ঈদ উপলক্ষে খুলনাঞ্চলে শাড়ী কাপড় মশলা মাদক চোরাচালান কোনভাবেই ঠেকানো যাচ্ছেনা নগরীর বিপনী বিতানগুলোতে চোরাচালানী পণ্যে সয়লাব
বি এম রাকিব হাসান, খুলনা ব্যুরো: রোজার শুরু থেকেই চোরাচালান পুরোদমে শুরু হয়েছে। গত সপ্তাহকাল ধরে বৃহত্তর খুলনাঞ্চল ও সীমান্ত অঞ্চলে র্যাব কোষ্টগার্ড, গোয়েন্দা পুলিশ ও বিডিআর চোরাচালানী পণ্য উদ্ধার করলেও শাড়ী কাপড় মশলা ও মাদক চোরাচালান কোনভাবেই ঠেকানো যাচ্ছেনা। কোন না কোন পথে প্রতিনিয়ত চোরাচালান অব্যাহত রয়েছে। প্রায়ই ধরা পড়ছে। তবুও অপ্রতিরোধ্য সিন্ডিকেট চক্রটি। চোরাকারবারীরা প্রতি মুহুর্তে রুট বদলাচ্ছে । কিন’ গোয়েন্দা নজরদারী এড়াতে পারেনা। তিন কোটি কখনও সাত কোটি টাকার মাল ধরা পড়ার পরেও চোরাকারবারীরা বেপরোয়া। সীমান্ত এলাকা দিয়ে প্রতিনিয়ত খুলনাঞ্চলে ভারতীয় শাড়ি, থ্রিপিচ ও কাপড় চোপড় এবং গরম মসলা সহ বিভিন্ন মালামাল আসছে। নগরীর বিপনী বিতানগুলোতে ভারতীয় শাড়ি কাপড়ে সয়লাব। তাদের গোডাউনে রয়েছে লাখ লাখ টাকার মালামাল। অপরদিকে ঈদকে সামনে রেখেই কথিত ফিলিংসের জন্য ফেনসিডিল ইয়াবা, গাজা, হেরোইন বাংলা মদ ঢুকছে। চোরাকারবারীরা ফুলেফেপে কোটিপতি হচ্ছে। আর যুব সমাজ এখন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে।ঈদের পূর্ব মুহুর্তে নেশার টাকা যোগাতে মাদক সেবীরা তৎপর হয়ে উঠেছে।
সূত্রমতে, সামপ্রতিককালে খুলনাসহ তৎসংলগ্ন এলাকায় অবৈধ ভারতীয় কাপড়ের চোরাচালানী বৃদ্ধি পাওয়ায় বাগেরহাট, খুলনা ও সাতক্ষীরা এলাকাসমূহে কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোন কর্তৃক টহল জোরদার করা হয়েছে। এই সাফল্য উক্ত টহলেরই অংশ। তাছাড়া পবিত্র ঈদ উপলক্ষে চোরাচালানীর আনাগোনা ও কার্যক্রম তুলনামূলক বৃদ্ধি পেয়েছে। বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের অপারেশন কর্মকর্তা জানান, একটি চক্র অবৈধ ভারতীয় কাপড়ের চোরাচালানী করে আসছে। চোরাচালানী বন্ধে বাংলাদেশ কোস্ট গার্ড পশ্চিম জোনের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত থাকবে বলে জানানো হয়।
এদিকে, সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে খুলনা ও সীমান্ত অঞ্চলের চোরাচালান সিন্ডিকেট প্রতিনিয়ত শাড়ি কাপড় ও মাদকদ্রব্য চোরাচালান করছে। জানা গেছে, পুলিশের কতিপয় কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে চলছে এই বানিজ্য । আইন প্রয়োগকারী সংস’াকে বৃদ্ধাঙ্গুলী প্রদর্শন করে একটি চক্র একের পর এক কালোবাজারী করলেও কেন তাদের আইনে সোপার্দ করে দৃষ্টান্ত স’াপন করা যাচ্ছে না তা জনগনের বোধ্যগম্য নয়। বর্তমান সরকার চোরাচালান রোধে অত্যান্ত আন্তরিক। অথচ ফাঁক ফোকর দিয়ে প্রতিনিয়ত খুলনাঞ্চলে চোরাচালান চলছে। সামান্য কিছু অর্থের বিনিময়ে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কতিপয় সদস্য বেমালুম চেপে যাচ্ছে। ব্লাকিং রুট ওপেন করে দিচ্ছে।
এদিকে, খুলনা সাতক্ষীরা ও বাগেরহাট এলাকায় চোরাচালান সিন্ডিকেট এখন সক্রিয়। ২০/২৫ জনের একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে খুলনাঞ্চলে চোরাচালানে এখন শীর্ষে রয়েছে ফেনসিডিল । বৃহত্তর খুলনাঞ্চলে রোজার শুরু থেকেই এবং ঈদ পর্যন্ত ব্যাপকভাবে ফেনসিডিল ঢুকছে এবং ঢুকবে বলে সূত্র গুলো জানায়। প্রতিনিয়ত ফেনসিডিল ধরা পড়ছে। এছাড়া ইয়াবা হেরোইন গাজা ও ভারতীয় নিম্নমানের মদ আসছে দেদারছে। খুলনাঞ্চলের তরুন যুবক যুবতী থেকে শুরু করে একশ্রেনীর শিক্ষিত সমাজের কাছে ইয়াবা সেবনের জনপ্রিয়তা রয়েছে। খুলনা মহানগরীর ৫০টি স্পটে ইয়াবা পাচারকারীরা তাদের এজেন্টের মাধ্যমে দেদারছে বিক্রি করছে। এদেশের ইয়াবার বাজার পুরোটাই দখল করে আছে মিয়ানমান। সীমান্ত দিয়ে পার হয়ে আসা মাদকদ্রব্যের মধ্যে সামান্য ধরা পড়েছে র্যাব ও পুলিশের হাতে। দু’একজন এজেন্ট ধরা পড়লেও মুল গডফাদাররা কেউই ধরা পড়ছেনা। চোরাচালান সিন্ডিকেট চক্র পর্দার আড়াল থেকে কলকাঠি নাড়াচ্ছে। প্রতিমাসে আয় করছে কোটি কোটি টাকা।
খুলনা নাগরিক সমাজের নেতা মো: আব্দুল হালিম বলেন, চোরাচালান দেশের মেরুদন্ড ভেঙ্গে দেয়। ব্যবসায়ীরা লোকসানে পড়ে। আর একটি চক্র রাতারাতি কোটিপতি হয়। এদেরকে রুখতে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে আরো সজাগ হতে হবে। তিনি এ ব্যাপারে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষন করেন।