মেহেরপুরে একটি হত্যা মামলায় স্বামী-সতিন রিমান্ডে

স্টাফরিপোটার :  মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার রশিকপুর গ্রামের গৃহবধু তহমিনা খাতুন হত্যার অভিযোগে আটক করে স্বামী শহিদুল ইসলাম ও তার দিত্বীয় স্ত্রী আনোয়রা খাতুনকে ২ দিনের রিমান্ড শেষে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মোঃ শাহীন রেজা গত বৃহষ্পতিবার তাদের কারাগারে পাঠাবার নির্দেশ দেন।

মামলার বিবরণে জানাগেছে প্রায় ২৪ বছর পূর্বে মেহেরপুর মুজিবনগর উপজেলার রশিকপুর গ্রামের দুরুদ আলীর ছেলে শহিদুল ইসলামের বিবাহ হয়। বিয়ের পর জানাজানি হয় যে শহিদুল ঘরে একাধিক স্ত্রী রয়েছে। বিয়ের পর ২ লক্ষ টাকা যৌতুক সহ বিভিন্ন জিনিস আদায় করে। পরে শহিদুল ইসলাম একই গ্রামের আনোয়ারা খাতুন নামের এক মহিলার সাথে পরকীয়া প্রেমের সূত্র ধরে বিয়ে করে। বিয়ের পর তহমিনাকে তালাক নিয়ে তার পিতার বাড়িতে চলে যাওয়ার জন্য চাপ প্রয়োগ করে। এতে তহমিনা রাজী না হওয়ায় শহিদুল এবং ছোট স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন বড় স্ত্রী তহমিনাকে মারধর শুরু করে। পরে সদর উপজেলার আমদহ ইউনিয়ন পরিষদে বিচারের জন্য আবেদন করলে শহিদুল তার উপর অত্যাচার করবে না মর্মে বুঝিয়ে তার বড় স্ত্রীকে বাড়ি নিয়ে যায়। এদিকে গত ১৫ মার্চ তহমিনাকে নির্যাতন শুরু করলে প্রানভয়ে সে পার্শ্ববার্তী হাজী মোকছেদ আলীর বাড়িতে আশ্রয় নেয়। পরে রাত ১০টার দিকে সেখান থেকে ধরে এনে রাত ১১টার দিকে তহমিনাকে বালিশ চাপাদিয়ে হত্যা করে আত্মহত্যা করেছে মর্মে লাশ ঝুলিয়ে রাখে। পরদিন পুলিশ ঘটনাস’ল থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করে। ঐ ঘটনায় নিহত তহমিনার ভাই আলামিন জোয়ার্দ্দার বাদী হয়ে মুজিবনগর থানায় ৩০২/৩৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। যার মামলা নং-৬। তারিখ ১৯ মার্চ ২০১৮। মামলায় নিহতের স্বামী শহিদুল ইসলাম, ছোট স্ত্রী আনোয়ারা খাতুন, সেফালী খাতুন, রফিকুল ইসলাম, শেলি খাতুন ও শেরেওলকে আসামী করা হয়। এদিকে গত ২৪ এপ্রিল আসামী শহিদুল আনোয়ারা সহ অন্য আসামীরা আদালতে আত্মসমর্পন করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠাবার নির্দেশ দেন। এদিকে একই সাথে ২২ এপ্রিল মামলার তদন্ত ভার সি.আই.ডি’র উপর ন্যাস্ত করা হয়। এতে তদসবদকারী কর্মকর্তা হিসাবে আনোয়ার জাহিদ’কে দায়িত্ব দেওয়া হয়। সি.আই.ডি তাদের ৭ দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন জানালে আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। বাঁকি আসামীদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার অনুমতি দেন। এদিকে শহিদুল ও তার ছোট স্ত্রী আনোয়ারাকে জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তাদের আদালতের মাধ্যমে করাগারে পাঠানো হয়।
এদিকে তদস্তকারী কর্মকর্তা আনোয়ার জাহিদ জানান আদালতে ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করা হয়েছিল আদালত ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আসামীদের কাছে জিজ্ঞাসাবাদ করে কিছু তথ্য পাওয়া গেছে বলে তিনি জানান। আনোয়ার জাহিদ আরো জানান যেহেতু ময়না তদস্তের রির্পোট এখনো আসেনি, সেহেতু আগামী কিছু বলা যাচ্ছে না। তিনি জানান বাঁকি আসামীদের জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করার প্রস্ততি চলছে।

মোঃআবু লায়েছ লাবলু

Post a Comment

Previous Post Next Post