মেহেরপুরে বাণিজ্যিকভাবে হলুদ চাষে আগ্রহ বাড়ছে

Halud Kat picKBDNEWS ঃ মেহেরপুরে গ্রামের পর গ্রাম বাণিজ্যিকভাবে হলুদ চাষ করে লাভবান হচ্ছে চাষীরা। পলি দোঁয়াশ ও বেলে দোঁয়াশ প্রকৃতির উর্বর মাটি হওয়ায় গ্রামের সমতল উচুঁ জমিতে মসলা জাতীয় ফসল হলুদ ভাল হচ্ছে। গ্রাম ঘুরে জানা গেছে, আবাদী জমির বেশীরভাগ জমিতেই হলুদের চাষ। রাস্তার দু’পাশে ঢাল ঢাল পাতায় ঢাকা হলুদের ক্ষেত। হলুদ চাষ করে স্বাবলম্বি হয়েছে চাষি। হোগলবাড়ীয়া, মটমুড়া,আকুবপুর,মহাম্মদপুর এলাকাসহ কয়েকটি গ্রামে হলুদ চাষের উপযোগী জমি হিসাবে এসব জমিতে হলুদ চাষ করে লাভবান হচ্ছে চাষীরা। ১০ কাঠা থেকে ৩/৪ বিঘা জমি পর্যন্ত আবাদ করেছে ঘর ঘর চাষী। স্বাধীনতার পর থেকে এ পর্যন্ত প্রায় ৪৫ বছর ধরে এ্‌ইসব গ্রামের চাষীরা অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি হলুদ চাষ করে আসছেন।হলুদ চাষ খুব লাভজনক আবাদ। প্রতিবছরই চাষীরা কমবেশী লাভবান হচ্ছে।বিঘাপ্রতি ২০/২৫ হাজার টাকা উৎপাদন খরচ করে বাজার দর ভাল হলে ৭০/৮০ হাজার টাকায় বাজারজাত করা যায়। ফলে খরচ বাদ দিয়ে কমবেশী ৪০/৫০ হাজার টাকা লাভ হয়। মেহেরপুর সদর উপজেলার শালিকা, আমদহ, বুড়িপোতা, আমঝুপি, মুজিবনগর উপজেলার সোনাপুর, বাগোয়ান, আনন্দবাস ও গাংনীর হোগলবাড়ীয়া মাঠপাড়ার চাষীরা জানান, হলুদ চাষ খুব লাভজনক। বর্গা চাষীদের খরচ কিছুটা বেশী হলেও নিজের জমি হলে লাভ বেশী হয়। হলুদের মুখী বা আইঠি জমিতে মোটামুটি ৮/৯ ইঞ্চি দূরে দূরে সারিবদ্ধভাবে হলুদ লাগানো হয়। হলুদ এক বছরের মসলা জাতীয় ফসল। বছরের বৈশাখ মাসের দিকে হলুদ জমিতে রোপন করা হয়।বছর শেষে অর্থ্যাৎ মাঘ-ফাল্গুন মাসে জমি থেকে হলুদ তোলা হয়। চাষীরা আরও জানায়, আমাদের এলাকায় পাবনায় ও দখিনা জাতের হলুদ লাগানো হয়। বিঘাপ্রতি ৫ থেকে সাড়ে ৫মন বীজ রোপন করলে বছর শেষে ফলন ভাল হলে বিঘাপ্রতি গড়ে ৭০/৮০ মন কাঁচা হলুদ উত্তোলন করা হয়। কাঁচা অবস’ায় ৭শ’ থেকে এক হাজার টাকা মন বিক্রি করা হয়ে থাকে।শুকনা হলুদ কোন বছর ৫/৬ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রতিমন বিক্রি হয়ে থাকে। হলুদ চাষে রাসায়নিক সার বেশী লাগে। পটাশ এবং ফসফেট সার প্রয়োগ পাশাপাশি সেচ বেশী দিলে ফলন ভাল হয়ে থাকে। হলুদ চাষে মাঝে মাঝে পটকা রোগ অর্থ্যাৎ পাতা শুকানো রোগ দেখা যায়। এই রোগ প্রতিরোধে চাষীরা বোরণ ব্যবহার করে থাকেন। জমিতে নোনা দিখা দিলে জিপসাম সার প্রয়োগ করা হয়। চাষীরা অভিযোগ করে বলেন, কৃষি অফিসের কোন পরামর্শ এই এলাকার হলুদ চাষীরা পায়না।
চাষীরা জানায়, জমি থেকে হলুদ তোলা শেষ হলে এলাকার ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, ফড়িয়া ও পাবনা,খুলনা, ঢাকা,কুমিল্লা ও চট্রগ্রাম থেকে আগত হলুদ ব্যবসায়ীরা চাষীদের নিকট থেকে হলুদ ক্রয় করে থাকে। হলুদ চাষে সহজ শর্তে ঋণ প্রদান বা সরকারীভাবে সহযোগিতা করা হলে হলুদ চাষ আরও বৃদ্ধি হতো।
এব্যাপারে সদর উপজেলা কৃষি অফিসার কামরুজ্জামান জানান, এবছর এই জেলায় আশানুরুপ হলুদ চাষ হয়েছে। ইতোমধ্যে হলুদ চাষে চাষীদের উদ্বুদ্ধ করতে মাঠ দিবস করা হয়েছে।

Post a Comment

Previous Post Next Post