কুষ্টিয়ায় সিন্ডিকেটের কবলে চালের বাজার

:বস্তাভর্তি বিভিন্ন রকমের চাল

চালের বাজার
কুষ্টিয়ায় সিন্ডিকেটের কবলে চালের বাজার

সাধারণ ভোক্তাদের নাভিশ্বাস চরমে পৌঁছেছে

কুষ্টিয়া থেকে শরিফ মাহমুদ :কৃষকদের কাছ থেকে বেশি দামে ধান কেনার অজুহাত দেখিয়ে কুষ্টিয়ার খাজানগর এলাকার চালকল মালিকরা সিন্ডিকেট করে বারবার চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। মিল রেটের তুলনায় খুচরা বাজারে দাম বাড়ার প্রবণতা আরো বেশি।
চালের এমন দাম বাড়ার পিছনে ক্রেতা, খুচরা ব্যবসায়ী, কৃষক নেতারা মিল মালিক ও ফড়িয়াদেরকে দায়ী করেছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুষ্টিয়ায় মিল মালিকদের সিন্ডিকেটে চালের দাম বেড়েই চলেছে। গত দেড় মাসে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম কুষ্টিয়ার খাজানগর এলাকায় চালের মোকামে মিনিকেট, কাজললতা ও আটাশ চালের দাম কেজি প্রতি ৬ থেকে ৯ টাকা বেড়েছে। এতে সাধারণ ভোক্তাদের নাভিশ্বাস চরমে পৌঁছেছে।
এর প্রভাব খুচরা বাজারেও পড়েছে। ধানের দাম বাড়ায় মিল মালিকেরা চালের দাম বাড়াচ্ছে। তবে অভিযোগ উঠেছে মিল মালিকেরা ইচ্ছামত চালের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে।

চালের বাজার
কুষ্টিয়ায় সিন্ডিকেটের কবলে চালের বাজার

মিল মালিক সমিতি সূত্রে জানা গেছে, গত ৩০ সেপ্টেম্বর মিলগেটে মিনিকেট (চিকন) চাল কেজি প্রতি ৪৬ টাকা দরে, কাজললতা ৪৩ টাকা ও আটাশ ধানের চাল ৪০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছে। কিন’ গত ১০ আগস্ট মিনিকেট ৪০ টাকা, কাজললতা ৩৪ টাকা ও আটাশ ধানের চাল ৩৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয়েছিল। দেড় মাসের ব্যবধানে মিলগেটে মিনিকেট কেজি প্রতি ৬ টাকা, কাজললতা ৯ টাকা ও আটাশ ধানের ৬ টাকা বেড়েছে।
জানা গেছে, কুষ্টিয়ার খাজানগরে ৩৬৪টি সরকারি নিবন্ধিত চালকল রয়েছে। এরমধ্যে অটোরাইস মিলের সংখ্যা ৩১টি। এখান থেকে প্রতিদিন দেড়শ ট্রাক (প্রতিটিতে ১৫ টন) চাল ঢাকা, চট্টগ্রামসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে যায়।
বাংলাদেশ কৃষক সংগ্রাম সমিতির কুষ্টিয়া জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মুক্তারুল ইসলাম মুক্তি জানান, কৃষকদের ঘরে কোনো ধান নেই। তারাই এখন চাল কিনে খাচ্ছে।
জেলা বাজার কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, কৃষকদের ঘরে দশ ভাগও ধান নেই। ব্যবসায়ী ও মিল মালিকরা অনেক আগেই ধান কিনে মজুদ করে রেখেছে। বাজারে চালের দাম বাড়ার প্রবণতা অব্যাহত রয়েছে। বিষয়টি ওপর মহলে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশ অটো মেজর অ্যান্ড হাসকিং মিল মালিক সমিতি কুষ্টিয়া শাখার সাধারণ সম্পাদক ও দাদা রাইস মিলের মালিক জয়নাল আবেদীন প্রধান বলেন, মিল মালিকদের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ পুরোপুরি সত্য নয়। ফড়িয়া ব্যবসায়ীরা কৃষকদের কাছ থেকে ধান কিনে রাখে। সেই ধান এখন মিল মালিকেরা বেশি দামে কিনছে। আর এতেই দাম বাড়ছে।
সিন্ডিকেটের বিষয়টি অস্বীকার করে তিনি বলেন, তাদের গুদামে তিন মাসের চাল উৎপাদনের মত ধান মুজদ থাকে।
এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক জহির রায়হান বলেন, বিষয়টি নিয়ে মিল মালিক সমিতির নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করা হবে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। যদি কেউ ইচ্ছামত দাম বাড়িয়ে থাকে, প্রমাণ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Post a Comment

Previous Post Next Post