহাতে বিষয়টি স’ান পায় নি।
৩) বাংলাদেশে অবস’ানরত রোহিঙ্গা শরণার্থী মায়ানমারের রাখাইন রাজ্যে প্রত্যাবসনের বিষয়ে ভারত কিছু বলেনি ।
৪) তিস্তা নদীর পানি বণ্টন নিয়ে চুপ থাকলেও বাংলাদেশ অংশের ফেনী নদীর পানি ত্রিপুরা রাজ্যের পানীয় জল হিসাবে প্রতিদিন ১.৮২ কিউসেক টেনে নেবে ভারত। এ বিষয়ে বাংলাদেশ সম্মত হয়েছে।
৫) বাংলাদেশের জনগণের তরল গ্যাসের চাহিদা পূরণের ঘাটতি থাকলেও ভারতে তরল গ্যাস রপ্তানির সিদ্ধান্ত হয়েছে এবং যৌথভাবে সে প্রকল্প উদ্বোধনও হয়েছে।
৬)চট্টগ্রাম ও মংলা বন্দর ভারত কীভাবে ব্যবহার করবে, তা নির্ধারিত হলেও বাংলাদেশের জন্য ব্যবহারযোগ্য ভারতের কোনও বন্দর সেই তালিকায় ছিল না।
অমানবিক আচরণের শিকার হয়েও বাংলাদেশ পানি ও গ্যাস সরবরাহ দিয়ে মানবিকতার প্রদর্শন করেছে। বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থ ও অধিকার উপেক্ষিত রেখে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক শেষ হয়েছে।
শক্তিধর প্রতিবেশীর আধিপত্যের চাপ এতোই তীব্র যে ভবিষ্যতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বজায় থাকবে কিনা আশংকা হয়। কারণ ভারতের চাপিয়ে দেওয়া সকল সিদ্ধান্ত বাংলাদেশকে মেনে নিতে হচ্ছে।

বি এম রাকিব হাসান,
খুলনা ব্যুরো:
১০-১০-১৯

Post a Comment

Previous Post Next Post