কুষ্টিয়ায় আখ চাষ বাড়লেও মিলের উৎপাদন ক্ষমতা কমছে

kushtia_sugar_mill_pic1
কুষ্টিয়া থেকে থেকে শরিফ মাহমুদ : বিগত কয়েক বছরের তুলনায় এবার কুষ্টিয়া সুগার মিল জোনে আখ চাষ বেড়েছে। তবে আখ চাষ বাড়লেও কুষ্টিয়া সুগার মিলের উৎপাদন ক্ষমতা দিন দিন কমে আসছে। এ অবস’ায় উৎপাদন বাড়াতে হলে দ্রুত পুরাতন যন্ত্রপাতি অপসারন করে নতুন যন্ত্রাংশ বসানোর দাবি মিলের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ১৯৬৫-৬৬ মৌসুমে প্রথম উৎপাদনে আসে কুষ্টিয়া সুগার মিলস লিমিটেড। এরপর গত ৫১ বছর মিলটি টানা উৎপাদনে রয়েছে। তবে মিলের বেশির ভাগ যন্ত্রাংশ সেকেলে হওয়ায় বিগত কয়েক বছরে উৎপাদন চরম ভাবে ব্যহত হওয়ার পাশাপাশি লোকসান গুনতে হচ্ছে। এদিকে আখের মুল্যকম হওয়াসহ নানা কারনে চাষীরা আখ চাষে উৎসাহ হারিয়ে ফেললেও কর্পোরেশনের নেয়া কিছু পদের কারনে এ মৌসুমে আখের চাষ অনেকটাই বেড়েছে। ২০১৫-১৬ মাড়াই মৌসুমে মাত্র ৩৯ হাজার ৭৯৭ মেট্রিক টন আখ মাড়াই থেকে ২ হাজার মেট্রিক টন চিনি উৎপাদন হলেও চলতি মাড়াই মৌসুমে ৭০ হাজার মেট্রিক টন আখ মাড়াই লড়্গ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। যা দিয়ে চিনি উৎপাদন হবে ৪ হাজার ৯০০ মেট্রিক টন। গত ৯ ডিসেম্বর কুষ্টিয়া চিনিকলে উৎপান শুরু হয় বলে জানা গেছে।
তবে আখের মূল্য বাড়ানোসহ হয়রানী বন্ধের দাবি জানিয়েছেন এলাকার আখ চাষীরা।
আখ চাষী আসলাম উদ্দিন বলেন, মিল যে দাম দেয় তাতে আখ চাষ করে লাভ হয় না। এছাড়া আখ বিক্রি করেও টাকা পেতে ভোগিনত্ম পোহাতে হয়। তবে গত বছর থেকে দাম কয়েক টাকা বেড়েছে বলে জানান চাষীরা। আখ চাষী ছগির ও মতি মিয়া জানান,‘ কর্পোশনের কিছু পদের কারনে আখ চাষে ঝুকছে চাষীরা। এ বছর আবাদ বেড়েছে। দাম বাড়ানোসহ সুযোগ সুবিধা বাড়লে আখ চাষ তার হারানো গৌরব ফিরে পাবে বলে জানান তারা। এদিকে মাড়াই মৌসুমে বেশির ভাগ সময় মিল সচল না থাকায় ভোগানিত্মতে পড়তে হয় শ্রমিক ও কর্মচারীদের। এ অবস’ায় মিলকে দ্রুত আধুনিকায়ন করার দাবি কর্মচারী ও শ্রমিক নেতাদের। কুষ্টিয়া সুগার মিলের কর্মচারী নুরুল ইসলাম সুরুজ জানান,‘ আখ উৎপাদন বাড়লেও মিলের পুরানো যন্ত্রপাতির কারনে মৌসুম চলাকালে প্রায়ই উৎপাদন বন্ধ হয়ে থাকে। সংস্কার করেও লাভ হয় না। তাই দ্রুত মিলকে বিএমআরই করলে উৎপাদন বাড়বে।
কুষ্টিয়া সুগার মিলের শ্রমিক কর্মচারী ইউনিয়নের সভাপতি মো. ফারুক হোসেন জানান,‘ মিলকে লাভজনক করতে হলে আধুনিক যন্ত্রপাতি বসানো জরুরি হয়ে পড়েছে। মিল স’াপনের পর একই যন্ত্রপাতি দিয়ে উৎপাদন চলে আসছে। বেশির ভাগ যন্ত্রপাতি অচল হয়ে পড়ে। উৎপাদন মৌসুমে এক দিন মিল চলে তো আবার দুই দিন বন্ধ থাকে। এতে সবাইকে ভাগানিত্মতে পড়তে হয়। দ্রুত মিলকে বিআমআরই করা হলে মিলকে লাভজনক করা সম্ভব। কুষ্টিয়া সুগার মিলের এমডি মিজানুর রহমান জানান,‘ চাষীদের নানা সুযোগ সুবিধা বাাড়নো হচ্ছে। এ বছর আখ উৎপাদন গত কয়েক বছরের তুলনায় বেড়েছে। সার, বীজ, ওষুধসহ প্রয়োজনীয় সব সুবিধা দেয়া হচ্ছে। আখের দাম বাড়ানোর বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে। এছাড়া মিলকে বিএমআরই করার একটি প্রক্রিয়া চলছে। আশা করছি বিএমআরই করা হলে চিনি উৎপাদন বাড়ার পাশাপাশি বাই প্রডাক্ট কাজে লাগিয়ে মিলকে লাভজনক করা সম্ভব হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post