হাতকড়া পরিয়ে ডিবিসি'র ক্যামেরাম্যানকে নির্মম নির্যাতন গোয়েন্দা পুলিশের-ঘটনাস্থল বরিশাল

ডিবিসি'র ক্যামেরাম্যানকে

বরিশাল থেকে গৌতম কুমার দে   : বরিশালে ডিবিসি’র ক্যামেরাপার্সন সুমন হাসানকে অমানুষিক নির্যাতনের

অভিযোগ উঠেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশের বিরুদ্বে। এ ঘটনায় প্রতিবাদী সাংবাদিকদের দাবির প্রেক্ষিতে ঐ ঘটনার সাথে জড়িত গোয়েন্দা পুলিশের ৮ সদস্যকে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করেছে কর্তৃপক্ষ। আজ দুপুর ২টার দিকে নগরীর বিউটি রোড এলাকায় এই ঘটনা ঘটে।

ডিবিসি’র নির্যাতিত সাংবাদিক জানান, আজ দুপুরে অফিস থেকে বাসায় যাওয়ার পথে এক নিকটআত্মীয়কে গোয়েন্দা পুলিশের আটকের খবর পেয়ে তিনি ঘটনাস্থলে যান এবং পুরো বিষয়টি জানতে চান। এ সময় যাদের আটক করা হয়েছে, তাদের সাথে তার বাকবিতণ্ডা হয়। এর এক পর্যায়ে গোয়েন্দা পুলিশ তার পরিচয় জানতে চায়। সাংবাদিক পরিচয় পেয়েই তার উপর চড়াও হয় গোয়েন্দা পুলিশের সনদস্যরা। এ সময় প্রকাশ্যে তার পড়নে থাকা টি শার্ট টেনে হিঁচড়ে এবং পেটাতে পেটাতে তাকে গোয়েন্দা পুলিশের গাড়িতে তোলা হয়। পথিমধ্যে তার অণ্ডকোষ চেপে ধরাসহ তাকে অমানুষিক নির্যাতন করা হয়।

খবর পেয়ে তার সহকর্মীরা নগরীর পলিটেকনিক রোডে নগর গোয়েন্দা পুলিশ কার্যালয়ে যায়। সেখানে নির্যাতিত সাংবাদিক সুমনকে হাতকড়া পরিহিত অবস্থায় কাঁদতে দেখে ক্ষোভে ফেটে পড়েন অন্যান্য সাংবাদিকরা। এ সময় সাংবাদিক সুমনকে নির্যাতনকারী প্রধান অভিযুক্ত কনস্টেবল মাসুদ একজন সাংবাদিককে লাথি দেয়। এতে সাংবাদিকরা ক্ষোভে ফেটে পড়েন। এ সময় মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার (দক্ষিণ) গোলাম রউফ খান সাংবাদিকদের শান্ত করে তার অফিস কক্ষে নিয়ে যান। সেখানে সকল সাংবাদিকের দাবির প্রেক্ষিতে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পরামর্শ মোতাবেক নগর গোয়েন্দা পুলিশের ঐ দলে থাকা ৮ সদস্যকে মেট্রোপলিটন পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার (ক্লোজড) সহ তদন্ত সাপেক্ষে অভিযুক্ত প্রত্যেকের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার ঘোষণা দেন মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-কমিশনার গোলাম রউফ খান।

তবে এ ঘটনায় টেলিভিশন ক্যামেরায় কোনো কথা বলতে রাজী হননি মেট্রোপলিটন পুলিশের কোনো কর্মকর্তা। এদিকে সাংবাদিক নির্যাতনের ঘটনায় অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ায় সাধুবাদ জানিয়েছেন সিনিয়র সাংবাদিকরা। তারা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্তপূর্বক কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

অপরদিকে সন্ধ্যায় সাংবাদিকদের চাপের মুখে মারধরের শিকার হওয়া সুমন হাসানকে গুরুতর আহত অবস্থায় ছেড়ে দিলে তাকে শেরে বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। উল্লেখ্য মাস দুয়েক আগে গোয়েন্দা পুলিশের একটি দল এস. আই আশিষ পালের নেতৃত্বে জেলা প্রশাসকের কম্পাউণ্ডে দেয়াল পত্রিকা দাঁড়িয়ে পড়াকালীন সময়ে কৃষি সমপ্রসারণ অধিদফতরের এক কর্মচারীকে জোরপূর্বক ওখান থেকে বাইরে নিয়ে আসার সময়ে আদালত পাড়ার সাধারণ মানুষ ডিবি পুলিশের দলকে প্রতিরোধ গড়ে তুলে এক পর্যায়ে তারা বলেন ওর সাথে ইয়াবা পাওয়া গেছে। এভাবে তারা দিনের পর দিন সাদা পোষাকের দাপট দেখিয়ে একের এক অপকর্ম করে যাচ্ছে। অন্যদিকে গোয়েন্দা পুলিশের আইনের মার প্যাচে জেলে পচে মরছে একশ্রেণীর সাধারণ মানুষ।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post