কুষ্টিয়ায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র লিপু অপহরণ ও হত্যা মামলায় ২ আসামির ফাঁসি ৯ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড

KUSHTIA LIPU FILE PIC

kushtia - asami

কুষ্টিয়া থেকে শরিফ মাহমুদ : কুষ্টিয়ায় নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র চাঞ্চল্যকর তৌহিদুল ইসলাম লিপু (২১) অপহরণ ও হত্যা মামলায় ২ আসামির ফাঁসি ও ৯ জনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদের সাজার আদেশ দিয়েছেন আদালত।
বুধবার দুপুর একটায় কুষ্টিয়ার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ ১ম আদালতের বিজ্ঞ বিচারক এ,বি,এম, মাহমুদুল হাসান এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় চাঞ্চল্যকর এ অপহরণ ও হত্যা মামলার ১৮ জন আসামির মধ্যে ৯ জন আদালতে উপসি’ত ছিলেন। অপহরণ ও হত্যার শিকার তৌহিদুল ইসলাম লিপু কুষ্টিয়া শহরের কমলাপুর এলাকার বর্তমান অগ্রণী ব্যাংক রাজশাহী জোনের ডিজিএম ওয়াহিদুল ইসলাম ও কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের সিনিয়র শিক্ষিকা সামসুন্নাহার লিলি দম্পতির একমাত্র পুত্র ছিলেন।
সাজা প্রাপ্তরা হচ্ছে ফাঁসির দন্ডপ্রাপ্ত রাকিবুল ইসলাম বাপ্পী ও মো: সুমন। যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তরা হচ্ছে জুহাইম খন্দকার ওরফে শুভ, হৃদয়, সুমন, আলিফ, সাজেদুল, নয়ন, সজীব, মিনহাজ ও মিলন। এছাড়াও আসামি আবু সাঈদের দশ বছর কারাদন্ড এবং আসামি মাহাবুব আলম, রিপন হোসেন ও সুজন মাহামুদের তিন বছর করে সশ্রম কারাদন্ডের আদেশ দেওয়া হয়েছে। দোষী প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত চার আসামি আহসান হাবিব, আনোয়ারা বেগম, শাহিনুল ইসলাম ওরফে কল্লোল হোসেন ও আবু তালেবকে বেকসুর খালাস প্রদান করেন। রায় ঘোষণার সময় আদালতে নয় আসামি উপসি’ত ছিলেন। এ মামলায় ফাঁসির দন্ডাদেশ প্রাপ্ত মো: সুমন ছাড়াও আলিফ, আবু তালেব, সাজেদুল, নয়ন, সজীব, আবু সাঈদ, মিনহাজ ও মিলন এখনো পলাতক রয়েছে।
কুষ্টিয়া জজ কোর্টের পিপি এ্যাড: অনুপ কুমার নন্দী জানান, ২০১৪ সালের ৩১ আগষ্ট সন্ধ্যার দিকে বাবার মোটর সাইকেল নিয়ে বন্ধু বাপ্পীর সাথে বাড়ি থেকে বাইরে বের হয় লিপু। এর পর বন্ধুদের দ্বারা লিপু অপহৃত ও হত্যার শিকার হয়। পাবনার ঈশ্বরদীর চরে নিয়ে গিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর লিপুর লাশ ইট বেঁধে পদ্মা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। হত্যাকারীরা লিপুর পরিবারের কাছে তিন কোটি টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। এ ঘটনায় লিপুর পিতা ২০১৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর কুষ্টিয়া মডেল থানায় একটি অপহরণ ও মুক্তিপণ দাবির মামলা দায়ের করেন। মামলা নং-৫। ধারা ৩৬৪/৩৮৫/৩৮৭/৩৪। এ মামলায় দুজনকে আসামি করা হয়। আসামিরা হচ্ছে লিপুর বন্ধু কুষ্টিয়া শহরতলীর উদিবাড়ি এলাকার জহুরুল হক বিকুর ছেলে রাকিবুল ইসলাম ওরফে বাপ্পী (২২) ও নাটোর জেলার জমশেদ নগর গ্রামের লিয়াকত হোসেনের ছেলে সুমন (৩৫)। পুলিশ এ ঘটনায় আসামি বাপ্পীকে গ্রেফতার করলে সে আদালতে ১৬৪ ধারায় লিপু অপহরণ ও হত্যাকান্ডের বিষয়ে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দী প্রদান করে। বাপ্পীর স্বীকারোক্তি অনুযায়ী পুলিশ ১৮ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করে। সেশন ৪৯২/১৬ নং মামলা হিসেবে নথিভুক্ত হয়ে আদালতে বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। বাদীসহ ২৮ জনের স্বাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আদালত বুধবার দুপুরে চাঞ্চল্যকর লিপু হত্যা মামলার এ রায় ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপক্ষে মামলাটি পরিচালনা করেন পিপি এ্যাড: অনুপ কুমার নন্দী। তাঁকে সহযোগিতা করেন বিশেষ পিপি এ্যাড: আব্দুল হালিম। আসামি পক্ষে ছিলেন এ্যাড: গিয়াস উদ্দিন আহম্মেদ ও এ্যাড: লোকমান হোসেন বেগ।

 

Post a Comment

Previous Post Next Post