আমন ধান চাষাবাদে বিপাকে খুলনাঞ্চলের কৃষকরা

dhan

বি এম রাকিব হাসান:   মধ্য শ্রাবণও চলে গেল, ভারি বৃষ্টিপাতের দেখা নেই। নেই বর্ষা মৌসুমে আমন আবাদের জন্য কাক্সিক্ষত বৃষ্টি। প্রতিদিন আকাশে মেঘের দেখা মিললেও দেখা নেই বৃষ্টির। ফলে আমন ধান চাষাবাদ নিয়ে বিপাকে এ অঞ্চলের কৃষকরা। বৃষ্টির অভাবে আমন বীজতলা তৈরিতে হয়েছে দেরি। রোপণও ব্যাহত হচ্ছে। ফলে প্রভাব পড়তে পারে শীতকালীন ফসলে এবং প্রভাব পড়তে পারে বোরো চাষে। তবে কৃষকেরা আশা করছেন আগামী সপ্তাহে বৃষ্টি হবে এবং বীজতলার জন্য উপযুক্ত হবে।
খুলনা জেলায় ১ ফসলী জমি রয়েছে ৪৪ হাজার ৩শ ৭০ হেক্টর, দুই ফসলী জমি রয়েছে ৫১ হাজার ৬শ ২০ হেক্টর এবং তিন ফসলী জমি রয়েছে ৪৮ হাজার ৭শ ৭২ হেক্টর এবং মোট ফসলী জমির পরিমাণ ২ লাখ ৯৩ হাজার ৯শ ২৬ হেক্টর। যদিও অনেক এলাকায় আমন চাষের জমিতে শীতকালীন সবজি চাষাবাদ হয় কম। আষাঢ় থেকে আকাশের দিকে চেয়ে থেকে অনেক কৃষক সেচ দিয়ে আমনের বীজতলা তৈরি করেছেন। পরে কিছুটা বৃষ্টি হলে খরচ কমেছে। তবে আবারও বৃষ্টি কমে যাওয়ায় অনেকটা শঙ্কিত রয়েছেন এ এলাকার কৃষকরা। তাই কৃষকরা তাকিয়ে আছে কাক্সিক্ষত বৃষ্টির জন্য।আমন ধান
অন্যদিকে সময়মত বৃষ্টিপাত না হওয়ায় আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে বলে কৃষকরা মনে করছেন। অনেক এলাকায় বীজতলায় পড়ে আছে রোপণ উপযুক্ত বীজ।
খুলনা আবহাওয়া অফিস সূত্রে জানা গেছে, গত বছর জুন, জুলাই মাসে খুলনায় বৃষ্টিপাত হয়েছিল ৫শ ৩০ মি.মি.। আর চলতি বছরের জুন, জুলাই মাসে খুলনায় বৃষ্টিপাত হয়েছে হয়েছে ৪শ ৪৪ মি.মি.।
ডুমুরিয়ার শোভনা এলাকার কৃষক মোঃ কামাল হোসেন জানান, কিছু করার নেই। বৃষ্টি না হলে শীতকালীন সবজি, বোরো সবই দেরিতে উঠবে। তবে এখনও যদি ভারি বৃষ্টি হয় তাহলে কিছুটা পুষিয়ে যাবে।
কয়রা আমাদী বাজার এলাকার মোঃ রিপন শেখ জানান, কয়রা এলাকায় লবণাক্ততা বেশি। বৃষ্টি না হলে এখানকার কৃষকরা বিপাকে পড়ে। বৃষ্টির পানিতে বেশি লবণ কাটে, যা সেচের পানিতে কাটে না। রোপণে দেরি হলেতো কাটতেও দেরি হবে। ফলে অন্য পরবর্তী ফসল উঠতে দেরি হবে।আমন ধান
কয়রা উপজেলায় ১৫ হাজার ৫শ হেক্টর জমি আমন আবাদের জন্য নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে বিভিন্ন এলাকায় আগাম জাতের আমন ধান রোপণ শুরুও হয়েছে বলে জানান কয়রা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ এস এম মিজান মাহমুদ। তিনি আরও জানান, আমরা আশা করছি আগামী দিন থেকে বৃষ্টিপাত হবে এবং কৃষকরা উপকৃত হবে।
খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অফিসের আবহাওয়াবিদ আমিরুল আজাদ জানান, আগামী দু-তিনদিন বৃষ্টি না হলেও মঙ্গলবার থেকে ভারি বৃষ্টি হতে পারে।
খুলনা জেলা কৃষি সমপ্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পঙ্কজ কান্তি মজুমদার জানান, দেশের অনেক জায়গায় বৃষ্টি হলেও খুলনায় বৃষ্টি হয়েছে অনেক পরে। আরও আগে বৃষ্টির প্রয়োজন ছিল। কৃষকরা কিছুটা পিছিয়ে গেছে। তবে এ বৃষ্টি যদি আরও কয়েকদিন আগে হতো তাহলে আউশে আরও ফল পাওয়া যেত।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post