গাংনীর ধানখোলা ইউপিতে এলজিএসপির এইচবিবি প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতি ইউপি চেয়ারম্যান-সচিব ও মেম্বরদের বিরুদ্ধে হাজার হাজার টাকা আত্মসাতের অভিযোগ

LGSP Road PicLGSP Road Pic

আমিরুল ইসলাম অল্ডাম : গাংনীতে স’ানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়নে ধানখোলা ইউপিতে এলজিএসপি এইচবিবি রাস্তা নির্মাণ প্রকল্পে ব্যাপক অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। বেশীরভাগ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে নিম্নমানের নির্মাণ সামগ্রী দিয়ে। এসব অনিয়ম দুর্নীতি ধামাচাপা দিতে গণ মাধ্যমের কর্মীদের আড়াল করে ইতোমধ্যে বিভিন্ন প্রকল্পের ৮০ শতাংশ কাজ শেষ করে বিল ভাউচার করে হাজার হাজার টাকা আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠছে।ধানখোলা ইউনিয়ন পরিষদের সচিব সূত্রে জানা গেছে, ধানখোলা ইউপির উন্নয়নের লক্ষ্যে ৬০ টি প্রকল্পের বিপরীতে ১ম কিস্তিতে ২৭ লক্ষ ০৬ হাজার ৭১২ টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। ১ম কিস্তির অর্থ দিয়ে এই অর্থবছরে ২৪ টি প্রকল্প বাস্তবায়নের লক্ষ্যমাত্রা ধরে ইতোমধ্যেই ইউনিয়নের গাঁড়াডোব গ্রামের লতিফ খাঁর বাড়ীর নিকট থেকে তৌহিদের বাড়ীর দিকের রাস্তা,জুগিন্দা গ্রামের তাইজেলের বাড়ীর নিকট থেকে মফিজুলের বাড়ীর দিকে রাস্তা, আড়পাড়া গ্রামের নাসিরের বাড়ীর নিকট থেকে জলিলের বাড়ীর দিকে রাস্তা, ধানখোলা গ্রামের আফাজউদ্দীনের বাড়ীর নিকট থেকে বুদুর বাড়ীর দিকে রাস্তা, জুগিন্দা গ্রামের মধূ শর্মার বাড়ীর নিকট থেকে খাঁ পাড়ার দিকে রাস্তা,গাঁড়াডোব গ্রামের রাজ্জাকের বাড়ীর নিকট থেকে জলিবিল পাড়ার দিকে রাস্তা,পাকুড়িয়া গ্রামের আসাদুলের বাড়ীর নিকট থেকে ঢেপার মাঠের দিকে রাস্তা,ধানখোলা গ্রামের কিতাব আলীর বাড়ীর নিকট থেকে নল মাঠের দিকে রাস্তা,আড়পাড়া গ্রামের আয়নাল মাষ্টারের বাড়ীর নিকট থেকে মিন্নালের বাড়ীর দিকে রাস্তা,শানঘাট গ্রামের জহুরুলের বাড়ীর নিকট থেকে আফাজউদ্দীনের বাড়ীর দিকে রাস্তা ইতোমধ্যেই সমাপ্ত হয়েছে।এসব রাস্তার মধ্যে সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আড়পাড়া গ্রামের আয়নাল মাষ্টারের বাড়ীর নিকট থেকে মিন্নালের বাড়ীর দিকে রাস্তাটি সরকারী ভাবে ১ নং ইট দিয়ে নির্মাণের কথা থাকলেও একেবারেই নিম্ন মানের ইট বালি দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে। অনুরুপভাবে আড়পাড়া গ্রামের নাসিরের বাড়ীর নিকট থেকে জলিলের বাড়ীর দিকে রাস্তা ও শানঘাট গ্রামের জহুরুলের বাড়ীর নিকট থেকে আফাজউদ্দীনের বাড়ীর দিকে রাস্তাটিও নিম্নমানের ইট বালি দিয়ে নির্মিত হয়েছে।এমনিভাবে শানঘাটের জহুরুলের বাড়ীর পার্শ্বের রাস্তাটির দুপাশে মাটি বা বালি না দিয়ে পার্শবর্তী বসতকারী জহুরুল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম,মৃত আমজাদ আলীর পরিবারকে মাটি দিতে বাধ্য করা হয়েছে।এছাড়া রাস্তার দু’এক জায়গায় খুঁড়ে হেরিংবন্ডের উপরের ইট ২ নং হলেও নিচের পাড়নের ইটগুলো ভাঙ্গা এবং আধলা দেয়া হয়েছে।সেখানেও ইটগুলো ইঞ্চি দূরে দূরে বিছানো হয়েছে।এরকমভাবে সকল প্রকল্পে স’ানীয়রা জানান, আমরা প্রতিবাদ করেও রাস্তায় নিম্নমানের ইট বালি দেয়া হয়েছে।
এসব অনিয়ম মানতে নারাজ প্রকল্পের সাথে যুক্ত কর্মকর্তাবৃন্দ ও চেয়ারম্যান সচিব মহোদয়গণ। চেয়ারম্যান আখেরুজ্জামান জানান, প্রকল্প বাস্তবায়নে ১ নং ইট দেয়া হয়নি । তবে ইট বালির মান কিছুটা নিম্ন মানের হলেও শতভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। সচিব রফিকুল ইসলামও একই কথা জানিয়ে বলেন, প্রকল্প-র কয়েকটি কাজ ইতেমেধ্যেই ডিডিএলজি খায়রুল হাসান মহোদয় দেখেছেন।বেশীরভাগ প্রকল্প বাস্তবায়নে ১ লক্ষ টাকা করে বিন্যস্ত করা হয়েছে। বাদবাকী প্রকল্প শেষ হয়নি। এখনও কিছু প্রকল্প চলমান রয়েছে।
অফিস সূত্রে জানা গেছে, এসব অর্থ দিয়ে প্রকল্প সমূহের রাস্তায় এইচবিবি করণ,স্কুল উন্নয়ন, স্কুলের আসবাবপত্র সরবরাহ, স্কুলের ফ্যান,চেয়ার টেবিল,বেঞ্চ ইত্যাদি নির্মাণ, রাস্তার পার্শ্বে প্যালাসাইট,টিউবওয়েল স’াপন,টিউবওয়েলের গোঁড়া বাঁধানো, স্কুলে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর সরবরাহ, সর্বোপরি ইউপি সদস্যসহ গ্রামের বেকার যুবক-যুবাদের কর্মসংস’ান সৃষ্টির লক্ষে বিভিন্‌ ট্রেডে প্রশিক্ষণ দেয়ার নিয়ম থাকলেও ইউপি চেয়ারম্যান-সচিব,মেম্বররা মনগড়া প্রকল্প দেখিয়ে হাজার হাজার টাকা আত্মসাৎ করছে।সরেজমিনে ঘুরে বেশীরভাগ প্রকল্পে অনিয়ম দুর্নীতি দেখতে পাওয়া গেছে। নিম্ন মানের ৩ /৪ নং ইট বালি দিয়ে কাজ করা হয়েছে।
এব্যাপারে গাংনী উপজেলা এলজিইডি অফিসের প্রকৌশলী লিয়াকত হোসেন জানান,এই প্রকল্পের বিষয়ে আমি তেমনটি জানি না। আমাদেরকে জানানোও হয়না। উক্ত বরাদ্দ সরাসরি ইউপি চেয়ারম্যান ও সচিবদের নামে ব্যাংকের হিসাব নং জমা হয়।
এনিয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও জেলা প্রশাসক এর নিকট এলাকার সচেতন মহলের দাবী , সরেজমিনে তদন্ত পূর্বক অনিয়ম ও দুর্নীতি রোধ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস’া নেয়া প্রয়োজন।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post